জন্মদিনের সেরা উপহার!

Spread the love

Sakaআমার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে, সাকা’র বাড়ির কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে। ১৯৭১ সালের ১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর রাজাকারদের সঙ্গে একদল পাকিস্তানী সেনা আমাদের বাড়িতে আসে। খবর পেয়ে গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে আমরা যারা ছোট তাদেরকে গ্রামের পেছনের বিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বড়রা কেবল ছিল। ওরা টাকা-কড়ি যা ছিল সবই নিয়েছে। কয়েকবার করে আমার মেজদাদাকে মেরে ফেলার জন্য বন্ধুকও তাক করে। তারপর অস্ত্রের মুখে আমার চাচাদের বেঁধে নিয়ে রওনা দেয় রাউজান কলেজের উদ্দেশ্যে।এই রাউজান কলেজ ছিল নয়মাস ধরে রাজাকার-পাকিস্তানীদের আখড়া। কতো মুক্তিকামী মানুষকে সেখানে নিপিড়ন করে হত্যা করা হয়েছে সেটি কেবল তারাই বলতে পারে।

কিন্তু জানতো না ততদিনে তাদের দিন শেষ হয়েছে। ১৭ তারিখ সকালেই রাউজান কলেজ মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। রাজাকাররা যখন রাউজান কলেজে পৌছায় তখন তারা মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। আমার চাচারা বেঁচে যান।
রাজাকাররা গ্রাম থেকে বের হওয়ার সময় আমাদের গ্রামের তিনটি বাসে আগুন লাগিয়ে দিয়ে যায়।
রাউজানে আমাদের বাড়িটা বরাবরই সাকাদের বিরোধী। আমার বাবার বাড়ি আর মায়ের বাড়ির মধ্যে দূরত্ব মাত্র কয়েক কিলোমিটার। আমার নানা ডা. হাসেম পূর্ব বাংলার প্রথম মুসলিম মেডিকেল গ্র্যাজুয়েট। মারা যান ৭০ সালের ১১ আগস্ট।  নানাদের গ্রাম ছিল দারোগাবাড়ি আর দাদার বাড়ি ছিল হাজীবাড়ি।

৭০ এর নির্বাচনে রাউজানের এমপি হোন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ (বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য), আমার মামা। মামার কাছে হেরে যায় সাকার বাবা ফকা।
কাজে যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন মধ্যেই রাজাকারদের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু হয় আমাদের গ্রামগুলো। এপ্রিল-মে মাসে বাধ্য হয়ে আমাদেরকে নিজ গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় অগম্য ইয়াসীন নগরে, এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে অশেষ শুকরিয়া যে, সেই রাজাকার বাহিনীর প্রধান সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল থাকলো। আলহামদুলিল্লাহ।

এখন ফাঁসির অপেক্ষা। জয় বাংলা!

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version