ওরা চাকরি খোঁজে না-৩
একটা কারণ হলো এই জায়গাটায় একটা শূণ্যতা ছিল। আমাদের দেশে লোকে ক্যারিযার বলতে বুঝতো চাকরি, ব্যাংক বীমা কর্পোরেট কিংবা সরকারি। এজন্য অনেকেই বছরের পর বছর ধরে চেস্টা করে যায়। অন্যদিকে ভার্সিটি ক্যাম্পাসগুলোতে ক্যারিযার বলতে চাকরিকেই বোজানো হতো।
আমরা একটু ভিন্ন কথা বলতে শুরু করলাম দেখে এটা একটা বাজার পেল (এখন অবশ্য উদ্যোক্তা একটা বাজওয়ার্ড হযে গেছে। মনে হয় সবারই এই সংক্রান্ত কোন না কোন প্ল্যাটফর্ম বানানোর ইচ্ছা আছে!)। এটা ভাল। আমার নেতা মাওলানা ভাসানীর যিনি নেতা, তিনি বলতেন – শত ফুল ফুটতে দাও। আমিও সেটা মেনে চলি।
আর একটা কারণ হল – আমরা বলতে শুরু করলাম বাঙ্গালি আসলে কেরানির জাত নয়। বরং উদ্যোক্তার জাত। আমাদের দেশের প্রায় সকল লোকই কোন না কোন উদ্যোগ নিতে পচন্দ করেন। কেও রাস্তার আশেপাশে গাছ লাগান, পলান সরকার বই বিলান, ড.ইউনুস ক্ষুদ্র ঋণ দেন। আমার হিসাবে আমাদের ১৮ হাজার গ্রামীণ হাটবাজার প্রতিবছর অর্ধলক্ষাধিক নতুন ট্রেডারের সৃস্টি করে। সেই যুগ যুগ ধরে আমাদের কৃষক গ্রামীণ হাটে গিয়ে কলাটা-মুলাটা বিক্রি করে। কাজে নতুন করে যখন এটা বলা হল তখন এক শ্রেণীর লোকজন ব্যাপারটা লুফে নিলেন।
ফলে এখন দেশজুড়ে মনে হয় উদ্যোক্তা সৃষ্টির একটা জোযার তৈরি হয়েছে। এটা ভাল। লক্স রাখতে হবে এটা যেন টিকে থাকে।
এখানেই যত সমস্যা। কারণ আমরা নাকি হুজুগে জাতি। বিমেস করে যেকোনকিছুকে না পচানো পর্যন্ত আমরা নাকি থামি না। অথবা সেক্টরটা তৈরি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে আমরা কার্পন্য করি না। কারণ, আমাদের নাকি ধৈর্য কম।
তবে, সব অভ্যাস আমাদের খারাপ না। আমাদের দেশে নতুন একদল ছেলেমেযে নিরবে নিভৃতে গড়ে উঠছে। এরা নূরউদ্দিনের মত নিজেই ক্যাপিটাল মেশিনারি তৈরি করে ফেলে গাড়ির ব্রেক-সু লাইনেজ বানানোর জন্য, কেও কেও এমন সিস্টেম তৈরি করে যে ঐ কোম্পানির ২৩ ভাগ শেয়ারের দাম উঠে যায় ৬০ কোটি টাকায়। কারো কারো চিন্তা চেতনা ভবিষ্যতের বাঁক ঘুরিযে দেওয়ার মত।
এমন ধারার কিছু ছেলে-মেয়ে আমাদের চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হযেছে। ওদের মূল মন্ত্র হল – শেয়ারিং নলেজ ইজ পাওয়ার – বিনময়েই জ্ঞানের শক্তি।
কত অবলীলায় তারা তাদের বিজনেজ সিক্রেট, আইডিয়া সবই শেয়ার করে। কারণ তাঁরা জেনে গেছে – এন আইডিয়া ইজ নট এন আইডিয়া আনলেস ইট ইজ ইমপ্লিমেন্টেড এন্ড ইট ইজ হার আইডিয়া হু ইম্পিমেন্টেড ইট।
১৩ এপ্রিল ২০১১ সালে আমি বাবি নায় চার বছরের মধ্যে সহস্রাধিকের বেশি ছেলে-মেযে এই গ্রুপ দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়ে কাজে নেমে পড়বে। কিন্তু সত্যি নত্যি সেটা হচ্ছে।
প্রতিদিনই কেও না কেন আমাদের গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে পথে নেমে পড়ছেন। কাজ শুরু করে দিচ্ছেন। ককণো কখনো তারা তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিডিয়াতে বা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে।
আজ সকালে প্রথম আলো হাতে নিয়ে তিনজন উদ্যোক্তা আর আমাদের শওকত ভাই-এর ছবি দেখে মনটা ভরে গেছে। উদ্যোক্তাদের একজন লিটন তাঁর স্ট্যটাসে ধন্যবাদ দিয়েছে গ্রুপকে, গ্রুপের সকল মেম্বারকে।
আমার মাঝে মধ্যে মনে হয় আল্লাহপাক যে ছোট্ট জীবনটা আমাদের দিয়েছেন সেটা পরিপূর্ণ করতে আমাদের কি অনেক কিছুর দরকার পড়ে?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল থাকার তৌফিক দিন।