গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং-শেষ পর্ব: স্কেলিং রিটেনশন এন্ড অপটিমাইজেশন
গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং-১২: অলওয়েজ বি টুইকিং
এই উদাহরণের অর্থ কিন্তু এই নয় যে, সবাইকে সব সময় কাস্টোমারের জন্য ওয়ান-টু-ওয়ান ফোন করতে হবে। রায়ান আরও একটি উদাহলন দিয়েছেন। সেটি তার উবারের অভিজ্ঞতা। ২০১১ বা ২০১২ সালেই রায়ান উবারে নিবন্ধন করেন কিন্তু কখনো ব্যবহার করেননি। এর কয়েকবছর পরে, তিনি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়ে আবিস্কার করেন আয়োজকরা সবাইকে ৫০ টাকার উবার রাইড দিয়েছে উপহার হিসাবে। একদিন ক্যাব না পেয়ে তিনি প্রথমবারের মতো এপটি ব্যবহার করেন। একটি াল গাড়ি তাকে গন্তব্যে পৌছে দেন। তিনি অবাক হয়ে দেখলেন গাড়ি থেকে নামার পরও উবার তাকে এনগেজ করে রেখেছে। প্রথমে চেয়েছে তিনি যেন ড্রাইভারকে রেটিং দেন। পরে তার কাছে ই-মেইলে একটা কুপনও পাঠিয়েছে।
এর কিছুদিন পরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরৎ যান এবং একদিন ব্রুকলিনে ক্যাবের জন্য দাড়িয়ে থাকার সময় তার মনে হয়েছে, “উবার ডাকি না কেন?”। এভাবে উবার তার মতো একজন হারিয়ে যাওয়া গ্রাহককে একজন সক্রিয় ব্যবহারকারীতে পরিণত করেছে।
এই অভিজ্ঞতা এবার আমার ব্রাজিলে গিয়ে হয়েছে। যেখানেই যাওয়ার কথা ভেবেচি, সঙ্গে সঙ্গে মনে হয়েছে উবার তো আছে। আর মজার ব্যাপার হলো সেখানে উবার ড্রাইভারদের অনেকেই ইংরেজি জানে না এবং তাতে কোন সমস্যা হয় না!
যাকগে এ হলো রিটেনশন আর অপটিমাইজেশন। এটি হলো এমন একজনকে কাস্টোমারে পরিণত করা যাকে কাস্টোমার বানানোটা সহজ, একজন আগন্তুককে কাস্টোমার বানানোর চেয়ে!
বাংলাদেশে যারা আমরা উবারের মার্কেটিং লক্ষ করেছি, আমরা দেখেছি তাদের নতুন কাস্টোমার ধরার ব্যাপারে আগ্রহ খুবই কম। এখন পর্যন্ত প্রথম আলোতে উবারের কোন মলাট বিজ্ঞাপন দেখেছেন?
অথচ এখন প্রতিদিন কতো লোক উবার ব্যবহার করে? সংখ্যাটা বিশালই।
এই কাজটা কিন্তু মার্কেটিয়ার হিসাবে তোমার আওতার বাইরে নয়। যারা তোমার পণ্য সেবাতে আগ্রহী তাদের ই-মেইল, ফোন নম্বর সবই তো তোমার কাছে আছে। এগুলো নিয়েই তোমাকে আগাতে হবে। এমন কি তোমার কাছে আছে কাস্টোমার ডেটাবেসও। তাদের কাছে পন্য ও সেবা পৌছে দাও
বেইন এন্ড কোম্পানির হিসাবে ৫% কাস্টোমারকে ফিরিয়ে আনতে পারলে ৩০% মুনাফা বৃদ্ধি হতে পারে। আর মার্কেট বিশ্লেষনের হিসাবে একজন বিদ্যমান গ্রাহকের কাছে পুনরায় বিক্রি করতে পারার সম্ভাবনা হলো ৬০-৭০ ভাগ যেখানে নতুন লোকের কাছে গছাতে পারার চান্স হলো মাত্র ৫-২০%। এজন্য গ্রোথ হ্যাকার টিভির ব্রনসন টেইলরের কথা হলো, “রিটেনশন ট্রায়াম্প একুইজিশন’।
গ্রোথ হ্যাকিং হলো আরওআই-এর ম্যাক্সিমাইজেশন। মানে হলো নিজেদের শ্রম ও টাকা এমন জায়গাতে খরচ করা যেখান থেকে ফলাফল পাওয়া যাবে। এমন ফিচার যোগ করো যাতে এখনকার কাস্টোমারদের থেকে তুমি বেশি কিছু পাও, সঙ্গে সঙ্গে পটেনশিয়া কাস্টোমারদের একটিভ কাস্টোমারে পরিণত করে। কাস্টোমারকে তোমার সেবা বা পন্য সম্পর্কে শিক্ষিত বানাও যেমনটা ফেসবু বা আমাজন করে। এতে তাদের আরও ব্যক্তিগত বিষয় বের করে আনো যা তাদেরকে তোমার সঙ্গে আরও বেশি এনগেজ করবে। আর এই ফাঁকে নতুনদের পেছনে দৌড়াও।
এই কথাগুলো মোটিএ কোন নতুন কথা নয়। গ্রোথ হ্যাকিং-এর অনেক আগে থেকেই এ কথা গুরো আমরা জানি। কারণ এটাই তো মানুষের অভিজ্ঞতা।
কে না জানে বনের দুইট পাখির চেয়ে হাতের একটি পাখি অনেক সম্পদশালী।
[রায়ান হলিডে’র গ্রোথ হ্যাকার মার্কেটিং আমার পড়া সবচেয়ে ছোট বই। এই বইটা পড়ার সময় আমি আবিস্কার করি আমার পড়ো পড়ো পড়ো বই লেখা ও বিপননের সময় যে পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করেছি সেগুলোর অপর নাম গ্রোথ হ্যাকিং। আমি সেজন্য বুঝলাম কেন আমার আত্মজীবনীর প্রথম খন্ড মাত্র ২ হাজারের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে এবং এখনো নিয়মিত বিক্রি হয়। বইটা পড়ার সময় ঠিক করেছিলাম মূল অংশটা আমার পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করবো। তের পর্বে সেটা শেষ হলো।
প্রায় তিনমাস ধরে আমার সঙ্গে এই যাত্রায় থাকার জন্য আমার সকল পাঠককে আন্তরিক ধন্যবাদ। অবরিগাদো। ধন্যবাদ। ]