আন্তর্জাতিক আলোক দিবসের আহবান : আমার মুক্তি আলোয় আলোয়

Spread the love

আজ ১৬ মে, আন্তর্জাতিক আলোক দিবস ২০১৮ উপলক্ষে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির (এসপিএসবি) পক্ষ হতে সবাইকে জাানাচ্ছি আলোকিত শুভেচ্ছা। অনেকেই এরই মধ্যে জেনেছেন, অনেকেই জেনে খুশি হবেন, ইউনেস্কো এবছর থেকে মে মাসের ১৬ তারিখ আন্তর্জাতিক আলোক দিবস পালন করছে। বাংলাদেশে এই দিবস উদযাপনের সমন্বয় করছে এসপিএসবি। ২০১৫ সাল আমরা পালন করেছিলাম আলোর বছর হিসেবে। সেটির সাফল্য ইউনেস্কোকে এই দিবস পালনে উৎসাহ জুগিয়েছে।

মানুষের সঙ্গে আলোর সম্পর্ক সুপ্রাচীন। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মানুষ আগুন জ্বেলে সভ্যতার যাত্রা শুরু করে। এখন আলোর হাত ধরেই পৌঁছেছে একুশ শতকের বিষ্ময়কর বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দিনে। আলোর ভূমিকা শুধু আমাদের চোখের দেখার সহায়তাতেই সীমাবদ্ধ নেই, অণুবীক্ষণযন্ত্র বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র থেকে শুরু করে বর্তমানের প্রত্যেকটা সুক্ষ্ম যন্ত্রেই কোনভাবে জড়িয়ে আছে আলো। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার মূলেই রয়েছে আলো। আজ আধুনিক প্রযুক্তির মূল হাতিয়ার, ইন্টারনেট, কম্পিউটার বা স্যাটেলাইট ব্যবস্থা, কোনটাই আলোর ব্যবহারের বাইরে নয়।

১৯৬০ সালের ১৬ মে প্রথম সফল লেজার তৈরি করা সম্গিভব হয়েছে, আর আজ তো যোগাযোগে মানুষের প্রধানতম হাতিয়ার এই লেজার আলোই।

আলোর ভূমিকা শুধু বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতেই না। শিল্প-সংস্কৃতি, শিক্ষা, টেকসই উন্নয়ন, চিকিৎসা, যোগাযোগ, এনার্জি ইত্যাদি সবটাতেই। যোগটা এমন বহুমুখীই। আলোর এই বহুমুখী ভূমিকা অনুধাবন করতেই আলোক দিবসের উদযাপন। আলো এবং আলোক প্রযুক্তির এই অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে নতুন দিনে এগিয়ে যাওয়াই এই দিবসের প্রত্যয়। ইউনেস্কোর অন্যতম উদ্দেশ্য, শিক্ষা, সমতা এবং শান্তি অর্জনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আলোর ভূমিকা পর্যালোচনা করা এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়াও এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য।

১৬ মে প্রথম আলোক দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন দেশে নানান আয়োজন করা হচ্ছে।

এসপিএসবিও নিজস্ব উদ্যোগে সারাদেশে নানান আয়োজন করেছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে আলোক বিজ্ঞান বোঝানোর জন্য আয়োজন করেছে “আলোর দ্যুতি” নামক একটি অনুষ্ঠান। এর বাইরে হচ্ছে আলো এবং আলোক প্রযুক্তি নিয়ে বক্তৃতার আয়োজন আলোর কথামালা। একইসঙ্গে আলোর সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতির নিবিড় যোগের কথা মনে রেখে আমরা করছি সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলে এমন আয়োজনও।

সবকিছু মিলিয়ে আজ ১৬ মে আমরা বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সঙ্গে যৌথভাবে করছি দিনব্যাপী উদযাপন। আলো ও আলোক প্রযুক্তির ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী, আলো বিষয়ক পোস্টার প্রদর্শন, আলোকে বোঝার জন্য হাতে-কলমের পরীক্ষা করে দেখার ব্যবস্থা, শিশুদের যুক্ত করতে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সবার জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা, আলো বিষয়ক ফটোগ্রাফির প্রতিযোগিতা, আলোর দ্যুতি ও আলোর কথামালার বিশেষ পর্বসহ সেদিন থাকবে আরও নানান আয়োজন। আমরা আশা করছি সেদিন জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী কক্ষটি আলোয় ভরে যাবে, মুখরিত হবে আলোকিত একদল মানুষের পদার্পনে। তাই আমরা এই আয়োজনের নাম দিয়েছি আলোয় ভুবন ভরা

আলো নিয়ে এই আয়োজন শুধু আমাদের নয়। আলোর ভুবনের প্রতিটি মানুষের। তাই আমরা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি ১৬ মে প্রথম আন্তর্জাতিক আলোক দিবস উদযাপনে অংশ নিতে। সেজন্য আপনি যেমন আমাদের সঙ্গে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে যে কোন সময় যুক্ত হতে পারেন, তেমনি নিজেও উদ্যোগী হতে পারেন দিবসটি উদযাপনে কোন কিছু করতে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করতে পারেন আলোর এক্সপেরিমেন্টের সেশন আলোর দ্যুতি, আলোচনা করতে পারেন আলো নিয়ে, ছোট করে আয়োজন করতে পারেন কুইজ প্রতিযোগিতা অথবা এমন কোনকিছু।

আমরা মনে করি, অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করে জেতা যায় না। অন্ধকারকে দূর করতে হলে আলো জ্বালাতে হয়। আন্তর্জাতিক আলোক দিবস উপলক্ষে আপনাদের সবার কাছে আমাদের আহবান, আসুন  অন্ধকারকে দূর করতে আমাদের চারপাশে আলো জ্বালি।

সবার জীবন আলোকিত হোক।

ধন্যবাদ।

 

 

মুনির হাসান

বাংলাদেশ ন্যাশনাল নোড, আন্তর্জাতিক আলোক দিবস ২০১৮

সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি)

 

Leave a Reply Cancel reply