এলন মাস্কের পড়ো পড়ো পড়ো

Spread the love

গত রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নাসার লঞ্চ প্যাড থেকে ফ্যালকন-৯ নামের একটি রকেট সাফল্যের সঙ্গে মহাকাশে গিয়েছে। এরকম আজকাল হর হামেশায় যায়। তবে, এটি বিশেষভাবে ঐতিহাসিক কেননা এটির মালিক স্পেস-এক্স। মানে এলন মাস্কের। স্পেসএক্স এবং টেসলা দিয়ে এলন আমাদের ভবিষ্যতের একটা রূপরেখা গড়তে যান। মহাকাশে কেবল সরকারি লোক নয়, যার খুশী সে যেতে পারবে এমন একটা স্বপ্ন নিয়েই তিনি কাজ করছেন। রবিবারের ঘটনা তার পথে এক ধাপ।

এমন স্বপ্নবাজ লোক এলন কেমন করে হলেন?

আমি তো জানি না। তবে, তিনি নিজে বলেন – আমি পড়ি। যখনই সুযোগ পায় তখনই পড়ি।

এলনের বয়স যখন নয় তখন তিনি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা সম্পূর্ণ পড়ে ফেলেছিলেন। (এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার কথা আমি প্রথম জানতে পারি যখন কলেজে পড়ি, আর নিজ চক্ষে দেখেছি মনে হয় তারও পরে)। সে সময় তিনি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী পড়তেন দিনে গড়ে ১০ ঘন্টা!!!

সম্প্রতি সিএনবিসি তাঁর জীবন পাল্টে দেওয়া আটটি বই-এর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যদিও এলন এমন তালিকাতে নিজেও বিশ্বাস করেন না কারণ তিনি বলতে গেলে ‘বই খান’। তারপরও এই তালিকাটা সবাই দেখতে পারেন, বিশেষ করে যারা উদ্যোক্তা হতে চান। তা সে বাণিজ্যিক বা সামাজিক উদ্যোগ যাই হোক।

১। “Structures: Or Why Things Don’t Fall Down” by J.E. Gordon

মাস্ক যখন ঠিক করেন তিনি রকেট বানাবেন তখন তিনি প্রকৌশল ও জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানের অনেক পাঠ্যবই পড়েছেন। এই বইটি তাদের জন্য যারা ঐ দুই বিষয়ের একেবারে গভীরে যেতে চান না কিন্তু ব্যাপারটা বুঝতে চান। যারা কিছু ‘বানাতে’ চান তাদের জন্য এই বইটা খুবই ভাল।

  1. “Benjamin Franklin: An American Life” by Walter Isaacson

বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিনকে মনে হয় আমরা ভালভাবে চিনি। তার ঝড়বৃষ্টির সময় ঘুড়ি ওড়ানোর কথা আমরা পাঠ্যবই-এ পড়েছি। সম্ভবত সে ঘটনা এখনও কোন না কোন বইতে পড়ানো হয়। লেক, উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী ও কূটনীতিক বেঞ্জামিন মাস্কের অন্যতম নায়ক। “তুমি চাইলেই বুঝতে পারবা কেন তিনি একজন উদ্যোক্তা” বলছেন মাস্ক, “ তিনি প্রায় শূণ্য থেকেই সবকিছু করেছেন”।

3. “Einstein: His Life and Universe” by Walter Isaacson

মাস্কের মতো লোকেরা মহামতি আইনস্টাইনের জীবনী পড়ে অনুপ্রাণিত হবে এটাতে কোন ভুল থাকার কথা না। সুপারভাইজর নামক উৎপাত ছাড়াই যে দুনিয়াকে পাল্টে দেওয়া যায় সেটা আইনস্টাইন দেখিয়ে গেছেন। যদিও ছোটবেলায় সে অর্থে মেধাবী ছিলেন না। ইনস্টাইনের কিছু বিখ্যাত উক্তি যেমন “The important thing is not to stop questioning,” বা “Anyone who has never made a mistake has never tried anything new,”  এর প্রকাশ দেখা যায় মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানির ভিশন আর মিশন স্টেটমেন্টে।

4. “Superintelligence: Paths, Dangers, Strategies” by Nick Bostrom

এটা মনে হয় জটিল একটা বই। আমার কোন ধারণা নেই। তবে, এর সঙ্গে যোগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। সেই সঙ্গে এথিকসেরও।

 

 

  1. “Merchants of Doubt” by Erik M. Conway and Naomi Oreskes

সন্দেহের ব্যাপারটা তো মাস্কের মাথার মধ্যে। এই সন্দেহ থেকে আসলে যাবতীয়  প্রশ্নের উদ্ভব। আর প্রশ্ন করতে শেখাটাই আসল। এ কারণে আমাদের গণিত উৎসবে আমরা একটা প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখি।

  1. “Lord of the Flies” by William Golding

এই ক্লাসিকের নায়কদের সঙ্গে মাস্ক খুব সহজে একাত্ম বোধ করেন। সম্ভবত তার মতো স্বপ্নবাজ সবাই। এটির সিনেমাও দেখা যায়। তবে বই পড়াটা ভাল এবং সেটা সিনেমা দেখার আগেই করাটা ভাল।

 

 

  1. “Zero to One: Notes on Startups, or How to Build the Future” by Peter Thiel

পেপালের সহ উদ্যোক্তার এই বইটি গত বছর সম্ভবত নন-ফিকশনে সামনের দিকে ছিল। এ নিয়ে এখানে একটা রেখা পাওয়া যাবে। এই বইতে পিটার বলেছেন নতুন মার্ক কখনো আর একটা ফেসবুক বানাবে না যেমন বিল তৈরি করবে না কোন অপারেটিং সিস্টেম। মাসএর মতে এই বই পড়লে আসলে বোঝা যায় একটি সুপার সাকসেসফুল কোম্পানির সাফল্যের ভিত্তি।

  1. The “Foundation” trilogy by Isaac Asimov

আসিমভ আর রোবট হলো দুজনে দুজনার। আর যিনি এসব নিয়ে কাজ করবেন তার পছন্দের তালিকায় তো এটা থাকবেই।

 

এই জগতে যারাই কোন না কোনভাবে সফল হয়েছেন, অন্যকে পথ দেখিয়েছেন তারা সবাই পড়েন। সে আমাদের জামিলুর রেজা স্যার হোন বা বিল গেটস

দূর থেকেও যদি আমরা তাদের দিকে তাকাতে চাই তাহলে আমাদের একটা কাজই আছে

 

পড়ো পড়ো পড়ো

Exit mobile version