উন্মোচিত হোক আমাদের পাটের জিন-নকশা

Spread the love

প্রকাশ কাল – ৮ নভেম্বর, ২০০৯

গত বছর পেঁপের জিন-নকশা উন্মোচিত করে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ফরিদপুরের মাকসুদুল আলম বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার-এর প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছিলেন। সেই বিজ্ঞানীর হাত ধরে মালয়েশিয়া কিন্তু ঠিকই উন্মোচন করে ফেলল তাদের জন্য দরকারি রাবারের জিন-নকশা। পেঁপে আর রাবারের মতো আমাদের পাটের জিন-নকশার উন্মোচন আজ সময়ের দাবি। 

রাবারের জিনের গল্প

পেঁপের পর রাবার। হাওয়াই থেকে মালয়েশিয়া। কাজের জায়গা আলাদা কিন্তু ক্ষেত্র এক। মানুষও এক। বাংলাদেশের গর্ব জিনবিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম এবার উন্মোচন করেছেন মালয়েশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ রাবারের জিন-নকশা। ২৮ অক্টোবর মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী দাতো সেরি মোহাম্মদ খালেদ নর্ডিন এই আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। রাবার মালয়েশিয়ার সবচেয়ে অর্থকরী ফসল। রাবারশিল্প তাদের অন্যতম বিদেশি মুদ্রার উত্স। কাজেই তাদের অনেক আশা-ভরসার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রাবার। তবে প্রতিযোগিতাও রয়েছে। অন্য অনেক দেশই রাবারশিল্প নিয়ে নানা কসরতে ব্যস্ত। মালয়েশিয়া বিশ্বের চতুর্থ রাবার উত্পাদনকারী দেশ। প্রথম তিনটি দেশ হলো ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত। রাবারের জাত উন্নয়নের জন্য এখন পর্যন্ত ভরসা প্রচলিত ব্রিডিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি নতুন জাতের উন্নত রাবারের জাত উদ্ভাবনে কমবেশি ১২ বছর লাগে। মালয়েশিয়ার দরকার একটি উন্নত জাতের, সহনশীল রাবারগাছ, যা কিনা বিশেষ রোগপ্রতিরোধী। কী করে এমন জাত উদ্ভাবন করা যায়?

অধুনা জিনবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের কাছে এ উত্তরটি সোজা। রাবারগাছের জিনের অনুক্রম বা জিনোম জেনে ফেলা। রাবারগাছে প্রায় ২০০ কোটি বেস জিনোম রয়েছে। এর সম্পূর্ণ অনুক্রম জেনে ফেলতে পারলে স্বপ্নপূরণ সহজ হবে। কারণ তখন জানা যাবে, কোন জিনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি স্বপ্নের রাবারগাছের জন্ম দেবে।

সেই চিন্তা থেকে মালয়েশিয়া সরকার রাবারগাছের জিন-নকশা উন্মোচনের কাজ শুরু করে। সেইন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘সেন্টার ফর কেমিক্যাল বায়োলজি’ নামের কেন্দ্র। শুরু হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে সেরা জিনবিজ্ঞানীদের খুঁজে আনার পালা। একটু খুঁজতেই মালয়েশিয়া সরকার খোঁজ পেয়ে যায় বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের। ২০০৮ সালে পেঁপের সম্পূর্ণ জিন-নকশা উন্মোচনে একদল বিজ্ঞানীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী।

ফরিদপুর থেকে

ফরিদপুরের সন্তান মাকসুদুল আলমের জন্ম ১৯৫৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর। বাবা দলিলউদ্দিন আহমেদ তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের (অধুনা বিডিআর) কর্মকর্তা। মা লিরিয়ান আহমেদ সমাজকর্মী ও শিক্ষক। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাবা শহীদ হলে মাকসুদদের বড় পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে মা লিরিয়ান আহমেদের ঘাড়ে। শিক্ষকতা করে তিনি গড়ে তোলেন তাঁর চার ছেলে ও চার মেয়েকে। স্বাধীনতার পর মাকসুদ চলে যান রাশিয়ায়। মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অণুপ্রাণবিজ্ঞানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তারপর আবার জার্মানির বিখ্যাত ম্যাক্স প্ল্যাং ইনস্টিটিউট থেকে প্রাণরসায়নে পিএইচডি করেন।

মস্কোয় মাকসুদ সংস্পর্শে আসেন ভ্লাদিমির পেত্রোভিচ মুলাচেভের। প্রাণরসায়নের নানা শাখায় পেত্রোভিচের রয়েছে অনেক অবদান। তাঁর কাছ থেকে আমাদের মাকসুদ জানতে পারেন, কীভাবে প্রকৃতির অজানা রহস্য সম্পর্কে ভাবতে হয়, স্বপ্ন দেখতে হয়। জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ পান প্রাণরসায়নের অপর দুই দিকপাল ডিয়েটার ওয়েস্টারহেল্ট ও জেরাল্ড হেজেলবাউয়ের সঙ্গে।

ডিয়েটারের কাছে তিনি শেখেন, কীভাবে অজানা বিষয় নিয়ে পরীক্ষা করতে হয়, আর হেজেলবাউ ও লিন্ডা রন্ডালের কাছে তিনি ঋণী, প্রকৃতির চমত্কার বিষয়গুলো কীভাবে প্রকাশ করতে হয়, তা জানার জন্য।

জার্মানির পর তিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন বাইপ্রোডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারের সহযোগী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গবেষণার জন্য আলম ও তাঁর দলবলকে এক মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়। এ সেন্টারে কাজ করার সময় ২০০০ সালে তিনি ও তাঁর আরেক সহকর্মী রেন্ডি লারসেন প্রাচীন জীবাণুতে মায়োগ্লোবিনের মতো এক নতুন ধরনের প্রোটিন আবিষ্কার করেন। মাংসপেশিতে বিদ্যমান মায়োগ্লোবিন ও রক্তের হিমোগ্লোবিন জীবদেহে অক্সিজেনের পরিবহন ও মজুদে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মাকসুদ ও লারসেনের আবিষ্কৃত নতুন এই প্রোটিনের মাধ্যমে বিবর্তনের ধারায় কীভাবে মায়োগ্লোবিন ও হিমোগ্লোবিনের সৃষ্টি হয়েছে, এর ব্যাখ্যা হাজির করা হয়েছে।

২০০০ সালে এই আবিষ্কারের পর মাকসুদের খ্যাতি ও দক্ষতা দুই-ই সবার নজরে আসে। এ কারণে হাওয়াইআন পেঁপের জিন নকশা উন্মোচনের জন্য ডাক পড়ে আমাদের বিজ্ঞানীর।

আমারি বঁধুয়া আন বাড়ি যায় আমারি আঙ্গিনা দিয়া

পেঁপের জিন-নকশা উন্মোচনের পর বিজ্ঞানী মাকসুদ ভেবেছিলেন তিনি পাটের জিন-নকশা উন্মোচন করবেন। সে জন্য তিনি কয়েকবার বাংলাদেশেও এসেছেন। আমাদের দোনোমোনার ভেতর মালয়েশিয়া সরকার খুঁজে নেয় বিজ্ঞানী আলমকে। মালয়েশিয়ার জন্য এই জিন-নকশা মালয়েশিয়াতেই উন্মোচন করা দরকার। কারণ এতে তাঁর মেধাসম্পদ নিজেদের হবে। এরই মধ্যে ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াও তাদের কাজ শুরু করে। ফলে রাবারের জিন-নকশা উন্মোচন করার জন্য সময়ের সঙ্গে দৌড়াতে হয়েছে মাকসুদকে। এবং মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় রাবার জিনের ২০০ কোটি বেস-যুগলের নকশা উন্মোচিত হয়েছে।

এ এক অভাবনীয় সাফল্য

মাকসুদুলের এই সাফল্য মালয়েশিয়াকে এশিয়ার মধ্যে রাবারশিল্পের জন্য অন্যতম প্রধান বায়োটেকনোলজি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। পাশাপাশি মালয়েশিয়ার যে তরুণ বিজ্ঞানীরা সাহচর্য পেয়েছেন মাকসুদ ও অন্য বিশ্বসেরা জিনবিজ্ঞানীদের, তাঁরাও কিন্তু নিজেদের দীক্ষিত করে তুলেছেন জেনোমিক্স, অণুজীববিজ্ঞান ও বায়োইনফরমেটিকসে। মালয়েশিয়ার এই কেন্দ্রে সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এক অনুপম নিদর্শনও হয়েছে।

মাকসুদের এই আবিষ্কারের ফলে রাবারের জিন-নকশার ওপর মালয়েশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পেল।

হাওয়াইয়ের পেঁপে, মালয়েশিয়ার রাবার আর আমাদের পাট

পাট হলো পৃথিবীর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ তন্তুজ। পাট থেকে পাওয়া যায় প্রাকৃতিক, পুনর্ব্যবহার্য এবং সর্বোপরি পচনশীল সেলুলোজ তন্তু। অবশ্য প্রথম গুরুত্বপূর্ণ তন্তুজ শস্য হলো তুলা। পৃথিবীর প্রধান পাট উত্পাদনকারী দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, রাশিয়া ও মিয়ানমার। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে উত্পন্ন হয় বিশ্বের ৯০ শতাংশ পাট।

প্রকৃতির জন্য ভয়াবহ সিনথেটিক প্লাস্টিকের তুলনায় পাট হলো সম্পূর্ণ সবুজ তন্তু। পাটের ৭৫ শতাংশ সেলুলোজ, ১১-১৪ শতাংশ লিগনিন ও ১২ শতাংশ জাইলিন। একরপ্রতি সেলুলোজ তন্তুজ উত্পাদন পাটের বেলায় সবচেয়ে বেশি, যা কাগজ ও জৈব জ্বালানি উত্পাদনে ব্যবহূত হতে পারে। পাটের পাতা আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহূত হয় (আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য ও কৃমির সংক্রমণ রোধে দারুণ কার্যকর)। এ ছাড়া পাটের পাতা ভিটামিনসমৃদ্ধও বটে। চীন ও ভারতের দ্রুত বিকাশের কারণে প্যাকেজিং, কাগজ ও নির্মাণশিল্পে কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। আবার বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় এক কোটি ২০ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা পাটের ওপর নির্ভরশীল। এদিকে পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশের ক্ষতি ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক তন্তুর ব্যবহার বাড়ছে। জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০৯ সালকে প্রাকৃতিক তন্তু বছর হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কাজেই আমাদেরও এখন দরকার পাটের দিকে ফিরে তাকানো।

প্রচলিত পদ্ধতিতে পাটের উন্নয়ন

ধান বা অন্য অনেক শস্যের সঙ্গে পাটের একটি মৌলিক পার্থক্য হলো, প্রকৃতিতে এর জাতের সংখ্যা কম। বিশ্বে লাখখানেক জাতের ধান আছে। এর কোনোটি লবণ-সহনশীল, কোনোটি খরাপ্রতিরোধী ইত্যাদি। ফলে একটির গুণ অন্যটিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার চিন্তা করা যায়। কিন্তু পাটের বেলায় সে সুযোগ কম, কারণ জাত কম। ‘কাজেই পাটের উত্পাদন বাড়ানোসহ এ নিয়ে যা কিছুই করতে চাই না কেন, আমাদের জিনকৌশলের ওপর অনেকখানি নির্ভর করতে হবে।’ বললেন মাকসুদ। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দরকার জেনেটিক্যালি উন্নত জাত ও সহায়ক পরিবেশ।’

আর জিন-সংক্রান্ত কিছু করতে হলে আমাদের প্রথমেই দরকার পাটের সম্পূর্ণ জিন-নকশা।

বিজ্ঞানী মাকসুদের হাতেই হোক

জিন-নকশা বের করার এখন অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। এমন যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কাজটি করিয়ে নেওয়া যায়, টাকা দিয়ে। তবে কেবল জিন-নকশা উন্মোচনই তো একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। আমাদের দরকার নতুন এক প্রজন্ম, যাদের থাকবে জিন-নকশা উন্মোচনের অভিজ্ঞতা। যেভাবে মালয়েশিয়া তার প্রজন্মকে তৈরি করে নিচ্ছে, সে রকম আমাদেরও দরকার নিজেদের লোক ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। মাকসুদের সঙ্গে সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন হাসিনা খানসহ আমাদের বিজ্ঞানীরা। আমরা হয়ে উঠব বায়োটেকনোলজিতে অভিজ্ঞ।

২০০৬ সালের জুলাই মাসে জাতীয় বায়োটেকনোলজি নীতিমালার একটি খসড়া অনুমোদিত হয় টাস্কফোর্সে। কিন্তু এরপর তেমন কিছু হয়নি গত তিন বছরে। এর মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে জাতীয় বায়োটেকনোলজি ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার কাজ। একটি প্রকল্পের আওতায় সাভারে গড়ে উঠেছে আমাদের এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি সরকারিভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি বিভাগ চালু করা হয়। বিভিন্ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু বায়োটেকনোলজি পরীক্ষাগার রয়েছে। জাতীয় বায়োটেকনোলজি ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষণা ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে—অ্যাগ্রিকালচার বায়োটেকনোলজি, এনভায়রনমেন্ট বায়োটেকনোলজি, মেডিকেল বায়োটেকনোলজি, রিকমবিনেন্ট ডিএনএ বায়োটেকনোলজি ও বায়োটেক প্রোডাক্ট অ্যান্ড প্রসেস ডেভেলপমেন্ট। প্রকল্প সমাপ্তির পর বর্তমানে একটি থোক বরাদ্দের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। সুখের বিষয় হলো, ২ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায় এটিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার আইনি কাঠামো নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এর মাধ্যমে পূরণ হয়েছে দেশের বায়োটেকনোলজিস্টদের দীর্ঘদিনের দাবি। আশা করা যায়, প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে আমাদের নতুন স্বপ্ন।

জানা গেছে, পাটের জিন-নকশা উন্মোচনের ব্যাপারে একটি পথনির্দেশনাও তৈরি করেছেন মাকসুদ, আবেদ চৌধুরী ও অন্যরা মিলে। এর জন্য কয়েক কোটি টাকার দরকার।

প্রথম খসড়া জিন-নকশার কাজ শেষ করতে ১২ থেকে ১৮ মাস লাগবে বলে মনে করেন মাকসুদ। তিনি জানান, পাঁচ কোটি টাকা হলেই কাজটি শুরু করে দেওয়া যায়।

যেহেতু এ কাজে নেতৃত্ব দেবেন মাকসুদ, কাজেই এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন আমাদের বিজ্ঞানীরা। ‘দেশের তরুণ গবেষকদেরও আমরা এ কাজে যুক্ত করতে পারব, যার মাধ্যমে দেশে বায়োটেকনোলজি, প্ল্যান্ট-বায়োটেকনোলজির এক দক্ষ জনবলও তৈরি হবে।’

আর পাটের জিন-নকশার মাধ্যমে বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডারে আমাদের অবদানও নতুন স্বীকৃতি পাবে। পাটের জিন-নকশার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্কার করতে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সবাইকে।

অভিনন্দন

দীর্ঘ পথপরিক্রমা শেষে মাকসুদুল আলম আজ বিশ্বের জিন-নকশার অন্যতম সেরা উদ্ঘাটক হয়েছেন। তাঁর হাত ধরে বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারে যোগ হচ্ছে নতুন জ্ঞান, সমৃদ্ধির তথ্য। কিন্তু বিজ্ঞানী মাকসুদের দুঃখ যে, তাঁর সঙ্গে যুক্ত হতে পারছে না লাল-সবুজের পতাকা। এই লেখকের কাছে দুঃখ করে তিনি লিখেছেন, পাটের ব্যাপারে সম্ভবত আমরা খুব বেশিই দেরি করে ফেলেছি। থলের বিড়াল ইতিমধ্যে বের হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ পাটের মেধাস্বত্ব হয়তো চিরকালের মতো হারাবে।’

বিজ্ঞান প্রজন্ম তবু আশাবাদী। বাংলাদেশের পাটের দিনবদলের জন্য দিনবদলের সরকার কি কিছুই করবে না?

পেঁপের পর রাবারের জিন-নকশা উন্মোচনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাঙালি বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন।

[২০০৯ সালের ৮ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে আমার এই লেখাটা ছাপা হয়েছে। এই লেখা পড়েই সেই সময়কার কৃষিমন্ত্রী (এখনো আছেন) বেগম মতিয়া চৌধুরী বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমকে ফোন করেছিলেন। গতকাল (২৩ ডিসেম্বর ২০১৪) প্রথম আলোতে প্রকাশিত মাকসুদুল আলমের নিজের লেখাতেও এই প্রতিবেদনের কথা বলা হয়েছে। নিজের আর্কাইভের জন্য লেখাটি এখানে রেখে দিলাম]

One Reply to “উন্মোচিত হোক আমাদের পাটের জিন-নকশা”

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version