নো রিস্ক, অল গেইন!!!
গতকাল ১ অক্টোবর, ২০১৬ হলিক্রস কলেজে বিজ্ঞান মেলার সমাপনী ছিল। জাফর স্যার, কায়কোবাদ স্যারের সঙ্গে আমি আর ঢাবির অধ্যাপক ড. জেসমিন। আমি সুযোগ পেলেই এখন #missingdaughter নিয়ে কথা বলি আর পরড়ালেখার ব্যাপারটাতো থাকেই।কালকে জোর দিয়ে বলতে পেরেছি কারণ এবারের বিজ্ঞান মেলাটা কেবর হলিক্রসের নিজেদের জন্য ছিল। ফলে, অডিটরিয়ামে কেবল মেয়েরাই ছিল।
তার আগে ও পরে ড. জেসমিন বলছিলেন এখনকার শিক্ষার্থীদের নাকি পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কম। তারা দ্রুত সব কিছু পেতে চায়, সেটা নাকি কষ্ট না করেই। এছাড়া লক্ষ্যেও নাকি বেশ পরিবর্তন ঘটেছে।
যেমন ওনাদের বিভাগের উত্তীর্ণরা সবাই নাকি এবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে। সবাই সরকারি কর্তকর্তা হতে চায়। জীববিজ্ঞান অনুষদের সেরা শিক্ষার্থীরাই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। তারা সবাই এসি/ডিসি হওয়াটাকে লক্ষ্য ভাবছে। কারণ তাতে নাকি “তাড়াতাড়ি পাজেরো গাড়িতে চড়া যাবে”। তাহলে গবেষণক, শিক্ষা বা বিজ্ঞানী কে হবে? (যার ইচ্ছে সে হোক, আমার কী)
আমি অবশ্য এতে আপত্তির কিছু দেখিনা। কারণ বাজার অর্থনীতিতে এটাই স্বাভাবিক। এক সময় সরকারি চাকুরীতে কেবল গাড়ি-ক্ষমতা ছিল। এখন সেখানে টাকা-কড়ির ব্যাপারটাও দেখা হচ্ছে। কামিনী আর কাঞ্চনের যোগ যেখানে সেখানেই সবাই যাবে তাতে কোন সমস্যা আমি অন্তত দেখি না।
আমি সমস্যা দেখি অন্যত্র। সেটি হলো শর্টকার্ট পদ্ধতিতে সবকিছু পাওয়ার একটা বুদ্ধি নাকি এখন সবার মাঝে কাজ করে। এবং তারা রিস্কও নিতে চায় না। এতে আমি খুব অবাক হচ্ছি। কারণ রিস্ক তো তরুনরাই নেবে।
আমার পরীক্ষায় ৮টি প্রশ্নের মধ্যে ৬টির উত্তর করতে হয়েছে। প্রশ্নে আমি দুটো সহজ প্রশ্ন দিয়েছিলাম। তার মধ্যে একটা সরাসরি উদাহরণ থেকে!!! কেবল ছবিটা না দিয়ে বর্ণনা লিখে দিয়েছি। বড় জোর মিনিট দশেকের মামলা। এটি সবাই এড়িয়ে গেছে। আর একটা ছিল সংক্ষিপ্ত উত্তর। এক শব্দেও হতে পারে। এক শব্দের একটা কমান্ড লিখতে পারলে আড়াই নম্বর। এটাও অনেকে লেখে নাই। তারা বরং বাছাই করেছে দীর্ঘ বর্ণণামূলক প্রশ্ন। কারণ কী?
না, বর্ণনামূলকে কিছু নম্বরতো পাওয়া যাবে। আর ঐগুলোতো বাইনারি – ০ বা ১। রিস্ক নেওয়ার দরকার কী?
আমাদের তরুনরা কী তাদের ভালবাসার জন্যও রিস্ক নেয়? আমি জানি না। একজন খালি আমাকে বলে দিল এখানেও সেরকম রিস্ক নিতে হয় না। কারণ দৃষ্টি আকর্ষন এখন অনেক সোজা। কাজে একজন না হরে আর একজন এভাবে কাউকে না কাউকেতো পাওয়া যায়!!!
ভাইভা বোর্ডে একবার এক ছাত্রকে জিজ্ঞাষা করলাম – আমেরিকার কোন অঙ্গরাজ্য তোমার পছন্দের?
-ম্যাসাসুসেটস স্যার।
বাহ, ভাল। ম্যাসাসুসেটস বানান করো তো।
– ওহ নো, স্যার। আমার প্রিয় রাজ্য ওহাইও। ও এইচ আই ও!
হ্যাপি ফাঁকিবাজি।