ফের পহেলে সে!!!
অনেকে ভাবে এমনটা হয়তো বাস্তবে হয় না। আজকে মনে পড়লো দক্ষিন আফ্রিকাতে গিয়ে এমনটা শুনেছি। সেখানে রোবন দ্বীপে নেলসন মান্ডেলা বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাতে গিয়েছি এবং যথারীতি আমরা সবাই মিলে রোবন আইল্যান্ডে গেছি। (এর আগে অবশ্য নেলসন মান্দেলার বাড়িতে গিয়েছি)
ওখানকার বেশিরভাগ গাইড হলো পুরানো কয়েদী। আমাদেরও গাইড ও তাই। কয়েদখানাগুলো কেমন, কী করে তাদের দিন কাটতো সেগুলো এমনভাবে বর্লনা করলেন যে মনে হয়েছে আমরা সেখানে পৌছেছি। তবে, আজকে ইন্টারনেটে একটা লেখা পড়তে গিয়ে মনে পড়লো তিনি আসলে সিসিফিউসের কথাও বলেছিলেন।
তবে, সিসিফিউসের মত অনেককে আজকাল নানান কর্মকাণ্ডে দেখা যায়। দিন শেষে দেখা যায় তারা সারাদিনে যা করেছে সেটি কোন কাজে আসছে না। আবার করা লাগছে।
মনে হয় এরা এক জায়গায় দাড়িয়ে দৌড়ায়, মার্ক টাইম আর কি।
আমাদের দেশে অনেক উদ্যোক্তাই ঠিক এই কাজটি করেন। তারা অনেকদিন ধরে এক জায়গায় আটকে থাকেন। কেন?
একেবারে পিন পয়েন্ট করে বলা মুশ্কিল। বেশ কিছুজনের সঙ্গে আলাপ করে আর পড়ালেখা করে আমার মনে হয় একটা কারণ পড়ার ব্যাপারে অনীহা। আমি খুব অবাক হই যখন দেখি অনেক উদ্যমী উদ্যোক্তা এমনকি দিনের খবরের কাগজটাও পড়ার সময় পান না। তাদের কাছে খবরের কাগজের বিকল্প হলো ফেসবুকের নিউজফীড। অথচ নিউজফীডে চটকদার এবং উত্তেজনাকর বিষয়গুলো যতো আসে, ততোটা কিন্তু আসে না জরুরী বিষয়গুলো। জরুরী অনেক বিষয় আসলে নিরুত্তাপ, রসকষহীন।
এই আটকে যাওয়া থেকে বাঁচার প্রথম শর্ত হলো একটা দৈনিক পত্রিকা পড়া, প্রতিদিন নিয়ম করে। এটি সকালে নাস্তার টেবিলে হতে পারে, দুপুরের খাবারের পর হতে পারে কিংবা দিন শেষে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হতে পারে। কিন্তু পড়তে হবে। একবার পড়তে শুরু করলেই এটা অভ্যাসে দাড়িয়ে যাবে। মাসে মাত্র ৩০০ টাকা খরচ করে নিজের যে, কী উপকার হয় সে যারা খবরের কাগজ পড়ে না তাদেরকে বোঝানো কঠিন।
খবরের কাগজ কীভাবে গ্রাম মহল্লাকে পাল্টে ফেলে সেটা আমাদের আশির আহমেদের একটা ছোট্ট উদ্যোগে আমরা দেখেছি। আর জেনেছি বিল গেটসের কাছ থেকেও। পড়ার অভ্যাসের কারণে বিল পত্রিকার পাতায় মাইক্রোপ্রসেসরের ছবি দেখে সেটার সম্ভাবনা আঁচ করতে পেরেছিলেন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আসলে দুইটি পত্রিকা রাখা দরকার। একটা বাংলা আর একটা ইংরেজি। আমি ডেইলি স্টারের প্রতিদিনের বিজনেজ সাপ্লিমেন্টটা দেখার জন্যই বাসায় ডেইলি স্টার রাখি। আর প্রথম আলো’তো আছেই।
উদ্যোক্তাদের মার্ক টাইমের আর একটা কারণ হলো ঘরের মধ্যে বসে থাকা এবং নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে না যাওয়া। এতে নিজের ওপর একটা ফলস কনফিডেন্স তৈরি হয়। এটি তাকে এগোতে দেয় না। এর থেকে বাঁচার উপায় কী?
হাঁটা। শহর জুড়ে হাঁটতে বের হওয়া। নিয়ম করে মাসে এক দুইবার নানান এলাকায় কোন বন্ধুবান্ধব ছাড়া হেঁটে বেড়ানো। কেও যদি কেবল কাওরান বাজার এলাকায় ঘোরাঘুরি করে তাহলেও তার অনেক উপকার হবে। যে কিনা টি-শার্ট সাপ্লাই করে তার উচিৎ হবে সপ্তাহান্তে আজিজ মার্কেটে ঘুরতে যাওয়া। যে কিনা লোহা-লক্কর নিয়ে কিছু করে সে যেতে পারে পুরান ঢাকায়।
আমাদের নতুন একটা সম্প্রদায় তৈরি হয়েছে যারা ঘোরাঘুরি বলতে ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানো বুঝে। তাদের জন্য দরকার বাস্তবতার মাঠে নেমে আসা।
আরো কয়েকটা বিষয় আছে তবে যারা এই দুইটা কাজ শুরু করতে পারবেন, সেগুলো তাদের জন্য। কাজে আজ সেগুলো থাক।
নতুন কিছু জানা এবং করার কোন সীমারেখা নেই। আর সেজন্য প্রস্তুতি হওয়া চাই ভাল। যাতc দিন শেষে মনে না হয় আপনি স্কোয়ার রুট ওয়ানেই আছেন।
শুভ কামনা।