তোমার সন্তান না জাগলে মা সকাল হবে না তো?

Spread the love

১.

ঢাকার একটা নামকরা স্কুলে গিযেছি বিজ্ঞান মেলা দেখতে। ঘুরতে ঘৃুরতে তিন কন্যার সামনে এসে হাজির হলাম। ওদের প্রজেক্ট হলো কোকাকোলা, কফি এবং চা-এর মধ্যে কোনটা দাঁতের জন্য সবচেয়ে খারাপ সেটা বের করা।

তা তোমাদের গবেষণার ফলাফল কী? জানতে চাইলাম।

– কোলা জাতীয় পানীয় দাঁতের জন্য খুবই খারাপ।

-তাহলে, তোমরা নিশ্চয়ই কোক খাও না।

তিন কন্যা পরস্পরের দিকে তাকালো। কী জানি কথা বিনিময় হল চোখে চোখে

– আমরা স্ট্র দিয়ে কোক খাই। দাঁতে লাগে না।

২.

বছর কয়েক আগের কথা। এবার একটা কলেজে। প্রজেক্ট একটা গ্রামীণ ফ্রিজ।

কেমন ঠান্ডা হয়।
– খুব ভাল স্যার। হাত দিয়ে দেখেন?

বললাম। বাবারা ব্যাপারটাতো হাত দিয়ে দেখার না। আমি আসলে তাপমাত্রারটা জানতে চাচ্ছিলাম। তোমাদের থার্মোমিটার কই।

ওরা খুব অবাক হলো। কোন বিচারক কখনো ওদের কাছে থার্মোমিটার খোঁজে নাই। এবং পরে আমি জানলাম ওরা পুরস্কার পেয়েছে।

৩.

ওপরের দুইটা ঘটনা বলার কারণ হল, যে উদ্দেশ্য আর লক্স্য নিযে আবদুল্লাহ আল মুতী, আলী আসগর স্যাররা আমির দশকে বিজ্ঞান মেলা শুরু করেছিলেন এখন সেটা তা থেকে অনেক বিচ্যুত হয়ে গেছে। এখন অনেক বিজ্ঞান মেলাতে কেবর মেলাকে পাওয়া যায বিজ্ঞানকে আর পাওয়া যায় না। এরকম একটা পরিস্থিতিতে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান যকন আমাকে বলেন – মুনির, বিজ্ঞান মেলাটা শুরু করো তখন আমি বুঝি তিনি কেন বিচলিত। তারপরও আমরা রাস্তায় নেমে পড়েছি।

এবছর থেকে আমরা শুরু করেছি সিটি ব্যাংক-প্রথম আলো বিজ্ঞান জয়োৎসব। বিজ্ঞান কুইজ আর বিজ্ঞান প্রকল্পের লড়াই। উদ্দেশ্য হল বিজ্ঞান প্রকল্পে বিজ্ঞানকে ফিরিয়ে আনা। বিজ্ঞান মেলা যেন মডের মেলা না হয় তার জন্য কাজ করা। শুরুর দুই বর্ণনা তেকে বোঝা যাচ্ছে এই কাজটা মোটেই সহজ নয়। বিশেষ করে এখন আবার একটা নতুন উপসর্গ তৈরি হয়েছে  – প্রকল্পের নামের মধ্যে ডিজিটাল শব্দটা জুড়ে দেওয়া। বগুড়া জয়োৎসবে আমি একটা প্রকল্প পেয়ে গেরাম যেটির নাম – সমন্বিত ডিজিটাল খামার।

ডিজিটাল কেন?

– না, মানে, সবাই বলেছে নামের মধ্যে ডিজিটাল থাকরে নাকি পুরস্কার পাওয়া সহজ!!!

তো, এমন অবস্থা। বেমির ভাগ শিক্ষার্থী যারা বিজ্ঞান মেলাতে অংশ নেয় তাদের ধারণা মেলার ২/৩দিন আগে একটা কিছু বানালেই হবে। লেগে থাকার খুদে বিজ্ঞানীটি কই?

তাঁকেই আমরা খুজছি।

বিজ্ঞান নিয়ে আমাদের ৩৬০ ডিগ্রী প্ল্যানের একটি অংশ হল এই জযোৎসব। এটিকে আমরা কালক্রমে, ইনশা আল্লাহ , কেবল বিজ্ঞান প্রজেক্টের একটা ধুন্দুমার প্রতিযোগিতা এবং সক্ষমতা উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম হিসাবে তৈরি করবো। সে সময়ে চিলড্রেন সায়েন্স কংগ্রেস হবে গবেষণা নিবন্ধের জায়গঅ আর জুনিযর সায়েন্স অলিম্পিয়াড হবে পরীক্ষা পর্ব। আমরা সব কটা শুরু করে দিয়েছি। প্রতিবারই এগুরোর ফরম্যাট এদিক-ওদিক হতে থাকবে যতদিন না আমরা আমাদের সঠিক পথটি পেয়ে যাবো।

৪.

 

আজ রাত পেরোলেই শুরু হবে এবারের জাতিয় জয়োৎসব। কাল ২৭ ডিসেম্বর প্রকল্প প্রতিযোগিতা। সারাদেশের প্রায় ১০০ এর বেশি প্রকল্প কাল প্রদর্শিত হবে কেআইবির কনভেনশন হলে। দুই দফায় তাদের বিচারকার্য সম্পন্ন করবেন আমাদের একাডেমিক দলের সদস্য ও বিচারকেরা। তার পরদিন, ২৮ তারিখ হবে কুইজ এবং সবকিছুর ফলাফল জানানোর দিন।

প্রকল্প বিজয়ীদের কয়েকজনকে আমরা সহযোগিতা করবো তাদের প্রকল্প গুগল সায়েন্স ফেয়ারে জমা দেওয়ার জন্য। এই ধারা আমরা অব্যাহত রাখবো এবং ২০১৮ সালের মধ্যে জিএসএফে আমাদের অবস্থান আমরা নিশ্চিত করতে পারবো।

এদের ৮ জনকে আমরা একজন নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেব। একজন আসবেন বলেছিলেন কিন্তু কাজ পরে যাওয়াতে এখন আর পারছেন না। ২০১৬ সারে আসবেন অবশ্য।

২৭-১৮ ডিসেম্বরের প্রতিযোগিতা ভিন্ন সকল আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত। যারা আগামীতে বিজ্ঞানের জগতে প্রবেশ করতে চায় তাদের জন্য একটা একটা মোক্ষম সুযোগ।

বাবা-মা’দেরও বলবো এসে দেখেন আমাদের ছেলে-মেযেরা কত কী ভাবে, কতো কী করার পরিকল্পনা করে। আমাদের কি উচিৎ নয় তাদের উৎসাহ দেওয়া?

সকল অংশগ্রহণকারী খুদে বিজ্ঞানীর জন্য শুভ কামনা।

 

 

 

 

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version