রোরটের কাছে মানুষের পরীক্ষা!!!
সে অনেককাল পরের কথা।
বন্ধুটি বললো- নতুন মেয়র।
তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
“দীর্ঘশ্বাস কেন?” আমি অবাক হয়ে বললাম।
“তুই তো থাকবি। সন্ধ্যাবেলায় জানতে পারবি”।
সন্ধ্যাবেলায় শহরের অনেক মান্যগণ্য ব্যক্তি আমার বন্ধুর ঘরে আসলো। কোন গোপন বৈঠক কী না কে জানে।কিন্তু বন্ধু বললো আমিও থাকতে পারবো। তারপর আমার এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা হলো। ওদের আলাপ আলোচনা শুনে আমার মনে হল ওরা সবাই নতুন সফল মেয়রকে সন্দেহ করেন। কিসের সন্দেহ?
– না, নতুন মেয়র কোন মানুষ নন। তিনি একটি রোবট!!! আমার বন্ধুটি জানালো।
তারপর ওনারা অনেক আলাপ আরোচনা করলেন এটি কীভাবে প্রমাণ করা যায়।
আমি বললাম – এটা তো খুবই সহজ। রোবটিক্সের প্রথম সূত্রই বলে কোন রোবট কোন মানুষকে মারতে পারবে না। আপনারা এমন আচরণ করেন যেন মেয়র একজনকে শেষ পর্যন্ত চড় মারতে বাধ্য হোন। দরকার হলে সেরকম একটা নাটক বানান। চড় মারলেই উনি মানুষ আর না মারলেই রোবট।
সঙ্গে সঙ্গে সবাই আমার প্রস্তাব লুফে নিল।
আমি বের হয়ে আসলাম। আগের তুলনায় এ শহরের বাতাস খুবই ভাল এখন। মোড়ের ময়লাগুলোও দেখা যাচ্ছে না। ফুটপাতে কোন দোকানপাট নেই। হাটতে হাটতে নদীর পাড়ে গেলাম। সেখানে একটা পার্কের মতো বানানো হয়েছে। নদীর পানিও দেখলাম আগের মতো ওতো ময়লা নয়।
আমার প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেখে একজন জানালো ট্যানারিগুলো দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর নদীর পানিতে যাতে কেউ কিছু মেশাতে না পারে তার জন্য নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও দুই একদিন থেকে চলে আসলাম।
নিজের শহরে পা দিয়েই মনে হল, রোবট হলে রোবট হোক কিন্তু এমন মেয়র যদি আমার থাকতো!!!
মাল্টিপল দোকানের কাজকর্মের কারণে ।ঐ শহরটার কথা প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম। সেদিন বাসায় ফিরে দেখি ট্রান্সপোন্ডারে আমার বন্ধুর একটি ভিডিও মেসেজ। অন করতেই ওর হাস্যজ্বল মুখ দেখা গেল। বলতেছে – তোর বুদ্ধি কাজে লেগেছে। আমাদের মেয়র রোবট নয়, মানুষই।
তারপর একটা ভিডিও ১/২ মিনিট হবে। সেখানে উত্তেজনার এক পর্যায়ে মেয়র এক লোককে একটা চড় দিয়ে দিল। তারপরই লজ্জিত হয়ে বলছে – আমি দু:খিত।
আমি দেখলাম ওখানকার লোকেরা সবাই অনেক খুশী!!!
ভিডিও চিত্রটি বন্ধ করে দিয়ে আমি মনে মনে বললাম – রোবটিক্সের এক্সটেন্ডেড ল’টাতো আমার বন্ধুদের আমি বলি নাই। রোবট কখনো কোন মানুষকে মারতে পারে না, কিন্তু সে অন্য একটা রোবটকে মারতে পারে!!!
শুধু তাই নয়। এ কাজ কারবার এখনই শুরু হয়ে গেছে।
এ সংক্রান্ত একটি বিশদ লেখা লিখেছেন সাংবাদিক শিবব্রত বর্মন। আর লেখাটি ছাপা হয়েছে মার্চ সংখ্যা বিজ্ঞান চিন্তায়।
মুশ্কিল হলো বিজ্ঞানচিন্তার কোন অনলাইন ভার্সন নেই। জানতে হলে পড়তে হবে এবং সেটার জন্য ৫০ টাকা খরচ করে বিজ্ঞানচিন্তার মার্চ সংখ্যা সংগ্রহ করতে হবে।
আপনার আশেপাশের হকারের কাছেই এটা পাবেন। না পেলে বিজ্ঞানচিন্তার পেজে গিয়ে হাওকাও করতে পারেন।
অবশ্য এ সংখ্যাতে আরও অনেক লেখা আছে। বিশেষ করে ইচ্ছেমতো ডিএনএ কাটাকাটি করা যাবে কী না সেটা নিয়েই তো প্রচ্ছদ রচনা।
আর অন্যান্য বিভাগ তো আছেই। ৯৬ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপনের পৃষ্ঠাগুলো বাদ দিলে প্রতিটি পাতায় নানা তথ্য-উপাত্ত- বিশ্লেষনে ভরা।
শুধু একটা দু:খ এ সংখ্যাতে আমার কোন লেখা নেই 😛
বিজ্ঞানচিন্তা না পড়লে তেমন ক্ষতি নেই।
তবে, আড্ডায় দারুন ভাবে পিছিয়ে পড়তে হয়। এ আর কি।
শুভ দুপুর