জেমস ওয়েবের প্রথম সেলফি!
সবাই এখন সেলফি তুলতে চায়, তা সে মানুষ হোক বা রোবট কিংবা টেলিস্কোপ!
হ্যা। ঠিকই পড়েছেন। টেলিস্কোপ। মাত্র কিছুদিন আগে মহাকাশে প্রক্ষিপ্ত হয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার নতুন মহাকাশ টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)। ক্যামেরা হাতে পেলেই সেলফি তোলার ‘হুজুগে’ নতুন সংযোজন টেলিস্কোপ।
১০ বিলিয়ন ডলার (৮৫ হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ে নির্মিত জেমস ওয়েব নভোদুরবিনটির ওজন প্রায় ৬,২০০ কেজি। এর মূল দর্পণের আকার ৬.৫ মিটার। নাসা এই নভোদুরবিনকে বলছে হাবলের উত্তরসূরী। গত বছর ২৫ নভেম্বর ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে আরিয়ান ৫ রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয় এটি। প্রায় এক মাসের যাত্রা শেষে নভোদুরবিনটি সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছায়।
গত সপ্তাহে নাসা এর তোলা ছবির প্রথম কিস্তি প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে একটি বিশেষ ছবিকে ঘিরে দূরবিনের প্রকৌশলীদের আগ্রহ বেশি যা কিনা মহাকাশের ছবি নয়। এটি একটি ‘সেলফি’!!! নভোদূরবিনের সেলফি।
টেলিস্কোপটি তার নিজের প্রধান দর্পনটির একটি ছবি তুলে পাঠিয়েছে। ২১.৩ ফুট প্রশস্ত এই দর্পনটিতে মোট ১৫টি অংশ আছে। সামনের দিকের একটি ক্যামেরা দিয়ে টেলিস্কোপের মূল দর্পনের এই সেলফিটা তোলা হয়েছে। এতে একটি অবর্ণিত একটি তারা একাধিক প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। জেমস ওয়েবের প্রকৌশলীরা এই সেলফিটা পরিকল্পনা করেন যেন তারা দর্পনের এলাইনমেন্ট ঠিক হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে পারেন। নভোদূরবিনটি ঠিকই তার কাজ করেছে এই সেলফিটা তুলে।
তবে মহাকাশে সেলফি কিন্তু এটিই প্রথম নয়। মহাকাশে প্রথম সেলফিটি তুলছেন চন্দ্র বিজয়ী নভোচারী বাজ অলড্রিন। ১৯৬৬ সালে জেমিনি ১২ মিশনের সময় তিনি এ ছবিটি তুলেন।
তারপর থেকে অনেকেই এই কাজ করছেন। মহাকাশ স্টেশনে কাজ করার সময় অনেকেই ছবি তুলেছেন। মহাকাশ স্টেশনের ভিতরে বেশ কিছু ছাি আছে। এপোলো-১০এর ভিতরে মাইকেল কলিন্সের সেলফি আছে।
তবে নভোচারীরাই কেবল সেলফি তোলে না। তাদের বাহন রোবটরাও তোলে। ১৯৭৬ সালে ভাইকিং-২ মঙ্গলে অবতরণের পর সেটির ডেকের ছবি তুলে পাঠায়। ১৯৮৯ সালে গ্যালিলিও মহাকাশযানও নিজের ছবি তুলেছে।
তবে মহাকাশ রোভারের সেলফির মধ্যে অন্যতম সেরা হলো মঙ্গল থেকে কিউরিসিটি রোভারের পাঠানো সেলফি।
ডিসকভারী নিউজ এটিকে ২০১৩ সালে কিং অব সেলফি হিসেবে ঘোষণা করে।