স্টোরি টেলিং – ভাল গল্প কাকে বলি-১

Spread the love

স্টোরি টেলিং – গল্প কেন বলি

ভাল-খারাপ সবসময় আপেক্ষিক। মাপাটা কঠিন। তারপরও ভাল গল্পের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা পাওয়া যায় বিভিন্ন লিটারেচারে, ইন্টারনেটের বিভিন্ন ব্লগে। এখানে সেরকম কিছু বৈশিষ্ট্যের তালিকা দেওয়া হল:-

  • বিনোদনমূলক – ভাল গল্প পাঠক/দর্শককে এনগেজড করে রাখে। এতে কী হয়? এরপরে কী হবে সেটা জানার জন্য পাঠক উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করে। কথা সাহিত্যিকরা এটা জানেন। সেজন্য তারা এমনভাবে লেখেন যে, শেষ না করা পর্যন্ত অপেক্ষা চলতেই থাকে।
  • শিক্ষামূলক – দিনশেষে কোন না কোন শিক্ষা লাভ হয়। নতুন কিছু জানা হয়। তার মানে এই নয় যে, আপনি গল্প শেষে “সদা সত্য কথা বলিবে’ টাইপের একটা বাক্য লিখে দেবেন। “অনেক কথব যাও যে বলে, কোন কথা না বলে” –এটাও আপনার মটো হতে পারে।
  • সার্বজনীন – মোটামুটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং অধিকাংশের ইমোশনকে ট্যাপ করতে পারে। তার মানে হলো, দরকার না হলে, আপনার চরিত্রগুলো পারিপার্শ্বিকতাকে ছাপিয়ে যাবে। বিশেষ করে গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলোকে এটা মাথায় রাখতে হয়। এর ফলে এলাকা, ধর্ম বা জাতীয়তা নির্বিশেষে সবার ভাল এক্সপেরিয়েন্স হয়।
  • গোছানো গল্পের একটা কাঠামো থাকে। ফলে কোন মেসেজ দেওয়ার থাকলে সেটা সহজে সংক্রমিত হয়। নিচে একটা কাঠামোর কথা বলা হয়েছে। আমরা আরও কিছু কাঠামো নিয়ে পরে ভাববো।
  • মনে রাখা – অনুপ্রেরণা, স্ক্যান্ডাল কিংবা সরস – যাই হোক না কেন ভাল গল্প দিনশেষে দর্শক/পাঠকের মনে থাকে। তার মনের কোনে স্থান নিতে পারে। এটাই আসলে মার্কেটারের মূল লক্ষ্য।

এখন ছোটবেলার মনে থাকা কোন গল্পের ব্যবচ্ছেদ করে দেখেন কেন সেটা আপনার এতোদিন পরেও মনে আছে। এমনকী খুবই বিস্তারিতভাবে। কারণটা কী?

হাবস্পটের পাওয়ার অফ স্টোরি টেলিং কোর্সে ভাল গল্পের তিনটা অঙ্গের কথা বলা হয়েছে।

সেগুলোও দেখে নিতে পারি আমরা

১. চরিত্র – গল্পে কমপক্ষে একটা চরিত্র তো থাকবেই। চরিত্র ছাড়া কোন গল্প হয় না। মূল চরিত্রকে ঘিরেই গল্পটা আবর্তিত হয়। চরিত্রই কিন্তু আপনার, মানে গল্প-কথকের সঙ্গে দর্শক/পাঠকের সেতু। ভাল গল্পের একটা বৈশিষ্ট্য হল পাঠক/দর্শক নিজেকে ঐ চরিত্রে ভাবে। যদি ভাবে তাহলেই সেটা ভাল গল্পের মধ্যে পড়বে।

২. কনফ্লিক্ট – গল্পের মধ্যে একটা কনফ্লিক্ট থাকতে হবে। শুম্ভ-নিশুম্ভের লড়াই। এর মাধ্যমে গল্পের চরিত্রের পক্ষ নেওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হবে দর্শক/পাঠকের মধ্যে। দিনশেষে আপনি একটা মেসেজ দিতে চান। এ জন্য হয় তাকে আমোদিত করতে হবে না হয় শিক্ষা দিতে হবে। সব ক্ষেত্রেই একটা সাসপেন্স তৈরি করে ফেলতে হবে। আচ্ছা, নায়ক কি পারবে নায়িকাকে উদ্ধার করতে (বা নায়িকা কী পারবে তার পরিবারের সবার পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে)। কনফ্লিক্ট না থাকলে সেটা কোন গল্পই না বলছে হাবস্পট।

৩. অত:পর তাহারা –  প্রত্যেক গল্পের একটা পরিণতি থাকে। একটা সমাধান। গোয়েন্দা গল্পের শেষ হয় রহস্য উদঘাটনে। প্রেমের গল্পের পরিণতি হতে পারে রোমিও-জুলিয়েটের মতো মৃত্যুতে। আবার সেটা নায়ক-নায়িকার মিলনও হতে পারে। আপনার গল্প এমন হবে যে সেখানে কনফ্লিক্টের অবসান হয়েছে। তবে, সব ভাল গল্পের কিন্তু ভাল পরিণতি নাও হতে পারে। মার্কেটারদের গল্পের শেষটা ভাল হয় যদি সেখানে পাঠক/দর্শক নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সিদ্ধান্ত শেষে নিজেই একটা কিছু করে।

 

 

One Reply to “স্টোরি টেলিং – ভাল গল্প কাকে বলি-১”

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version