আমার কী হবে রে, কালিয়া?

Spread the love

স্যার, স্যার।

সোনারগাঁও হোটেলের সামনে আমাকে আবার কে স্যার স্যার বলে ডাকবে। কাজে কানে গেলেও পাত্তা দিলাম না।

“স্যার, ও মুনির স্যার।”
এবার দাড়াতে হলো। রাস্তার অপর দিক থেকে একটা অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে প্রায় দৌড়ে আমার কাছে চলে আসলো।
“যাক আপনাকে পেয়েছি। আপনার বিরুদ্ধে আমার মামলা আছে।” বললো মেয়েটি।
বলে কি! মামলা!!!

কীসের ফ্যাসাদে পড়লাম। ভালমতো তাকালাম। চেনা চেনা লাগছে। কোথায় যেন দেখেছি। হালকা পাতলা গড়ন, লম্বা মুখ। বৈশিষ্ট্য চুলে। একেবারে ছেলেদের মতো, ছোট ছোট। গায়ের রংটাও সুন্দর। চেহারায় একটা মারদাঙ্গা ভাব থাকলেও সৌন্দর্যটা ঢাকা পড়েনি।
“চুল কেটে ফেলছি।” একটু থেমে আমার অবাক হওয়া দেখে একটু মনে হল দু:খ পেলো।

তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো – আমি জাহিরা।

সব্বনাশ। এখন আমি কী করি। ততক্ষণে আমরা দুজনই সোনারগাঁ হোটেলের গেটের কাছে চলে এসেছি। জাহিরাকে কেমন করে কাটাই!

“স্যার চলেন, আমরা ভিতরে যাই। আপনার সঙ্গে আমরা অনেক ঝগড়া আছে।” উপায়ন্তর না দেখে ওর সঙ্গে হোটেলের লবিতে গিয়ে বসলাম।

“আপনি বইটা লিখলেন না স্যার। আমি আপনাকে কতো ডিটেইলে সব কিছু বলেছি। এমনকী ওই দুজনের ছবি পর্যন্ত এঁকে দিয়েছি। আর আপনি গত বছর মেলাতে বইটা প্রকাশ করবেন বলেছিলেন, তা করেন নাই।” জাহিরার চেহারা কি একটু মলিন হয়ে গেল।

তাইতো। কী করি এখন। ময়ালের কয়েকটা পর্ব আমি লিখেছিলাম ২০১৪ সালে। জাহিরা সেটার কথাই বলছে।
জাহিরা আমার প্রথম সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস ময়ালের নায়িকা। দৈনিক সূর্যালোকের ক্রাইম রিপোর্টার। ওর কাছ থেকে আমি পুরো গল্পটা শুনে নিয়েছিলাম, সব নোট-ফোটও নিয়েছি। কয়েকটা পর্ব ফেসবুকে শেয়ারও করেছি। কিন্তু ঐ পর্যন্তই।
এ বছর আমার প্রকাশককে ডেকে কভার করতেও বলেছি। কিন্তু জানি, এবারও মনে হয় লেখাটা প্রকাশিত হবে না।

ওরে আমি কী বলি। অধোবদনে বসে থাকলাম। সবাইরে দিয়ে কী সব হয়!
“গতমাসে আবার কক্সবাজার গিয়েছিলাম। ছেড়াদ্বীপের পাশের ঐ দ্বীপটাতে গিয়েছিলাম আমি আর কুদ্দুস ভাই। সেবারের মত অবকাশেই উঠেছিলাম স্যার। সব কথা মনে পড়েছে। আপনি কী চান আমি আর কখনো কক্সবাজার না যাই?”

আচ্ছা আমি কী বলবো। কোন লেখকের সঙ্গে তার নিজের সৃষ্ট চরিত্রের যদি কখনো দেখা হয়ে যায় তখন কী বলতে হয় তা তো আমি কোথাও পড়ি নাই। কী করবো বুঝতেও পারছি না।

জাহিরার ফুপি কী আমাকে বাঁচাতে পারে না? জাহিরা সোহানা ফুপি আবার এক সময় বিসিআই-তে কাজ করতেন। আমার মনে হচ্ছে তার কাছে গিয়ে মনে হয় বলতে হবে তার ভাইঝির কবল থেকে আমাকে রক্ষা করতে।

কাোর কোন পরামর্শ আছে আমি কেমনে জাহিরার কবল থেকে বাঁচতে পারি?

 

 

 

 

 

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version