উদ্ভাবনের কলকব্জা ৭: মোবাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির রেজিস্ট্রেশন
উদ্ভাবনের কলকব্জা -১: উদ্ভাবন বৈষম্য???
উদ্ভাবনের কলকব্জা ২: বাক্সের বাইরে – ব্যাক টু ব্যাক লেটার অব ক্রেডিট
উদ্ভাবনের কলকব্জা ৩: দেখতে হবে আশে পাশে
উদ্ভাবনের কল-কব্জা-৪ : গোল্লাপূরণের পরীক্ষা
উদ্ভাবনের কলকব্জা-৫ : আমার রাস্তা ঠিক কর
উদ্ভাবনের কলকব্জা ৬ : শেয়ারিং ইনফরমেশন টু এমপাওয়ার সিটিজেন
- কাঙ্খিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ফরম জোগাড় করা। এই জন্য কাউকে সেই ক্যাম্পাসে গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে ফরম যোগার করতে হত, একটা ফী দেওয়া লাগতো
- সে ফরম নিয়ে এসে করতে হতো পূরণ। কিছু অদ্ভুত ফিল্ড থাকতো যেমন বুয়েটের ফরমে থাকতো এইচএসসির ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি আর ম্যাথের মোট আর প্রাপ্ত নম্বরের হিসাব, এটা মার্কশীট দেখে দেখে ওঠানো লাগতো। তারপর একজন সরকারি কর্মকর্তা সেটি সত্যায়ন করতেন!
- এরপর মার্কশীট, সার্টিফিকেট ফটোকপি করে সত্যায়িত করে ফরম ঠিক ঠাক করে আবার একজনকে পাঠানো লাগতো ফরম জমা দেওয়ার জন্য।
- তারপর জানা লাগতো ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর
- তারপর পরীক্ষা ও অন্যান্য।
১৯৯২ সালে বুয়েটে যোগদান করার পরের বছরে আমি ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাই। এবং আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করি বড় বড় স্যাররা ফরমের বিভিন্ন তথ্য ফটোকপির সঙ্গি মিলিয়ে নিশ্চিত হোন!!! কী অপচয়!!!১৯৯৪ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কম্পিউটারায়নের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার সৌভাগ্য আমার হয়। কোন এক অজ্ঞাত কারণে তখন থেকেই আমি শিক্ষাবোর্ডগুলোর কম্পিউটারায়নের পরের কাজগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকি।
২০০৪ সালের দিকে আমি একটা লেখা লিখি পত্রিকায় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। আমার বক্তব্য ছিল বোর্ডের কম্পিউটারে যেহেতু ফর্মের সব তথ্য আছে তাহলে কেন আমার ফটোকপি- ফরম পূরণ! কেও আমার কথা শোনেনি। আমি শরণাপন্ন হলাম জাফর স্যারের । বললাম স্যার শাস্টে এটা করা যায় না। কিন্তু আমরা কোন বুদ্ধি করতে পারলাম না। পরের কয়েক বছর আমরা প্রতিবছর এই হিসাবটা করে ক্ষ্যামা দিতাম।২০০৮ সালে আবু শোয়েব আমি যে প্রজেক্টে কাজ করতাম সেখানে যোগ দেয় আর আমার এই গল্প শুনে। পরের বছর সে সাস্টে যোগ দেয়।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশের সরকার। কিছুদিনের মধ্যে শাস্টের ভিসি হলেন সালেহ মতিন স্যার। আমি আবার জাফর স্যারের কাছে দৌড়ালাম। স্যার বললেন – এবার হতে পারে। ভর্তি ফী কেমন করে নিবা। আমি বললাম- অনলাইন কোন ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে দেবে। স্যার বললেন আর কিছু ভাবো। (মাঝখানের কিছু বিষয় পরে বলা যাবে)।
এরমধ্যে আমার বিশেষ খাতির হয়েছে টেলিটকের জিএম হাবীবুর রহমান ভাইয়ের সঙ্গে। তাঁকে আমার প্রস্তাব জানালাম। উনি বললেন টাকাটা মোবাইলে নিয়ে দিতে পারবো।
ব্যাস একদিন আমরা জড়ো হলাম জাফর স্যারের বাসায়। একটা ঐতিহাসিক মিটিং।
এবং তারপরই শুরু হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইলে ভর্তি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। এটি হল এরকম-
১. যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে উচ্ছুক সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড এর পর নিজের এএইসএসসি আর এসএসসির রোল নম্বর এসএমএস করতে হবে।
২. সিস্টেম চেক করে দেখবে সে যোগ্য কী না। যোগ্য হলে জানাবে এবং এসএমএস দিয়ে জানতে চাইবে সে রেজিস্ট্রেশন করবে কিনা। যদি করে তাহলে ফী কাটা হবে মোবাইল থেকে।
৩. হ্যা লিখে পাঠালেই রেজিস্ট্রেশন শেষ!!!
এই কার্যক্রম নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। কাজে বিস্তারিত আর লিখলাম না।
যে কোন অসাধারণ উদ্ভাবনই আসলে খুব সিম্পল হয়ে থাকে।
সিম্পল ইজ বিউটিফুল।
জয় বাংলা