এভারেস্ট চূড়ার কাছে হিলারীর পাথর, কতিপয় বিড়াল ও একটি অসাধারণ …
পাথরটি সেখান থেকে গড়িয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম নয়। বিশেষ করে ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের ফলে এটিই হতে পারে। কাজেই এটি সবার মেনে নেওয়ার কথা। বিশেষ করে মাসাডেল তো ছবিও তুলে এনেছেন।
কিন্তু গোল বাঁধে পরের দিনই। ২৩ মে গার্ডিয়ান পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে যে, হিলারি স্টেপস ওখানেই আছে। আর এবার সেটা দাবী করেছে নেপালী শেরপারা। শেরপাদের কাছে এভারেস্ট তো ডাল-ভাত। এরা জানে কী আছে কী নাই। এরাও ছবি তুলে এনে দেখাচ্ছে যে এটা আছে!!!
গ্যাড়াকলটা কঠিন। হিলারীর নামে এই পাথরটি আসলে কী সেখানে আছে না কি নাই?
তো বিড়ালটি আটকে রাখার প্রায় পরে কে জানি জানতে চাইলো আচ্ছা বিড়ালটির কী অবস্থা? বেঁচে আছে না মরে গেছে?
বলা মুশ্কিল। কারণ বন্দুক চালু হয়েছে কিনা সেটি না জেনে তো বিড়ালের অবস্থা জানা সম্ভব না। কাজে ঠিকভাবে বরলে বলতে হবে বিড়াল “জীবন্মৃত” অবস্থায় আছে। এটিউ ওর বিখ্যাত ওয়েব ফাংশন।
আমার মতো বিজ্ঞান অজানা মানুষের কাছে এর মানে হলো একটি বিড়াল একসঙ্গে জীবিত কিংবা মৃত থাকতে পারে।
প্রথম যখন আমি এই বিড়ালের কথা জানতে পারি তখন একটু অবাক হয়েছি। এখন অবশ্য আমি জানি এই বঙ্গদেশের সব মানুষই জীবন্মৃত অবস্থায় থাকতে পারে। বিড়ালতো নস্যি।
শ্রোয়েডিঞ্জার, হাইজেনবার্গ আর পালের গোদা বোরকে ডেকে আইনস্টাইন বললেন – বুঝলে বাবারা, দুনিয়াদারী বোঝার মতো জ্ঞানগম্যি তোমাদের এখনো হয়নি। দেখছো শাদাটা যে দিক পরিবর্তন করলো তা কি কালোটা টের পেয়েছে?
মাথা চুলকাতে চুলকাতে বোর দলবল নিয়ে ফেরত আসলেন বটে কিন্তু বুড়া আইনস্টাইনের কথা মানলেন না। কিন্তু দুই বিড়ালকে একই গতিতে ছুড়ে দেওয়ার মেশিন যেটা আইনস্টাইনের হাতে আছে সেটা বানাতে বানাতে প্রায় ৫০-৬০ বছর লেগে গেল। তারপর একদিন এই কাজটিই করলেন কয়েকজন বিজ্ঞানী। তারপর তারা অবাক হয়ে দেখলেন, শাদা বিড়ালকে দিকভ্রান্ত করার সঙ্গে সঙ্গে কালো বিড়াল কোন কারণ ছাড়াই দিগভ্রান্ত হচ্ছে!!! যেনই বা তারা হিন্দি-বাংলা সিনেমার সেই যমজ ভাই-বেরাদর। যাদের একজনকে মারলে আর একজন ব্যাথা পায়!!!
আমি যা বুঝলাম তা হলো লক্ষ যোজন দূরে থাকলেও যারা হরিহর-আত্মা তাদেরকে আলাদা করা অসম্ভব।
যদি জীবন্মৃত আর নিমিষে যোগাযোগ হয়ে যায় তাহলে কি এটা সম্ভব যে একই জিনিষ কারো জন্য থাকবে আর কারো জন্য থাকবে না?
নলিনী বাবুর কথা মনে আছে? ঐ যে বিএসসি মাস্টার। একাধিক সমান্তরাল পৃথিবীতে যোগাযোগ করতে পারতেন। হুমায়ুন আহমেদ স্যারের মাধ্যমে নলিনী বাবুর সঙ্গে আমার একদিন দেখা হয়। স্যারের মৃত্যুর পর থেকে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আমিও নিয়মিত ওনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। কারণ তার মাধ্যমে আমি জেনেছি অন্য একটা জগতে হুমায়ুন স্যার বাচ্চাদের জন্য একটি কোয়ান্টাম রসায়নের বই লিখছেন। আমি তক্কে তক্কে আছি লেখা শেষ হলেই নলিনী বাবুকে দিয়ে হাত বাড়িয়ে সেটি এই জগতে নিয়ে আসবো।
তো শুরু করেছিলাম হিলারী স্টেপস দিয়ে। মাসখানেক আগে যারা আমার মতো ঐ দুইটি সংবাদ পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই ব্যাপারটা নিয়ে আর ভাবেন নাই। ভাবারই বা দরকার কি। হয় ঐটা আছে না হয় নাই। তাতে তো আমাদের দুর্ভোগ কমছে না।
কিন্তু আমরা না ভাবলে ভেবেছেন শিবব্রত বর্মন। শুধু সেই পাথর নয়, ইতিহাস খুঁড়ে বের করে এনেছেন এমন আরও কিছু উদাহরণ এবং শেষমেষ পৌছে গেছেন এক চমৎকার উপসংহারে।
এবারের ঈদে এই গল্পটি আপনাকে পড়তেই হবে। সেটা কঠিন না।
ঝামেলা অন্য জায়গায় এই গল্পটির সঠিক ভার্সন পড়তে হলে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞানচিন্তা কিনতে হবে। যারা ধার নিয়ে পড়বেন তাদের গল্পটি কিন্তু যারা কিনে পড়বেন তাদের সঙ্গে মিলবে না।
কারণ গল্পটিই দ্বিখন্ডিত!!!