লুঙ্গি সমাচার
তো, কদিন ধরে যেভাবে সবাই লুঙ্গির আলাপ করছে তাই আমি আজকে ভাবলাম তাহলে লুঙ্গি গামছার দোকানে যাই। লুঙ্গি কিন্তু আপাদমস্তক বাংলা শব্দ হলেও এটির আগমন আরাকান থেকে। আরাকানীদের জাতীয় পোষাক এই লুঙ্গি। অবশ্য ওরা লুঙ্গিকে বলে ফুঙ্গি। তো, এ তথ্য জানার পর এক বাঙ্গালি নারী তার স্বামীকে ডেকে বলেছিল, “ ওই শুনছো। আরকানীরা নাকি লুঙ্গিকে বলে ফুঙ্গি”।
শোনার পর ঐ স্বামী জবাব দিলেন, “ এই মাত্র এক আরাকানী বউ তার স্বামীকে ডেকে বলেছে – বাঙ্গালিরা নাকি ফুঙ্গিকে বলে লুঙ্গি। হাহাহা”।
যাই হোক। আমি শুনেছি এখন ১২ হাজার টাকা দামের লুঙ্গিও নাকি পাওয়া যায়।
আমার অবশ্য লুঙ্গি টার্গেট ছিল না। আমি গেলাম দুইটা গামছা কিনতে। আমার আর আমার মেয়ের জন্য।
প্রথম দুই দোকানদার আমাকে কোন গামছাই দেখালো না। তৃতীয়জন, একজন চাচা মিয়া, দেখলাম নিবিষ্ট মনে মোবাইলে কথা বলছেন। আমি কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকলাম। কিন্তু ওনার কথা আর শেষ হয় না। শেষমেষ লাইনের শেষ দোকানদার আমাকে গামছা দেখানো শুরু করলেন। কয়েকটা দেখার পর আমি দুইটা গামছা পছন্দ করলাম। দাম ঠিক করে প্যাকেট করতে বললাম।
“চাচা, লুঙ্গি দেখান তো”।
উনি দেখালেন। আমার একটা পছন্দও হলো। দাম জিঙ্গাষা করে জানলাম দুইটি গামছার যে দাম একটা লুঙ্গির একই দাম।
আমি বললবম, “চাচা, গামছা দুইটার বদলে আমি কি একটা লুঙ্গি নিতে পারি”।
হিসাব করে চাচামিয়া বললেন, “জি। পারেন”।
“তাহলে আমাকে লুঙ্গিই দেন”।
দোকানদার প্যাকেট থেকে গামছা দুইটা বের করে সেখানে লুঙ্গিটা ভরে আমাকে দিলেন।
আমি সেটা নিয়ে হাটা দিলাম।
“এ ভাই। লুঙ্গির দামটা তো দিলেন না। লুঙ্গির দাম দেন”। দোকানদার বললেন।
“কিন্তু আমি তো লুঙ্গিটা দুইটা গামছার বদলে নিয়েছি”।
“ঠিক আছে”। চাচামিয়া বললেন, “তাহলে আপনি দুইটা গামছার দামই দিন”।
আমি অবাক হয়ে তাকে বললাম, “কী আশ্চর্য!!! চাচামিয়া আপনি এটা কী বললেন। আমি তো গামছা নেইনি। তাহলে সেটার দাম দিবো কেন? ঐ যে আপনার গামছা”।
এ বলে আমি লুঙ্গি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম।