ইমোশনাল মার্কেটিং- ২ : লাইক এ গার্ল
ইমোশনাল মার্কেটিং-১: হালাল সাবানের মাজেজা
পরে জেনেছি ‘মেয়েদের মতো’ এই শব্দযুগল কেবল এ দেশে নয়, অন্য অনেক দেশেও খুব একটা ভাল শব্দবন্ধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। “লাইক এ গার্ল” আসলে মেয়েদের জন্য অপমানজনক একটি শব্দ। ফলে, অনেক মেয়েও “লাইক এ গার্ল” হতে চাইতো না। কারণ মনে করা হয় এতে তাকে পচানো হচ্ছে। আর ঠিক এ কথাটা মাথায় রেখে অলওয়েজ ব্র্যান্ড ২০১৪ সালে তাদের #LikeAGirl ক্যাম্পেইনের পরিকল্পনা করে।
২০১৪ সালে তাদের এই ক্যাম্পেইন এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের মত বা লাইক এ গার্ল এ কথাটার মানে পাল্টে দেওয়া। একজন লোক “মেয়ের মতো” এটি আসলে মেয়েদেরকে অপমান করা কারণ এতে ধরে নেওয়া হয় যে, মেয়েরা অনেক কাজই পারে না। এ কারণে অনেক মেয়েও লাইক এ গার্ল কথাটা সহজে নিতে পারে না। ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য ছিল এটা শুনলে একটা মেয়ে যেন বিরক্ত নাহয়ে গর্ব বোধ করতে পারে সে ব্যাপারটিকে সামনে আনা।
আমাদের দেশের মতো সারা পৃথিবীতে এখন বেশিরভাগ ক্রেতাই কিন্তু “ওয়েল ইনফর্মড”। বলতে গেলে তারা বিজ্ঞাপনেই ডুবে থাকে। রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, স্যোসাল মিডিয়া- সবটাতেই তাদের আকৃষ্ট করার নানান আয়োজন। তার ওপর পত্রিকা ম্যাগাজিনতো আছেই। আমাদের প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকাতো এখন আলাদা কাভারই ছাপিয়ে দেয় বিজ্ঞাপনের। ফেসবুক সারাক্ষণই বিজ্ঞাপন দেখায়। শুধু কি বিজ্ঞাপন। এখন সার্চ ইঞ্জিন সবার হাতের মুঠোয়। বিশ্বের অর্ধেক লোকই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কেউ কিছু জানতে চাইলে আগে গুগল করে। ফলে, তথ্যে সে থাকে ভারাক্রান্ত। এই যে এত বিজ্ঞাপন, এতো যে বিপণনের চেষ্টা এই সময়ের ভিতর দিয়ে কীভাবে একটি কোম্পানি দাঁড়িয়ে থাকবে, কিভাবে এই মার্কেটিং ওয়ার্ল্ডে তার কতৃর্ত্ব প্রতিষ্ঠা করবে?
কাজেই সেখানে সব নিত্য-নতুন বিষয় আমাদের ভাবতে হবে।সহজ বুদ্ধি হলো একটা মেজর কম্পোনেন্ট হিসাবে আবেগটাকে ব্যবহার করা। কারণ মানুষ অনেকখানি আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইমোশনাল মার্কেটিং এ আমাদের দেশের সবচেয়ে সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্ভবত হালাল সাবান। এ্যারোমেটিক এর হালাল সাবানের বিজ্ঞাপনটিকে নিয়ে আমরা বিস্তারিত কেস স্টাডি দেখব। কিন্তু তারও আগে আসলে আমাদের জেনে নেয়া উচিত ইমোশনাল মার্কেটিং কী?
ইমোশনাল মার্কেটিং হল এমন একটা মার্কেটিং এবং এডাভার্টাইজিং যেটা আসলে মানুষের ইমোশনকে কাজে লাগায়। উদ্দিষ্ট জনগোষ্টীর চোখে পড়া, মনে রাখার ব্যবস্থা করা, শেয়ারে উদ্বুদ্ধ করা এবং সবশেষ তার থেকে গাঁটের টাকা খসিয়ে পণ্য বা সেবা গছিয়ে দেওয়ার বুদ্ধি। একটি সাধারণ প্রথা হলো একবারে একটির বেশি আবেগকে ব্যবহার না করা। মানে সুখ, দু:খ, রাগ কিংবা ভয়ের যেকেন একটাকে একবারে কাজ লাগানো।
ইমোশনাল মার্কেটিং কেন ইফেক্টিভ এবং সেটাকে কিভাবে তোমার মার্কেটিং প্লান এর সঙ্গে যুক্ত করব সেটাই হবে আমাদের বকর বকরের উদ্দেশ্য।
তবে সবকিছুর আগে আমাদের আসলে আবেগের ব্যাপারটা বোঝা দরকার।
পরের পর্ব – ইমোশনাল মার্কেটিং-৩ : আবেগের আমি , আবেগের তুমি, আবেগ দিয়ে যায় চেনা
2 Replies to “ইমোশনাল মার্কেটিং- ২ : লাইক এ গার্ল”
Leave a Reply Cancel reply
You must be logged in to post a comment.
ইউনিলিভার এর হিজাব ফ্রেশ সম্প্রতি বাজারে এসেছে আবেগকে পুঁজি করে, আপনার প্রবন্ধটি পরে বিষয়টি মেলাতে পারলাম , মানে একটা জিনিস আছে সেটাকে একটা নাম দিয়ে বোঝার ব্যাপারটা হয়েছে, ধন্যবাদ স্যার .