সাধাসিধে উদ্যোক্তা!!!

Spread the love

পূর্ব এশিয়ার অনেকে দেশেই টুক-টুকের দেখা মিলে। থাইল্যান্ডে গিয়ে একাধিকবার আমি টুকটুকে চড়েছি। তবে, এটি আমার গল্প নয়। এটি একজন “উদ্যোক্তা টুক টুক “ ড্রাইভারের গল্প। কম্বোডিয়বর ফোনম ফে শহরে রেত নামের এই ড্রাইভার তার টুক চালায়। টুকটুক হলো খোলা হুডের অটোরিক্সা। যে সময়ের গল্প সে সময় গড়ে একজন টুক টুক ড্রাইভারের দৈনিক আয় ২-৫ ডলালের বেশি নয়। তবে, আমাদের রেত ব্যতিক্রম। আর এ ব্যতিক্রমটি সে করেছে তার ব্যবহার এবং খুবই হিসাবী কৌশল অবলম্বন করে।
রেত সারাক্ষনই নতুন ক্ষেপের জন্য শহরময় ঘুরে বেড়ায় না। ও বরং খুঁজে বের করে যারা নিয়মিত যাতায়াত করে বিভিন্ন রুটে যাতে সে রেগুলার কাস্টোমার পায়। তারপর সে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে। তাদেরকে তার ফোন নম্বর দিয়ে বলে – যখনই দরকার হবে তখনই যেন তাকে ফোন করা হয়। সে হাজির হবে। এরকম তার নিয়মিত প্যাসেঞ্জারই বেশি। তাদের কারও যদি কখনো শহরের বাইরে যেতে হয়, তাহলে সে তাদের সাহায্য করে ট্যাক্সি বা বাস খুঁজে পেতে। ট্যাক্সি বা বাসের ড্রাইভারের ক্ষেত্রে সে তার মতো সৎ একজনকেই বাছাই করে। পারলে যাত্রীকে নিখরচায় বাসে তুলে দিয়ে আসে এবং পরে খোঁজ নেয় জার্নি কেমন হয়েছে!

সুযোগ হলে যে যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে, তাকে রেফারেলের জন্য অনুরোধ করে এবং কারও রেফারেলে যদি কোন যাত্রী পায় তাহলে ফোন করে তাকে ধন্যবাদ দেয়। পরের কোন ট্রিপে দেখা হলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

শহরময় সে ঘুরে বেড়ায় যাত্রী নিয়ে, যাত্রীর জন্য নয়। কাজে সে খুঁজে বের করে একটি বেকারি শপ। নিজের গাড়িতে তাদের একটা বিজ্ঞাপন আঁকিয়ে নেয়। ওরা প্রতিমাসে তাঁকে একটা টাকা দেয়!

বোঝায় যাচ্ছে, আমাদের রেতের দৈনিক ইনকাম ৫ ডলার নয়, তার দশগুন ৫০ ডলার। নিয়মিত কিছু টাকা সে সঞ্চয় করে যা কিনা তার মতো অন্য কোন টুকটুক ড্রাইভার করতে পারে না। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে তখন তার মেয়ে ভার্সিটিতে পড়ে, তাদের বংশে প্রথম।

আমাদের রেত একজন উদ্যোক্তা। কারণ সে কয়েকটি চমৎকার সমস্যার সমাধান করেছে। যাদের সমস্যা সমাধান করেছে তারা তার সমস্যাও সমাধান করেছে।

বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তাদের গল্প কমবেশি একই রকম। যারা আমার কাছে উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছে প্রকাশ করে তাদের আমি রেতের গল্প পড়তে বলি। সামান্য কৌশলী আর ধের্য থাকলে একটি সাধারণ চলমান সার্ভিস থেকেও অনেক ভাল থাকা যায়।

রেতের গল্পটি আমি পড়েছিলাম বেশ অনেকদিন আগে – হান্ড্রেড ডলার স্টার্টআপের পরিশিষ্টে। এই বইটির কয়েকটি গল্প  শেয়ার করার প্ল্যান নিয়ে আজ এটি বুকশেলফ থেকে বের করেছি। ভাবলাম শুরুটা রেতকে দিয়েই হোক।

 

 

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version