রাতারাতি বিলিওনিয়ার হওয়ার উপায়!!!

Spread the love

কোন একটা বিষয়ে মাস্টারী অর্জন করার জন্য কতো সময় খাটতে হয় – এ বিষয়ে ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েলের একটা তত্ত্ব আছে, ১০ হাজার ঘন্টার তত্ত্ব। তাঁর বিখ্যাত বই Outliers: The Story of Success –এ তিনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, যাঁরা সফল হয়েছেন তারা মোটামুটি ভালই দৌড়ঝাপ আর খাটাখাটনি করেন। এবং সফল হওয়ার জন্য সেটা কমপক্ষে ১০ হাজার ঘন্টা। ১০ হাজার ঘন্টা আসলে কতো সময়?
সপ্তাহে ২০ ঘন্টা যদি দেন এবং দুই ঈদের সময় যদি ছুটি নেন তাহলে বছরে আপনি এক হাজার ঘন্টা পাবেন। তার মানে দাড়ালো ১০ বছর। হিসাবটা আমি দেখেছি মোটামুটি ঠিকই আছে। আমি নিজেকে সফল বলি না, কিন্তু এরকম লেভেলের খাটাখাটনি আমি করেই যাচ্ছি। এরকম খাটাখাটনি করার পর আপনি একটা ‘রাতারাতি সাফল্য’ আপনি পাবেন।
আউটলায়ার ছাড়াও আমি উসাইন বোল্ডের খাটাখাটনি হিসেব করে বুঝেছি এটা মোটামুটি স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। গণিত অলিম্পিয়াডে তাই আমাদের মটো হচ্ছে লেগে থাকো, সাফল্য নিয়ে ভাবার দরকার নাই।

উসাইন বোল্টের এই ভিডিও স্টোরিটা আমার ক্লাশে আমি দেখাই। নিজেও মাঝে সাজে দেখি। ১০ হাজার ঘন্টার হিসাবটা মাথায় ঢোকে। এই আর কি।

তবে, অন্যরকম সাফল্যও আছে। যেমন বিলিওনিয়ার হওয়া। এখন পর্যন্ত যারা বিলিওনিয়ার হয়েছে তাদের বেশিরভাগই খাটাখাটনি করে হয়েছে। আর কেউ কেউ হয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে। যেহেতু অনেক বিলিওনিয়ার এরই মধ্যে মারা গেছেন তারা তাদের ছেলে-মেয়েদের বিলিওনিয়ার বানিয়ে দিয়েছেন।

ম্যাকেনজি’র সঙ্গে তার প্রাক্তণ স্বামী অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস

তবে, বিবাহ-বিচ্ছেদের কারণে রাতরাতি বিলিওনিয়ার হওয়াটাও এখন আর বিরল ঘটনা নয়। গত বছর এই সময়ে আমরা বিশ্বের এক নম্বর ধনকুবের অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ ‘তালুকদার’ বেজোসের বিবাহ বিচ্ছেদ দেখেছি। ম্যাকেনজির সঙ্গে তাঁর এই বিবাহ বিচ্ছেদ মানব ইতিহাসে এই পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয় বহল বিবাহ বিচ্ছেদ হিসাবে মর্যাদা পেয়েছে। ২৫ বছরের সংসার ভাঙ্গার জন্য জেফ তার প্রাক্তণ স্ত্রীকে অ্যামাজনের ৪% মালিকানা হস্তান্তর করেন। সেই সময় এর বাজার মূল্য ৩৮.৩ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে ম্যাকেনজি বিশ্বের শীর্ষ মহিলা ধনীদের তালিকার মোটামুটি শীর্ষে চলে আসেন। ২০২০ সালের ৩ জুনের হিসাব অনুযায়ী, ৩৬ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক বিশ্বের ধনী মহিলাদের তালিকায় ম্যাকেনজি’র অবস্থান  ৪র্থ!

জেফ অবশ্য ১নং ধনীই রয়ে গেছেন

এরই মধ্যে গত ২৯ তারিখ নতুন একজন বিলিয়নিয়ারের জন্ম হয়েছে এই বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এই মহিলার নাম উয়ান লিপিং।  লিপিং শেংজেং কাংটাই বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান ডু উইমিনের সাবেক স্ত্রী। ২৯ মে , ২০২০ তারিখে উইমিন তার কোম্পানির ১৬ কোটি ১৩ লক্ষ শেয়ার উয়ান লিপিং-এর নামে হস্তান্তর করেছেন। ১ জুন ২০২০ সালের হিসাবে এই শেয়ারের সম্পদ মূল্য মাত্র ৩.২ বিলিয়ন ডলার (১ বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি!)। কাজে ৪৯ বছর বয়সী চিনা বংশদ্ভূত কানাডীয় উয়ান লিপিং বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের ক্লাবে ঢুকে পড়েছেন। মজার ব্যাপার হলো এই শেয়ার হস্তান্তরের ফলে কোম্পানিতে উইমিনের শেয়ারের মূল্য এখন ৩.১ বিলিয়ন ডলার!!! তবে, লিপিং শেয়ারের মালিক হলেও কোম্পানির বোর্ডে তাঁর ভোটিং ক্ষমতা প্রাক্তণ স্বামীকে লিখিত ভাবে দিয়ে রেখেছেন।

লিপিং কিংবা  ম্যাকেনজির কারণে মনে হতে পারে বিচ্ছেদে খালি বউরা বিলিওনিয়ার হয়। কিন্তু ব্যাপারটা এরকম নয়। এর আগে উ যাজুন নামে চিনার সবচেয়ে সম্পদশালী মহিলাকে তার সম্পত্তি প্রাক্তণ স্বামীকে ভাগ করে দিতে হয়েছে। লংফোর গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেডর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন যাজুনের স্বামী, কোরিয়ান চাই কুই। বিচ্ছেদের পর চাই কুই ২.৩ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হোন।

কাজে চিপাচাপায় যদি মাল্টি-বিলিওনিয়ার কোন পুরুষ বা মহিলাকে বিয়ে করতে পারেন তাহলে রাতারাতি বিনিওনিয়ার হওয়ার একটা পথ পেলেও পেতে পারবেন।

আপনার জন্য শুভ কামনা

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version