গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং-৮: ভাইরালিটি ইজ এ সায়েন্স, নট এ লাক
গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং-৭: লেটস গেট টেকনিক্যাল
ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিয়ারদের অনেকেই এ কথা শুনে ঝাপিয়ে পড়লে গ্রোথ হ্যাকাররা ঠান্ডা মাথায় কয়েকটা প্রশ্ন করবে – কেন লোকে তোমার এটা শেয়ার করবে? এটি শেয়ার করা কী খুবই সহজ? আর এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলাটা কি আদৌ দরকার আছে?
ভাইরাল হলো দ্রুত, মানুষে মানুষে সংক্রামিত ওয়ার্ড অব মাউথের সর্বোচ্চ প্রকাশ। এটি কিন্তু চাইলেই ঘটে না। তবে, এটি কিন্তু একটি দুর্ঘটনাও নয়।
হোলস্টি ইশতেহারের কথা ভাবা যায়। আমেরিকার নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের ছোট একটা এপারেল কোম্পানির মিশন স্টেটমেন্ট। নিজের স্বপ্ন ও প্যাশনকে অনুসরণ করার একটা মিশন স্টেটমেন্ট। উদ্যোক্তাদের তৈরি একটি ভিডিও কিছুদিনের মধ্যে মাত্র ৬ কোটি বার দেখা হয়েছে এবং না হলেও ডজনখানেক ভাষায় অনুদিত হয়েছে!!!
এর উদ্যোক্তারা এটি ভাইরাল হবে এমনটি কী ভেবেছিলেন? না ভাবেন নি। কিন্তু যেহেতু এটি অনুপ্রেরণামূলক, সুনির্দিষ্ট গ্রাহকমূখী, এবং কনসাইজ কাজে এটির ক্লিক পাওয়াটা হয়েছে সহজ। এই মিশন স্টেটমেন্টটা মনোযোগ দিয়ে পড়লে কয়েকটা বিষয় পরিস্কার হবে-
If you don’t like something, change it.
If you don’t like your job, quit.
If you don’t have enough time, stop watching TV.
If you are looking for the love of your life, stop; they will be waiting for you when you start doing things you love.
Stop over-analysing, life is simple.
All emotions are beautiful.
When you eat, appreciate every last bite.
Life is simple.
Open your heart, mind and arms to new things and people, we are united in our differences.
Ask the next person you see what their passion is and share your inspiring dream with them.
Travel often; getting lost will help you find yourself.
Some opportunities only come once, seize them.
Life is about the people you meet and the things you create with them, so go out and start creating.
Life is short, live your dream and wear your passion.”
― Holstee Manifesto, The Wedding Day
বোঝায় যাচ্ছে এটি প্রতিদিন বিভিন্ন কোম্পানি যে শত শত মিশন স্টেটমেন্ট প্রকাশ করছে তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী, শেয়ারের জন্য। কারণ ও তো তোমার-আমার কথাই বলছে।
এ থেকে বোঝা যায় শুধু বিশেষ ধরণের প্রোডাক্ট, বব্যবসা বা কন্টেন্ট ভাইরাল হয়। এর দুইটা কারণ দেখা যায়। একটা হলো এটা শেয়ার করাটা সহজ এবং এটি মানুষকে প্রলুব্ধ করে এটি ছড়িয়ে দিতে। “আমি জানলাম, আমার বন্ধুরাও জানুক”।
গ্রোথ হ্যাকার হিসাবে তুমি যদি এই কাজটা করতে না পারো তাহলে কিন্তু আর কিছু হবে না।
ভাইরালিটির মূল ব্যপারটা কী? মূল ব্যাপার হলো কোন একজনকে তার সামাজিক সম্পদ (এখানে শেয়ার করা, সুপারিশ করা) ব্যবহারে অনুপ্রাণিত করা কোন টাকা পয়সার বিনিময় ছাড়া। তুমি একজনকে বলছো তোমার কথা অন্যকে বলার জন্য, তোমার ভিডিওটি তার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। তোমার গ্রাহকদের বলছো এটি ব্যবহার করার জন্য। এই সবই তো আসলে তোমাকে ফেবার করা? তাই না। তা সেটা তারা কেন করবে?
মানুষ যখনই কোন কিছু শেয়ার করতে যায় তখনই দেখে এটার পেছনে কে বা কী আছে। কোন কোম্পানির কিছু হলে তখন ভাবে – আমি এটা শেয়ার দিলে তো সেই কোম্পানির লাভ। তখন কিন্তু সে আর শেয়ার দেয় না। কিন্তু একটা মানবিক ভিডিও, একটি সাহাসিকতার গল্প কিংবা কোন উদ্ভাবন শেয়ার দেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু এটি কার এটি মাথায় আসে না যে ওটা কার পেজ থেকে এসেছে। তারমানে হলো কোন প্রোডাক্টের কিছু ভাইরাল করতে হলে সেটির পেছনের মানুষ বা প্রতিষ্ঠানকে গৌণ করে ফেলতে হবে। সবাই শেয়ার করার সময় কখনই ভাববে না তারা তোমাকে ফেবার করছে, বরং তারা নিজেরাই এটি শেয়ার করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠবে। হোলস্টি ইশতেহার – চাকরি ভাল লাগছে না, ছেড়ে দাও!!! কতো শক্তিশালী বাক্য।
গ্রোথ হ্যাকারদের জন্য এটি কেন জরুরুী? কারণ টাকার অভাবে তুমি এমন কিছু করতে পারছো না যে সম্ভাব্য সবার কাছে তুমি পৌছুতে পারছো। তুমি প্রথম আলোতে মলাট বিজ্ঞাপন দিতে পারঝোনা, তুমি পাঁচ তারা হোটেলে কোন লঞ্চিং সিরোমনি করতে পারছো না, তোমার পিআর স্ট্রেন্থ কম – তারমানেই তোমার দরকার সবাইরে তোমার আর্মি বানানো।
একজন গ্রোথ হ্যাকার তার কন্টেন্ট ভাইরাল হবে, এই আশায় বসে থাকতে পারে না। হোলস্টির মতো এটা ভাইরাল হবে সে আশায় থাকলে তার হবে না। তোমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে সেটা “শেয়ার না করলে জীবন ব্যর্থ হয়ে যায়”।
সহজ ও সোজাসজি উদাহরণ হলো গ্রুপন ও লিভিং স্যোসাল – এই দুইটি সফল ডিলসাইট (আজকের ডিলের মতো)। এই সাইটের প্রত্যক ডিলের সঙ্গে একটা অতিরিক্ত ডিল থাকে। দেড়যুগ আগে লঞ্চিং সময় নিশ্চয়ই এখানকার চেয়ে অনেক বেশি প্রণোদিত ছিল। গ্রুপনে ছিল একটা রেফারেল সিস্টেম (আমাদের দেশে উবার শুরুতে এটা করেছে)। বন্ধুকে রেফার করো, বন্ধুর প্রথম কেনাকাটাতে তুমি ১০ ডলা্র ছাড় পাবা! লিভিং সোশ্যালএ ছিল – ফ্রি তে কিনতে চাও? তাহলে প্রথমে নিজে কিনো। তারপর তিন বন্ধুকে একটা স্পেশাল লিংক পাঠাও। যদি তারা তিনজনই কেনে তাহলে তোমারটা ফ্রি। ডিলটা কতো টাকার তাতে কিছু যায় আসে না। তোমাকে আমরা ফ্রি দেবোই।
এটি কিন্তু আসলে ট্রাডিশনাল “বাই থ্রি, গেট ওয়ান ফ্রি”-এর হ্যাক ভার্সন। তাইনা?
শিক্ষাটা কি?
না খালি শেয়ারিং-এ উৎসাহিত করা হচ্ছে না, বরং একটা ইনসেনটিভও দেওয়া হচ্ছে। তাতে হচ্ছে কী সবাই মনে করছে এই কাজটা করে সে করছে নিজের জন্য, তোমার জন্য নয়!
রায়ানের নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে ডিস্ট্রোকিড নিয়ে। এটি মূলত সংগীতকারদের স্পোটিফাই, আইটিউন ও আমাজনে নিজেদের লিস্টিং করার একটা সাইট। তোমার রেফারেলের পাচজন যদি সাইন আপ করে তাহলে তোমাকে ফ্রি মেম্বারশীপ দেওয়া হবে!
হাহাহা। বাঙ্গালিরেতো চেনেন না/ নিজেই পাঁচটা ফেইক একাউন্ট বানায়া এই কাজ করে ফেলবে। না, এই চিন্তা থেকে তারা সেটা বন্ধ করে নাই। অন্য একটা কাজ করেছে যার অনুপ্রেরণা পেয়েছে এক পুলিশের কাজ থেকে। ঐ পুলিশ একদিন এক গ্রোসারিতে একজন মহিলাকে আটক করে যে ঐ দোকান থেকে গ্রোসারি চুরি করছে। তাকে থানায় না দিয়ে ঐ পুলিশ তার জন্য একটা বৃত্তির ব্যবস্থা করে যার মাধ্যমে লোকে তাকে সবজি কিনে দেয়।
ডিস্ট্রোকিডও সেরকম করলো – যদি তারা এই ফেইক একাউন্টটগুলো ধরতে পারে তাহলে তারা তোমাকে দুইটা অপশন দিবে – একটা হলো জরিমানা দাও অথবা তোমাকে ফ্রি মেম্বারশীপ দেওয়া? তুমি যেটা নিতে চাও।এর মধ্যে কিন্ত একটা বড়ো পিআর এলিমেন্টও আছে।
তারমানে গ্রোথ হ্যাকিং কিন্ত “লাইক আজ অন ফেসবুক” থেকে অনেক অনেক ভিন্ন, ১৮০ ডিগ্রী।
গ্রুপন, লিভিঙ স্যোসাল ও ডিস্ট্রোকিড কিন্তু প্রত্যেক ইউজারকে মার্কেটিয়ারে পরিণত করছে সঙ্গে সঙ্গে নতুনদেরও এই দলে যোগ দিতে আগ্রহী করছে।
এখানেই গ্রোথ হ্যাকারের স্বার্থকতা।
পরের পর্ব – পাবলিক-ইটি
One Reply to “গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং-৮: ভাইরালিটি ইজ এ সায়েন্স, নট এ লাক”