গুগল ডেভফেস্ট
সোহাগ, শামীম আহসান আর মেহেদীর কারণে আলোচনার একটা অংশ উদ্যোগ সংক্রান্ত ছিল। তবে, পাশাপাশি কোডিং, প্রফেশনাল এপ্রোচ এবং স্বপ্ন আর স্বপ্নপূরণের কথা। ভেঞ্চার বিনিয়োগকারীরা কী খুঁজে সেটাও আলাপ হয়েছে এক ফাঁকে।
শামীম আহসান শুরুতে একটা কথা খুব সহজ করে বলেছে। যদিও কথাটা খুবই কঠিন। কথাটা হল সেই সফল হতে পারে যে বিশ্বাস করে যে সে সফল হতে পারবে। বিশ্বাসই শুরু। বাকী কাজ কিন্তু বিশ্বাসের ওপর দাড়ায়। যে কী না বিশ্বাস করে – সে পারবে না – আসলেই সে পারবে না।
সোহাগ এই কথাটা জোর দিয়ে বলেছে। সঙ্গে কিছু জরুরী বই পত্রের কথা বলেছে। যার একটা হল ডেলিভারী হ্যাপিনেজ। এই বই-এর কিছু অংশ আমার ব্লগে পাওয়া যাবে। (মোট ১৩ পর্ব লিখেছিলাম)
তার নিজের গল্প বলতে গিয়ে সোহাগ মনে করিয়ে দিয়েছে লোকে এখন তার সাফল্যগুলোই দেখে। কিন্তু তাঁর ব্যর্থতার কথা আলাপ করে না। উদ্ভাসের শুরুর পর সাড় পাঁচ বছর পর চার উদ্যোক্তার দুইজনই কেটে পড়ে। তারপরও মাটি কামড়ে পরে থেকেছে।
সোহাগ আর একটা কথা জোর দিয়ে বলেছে। সেটা হল। পরিবর্তন আসলে তারাই করতে পারে যারা সমাজ যা চায় সেটাতেও ভাল করে। তার এন্টারপ্রিনিয়র জীবনের শুরুতে ফ্যামিলি থেকে অনেক বাঁধা এসেছে। কিন্তু বাবা-মা যখন দেখেছে ছেলের বুয়েটের রেজাল্ট ঠিক আছে তখন তারা আপত্তি করেনি। মেহেদীও এই কথা বলেছে। আর এই আলোচনাটা এসেছে একজন অংশগ্রহণকারী যখন বলে যে – নতুন কিছু করতে চাইলে বাবা-মা পছন্দ করে না। তখন প্যানেল এই কথাটাই বলেছে প্রথমে বাবা-মা যা চায় তার কাছাকাছি বিষয় আয়ত্বে রাখতে হবে। আমি বলেছি স্কুলে পড়ার সময় আমি পাড়ায় যথেষ্ট উৎপাত করতাম। এর গাছের পেয়ারা, এর গাছের কলার কান্দি এসব আস্ত নিয়ে আসতাম। কিন্তু পাড়ার বিচারে সব সময় বেচে যেতাম স্কুলের রেজাল্টের জন্য!
খায়রুল বাশার মনে করিয়ে দিয়েচে ইন্টারনেট এক নতুন জগৎ খুলে দিয়েছে। এটি যারা লেভারেজ করতে পারবে তারাই এগিয়ে যাবে। কারণ ইন্টারনেট আমাদের জন্ম নেওয়ার লটারিতে হেরে যাওয়ার ব্যাপারটাকে নালিফাই করে দিতে পারে। কাজে এই ব্যাপারটা ভালমতই ভাবতে হবে, আয়ত্ব করতে হবে। নিজের সক্ষমতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।
দেশে ফিরে আসার অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে নোভা জানালো যথন তার দেশের একটি ছেলে বা একটি মেয়ে, যে কী না তার শিক্ষার্থী ভাল করে তখনই সে দেশে ফিরে আসার অনুপ্রেরণা প্রবলভাবে ফিরে পায়। নোভার কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিতে মেয়েদের নিয়ে আসা। আলাপ করেছে কোথাও কোথাও মেয়েরা ক্লাশরুমে ভাল করলেও কেন কর্মক্ষেত্রে আসে না এবং কেন তারা নিরাপদ কর্মক্ষেত্র যেমন শিক্ষকতা বা বিদেশ উচ্চশিক্ষাকে বেছে নিচ্ছে। নিজের পর্যবেক্ষণের কথা জানায় সে – বেশিরভাগ বড় কোম্পানি মেয়েদেরকে চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিতে চায় না। ফলে তারা তাদের দক্ষতা বা যোগ্যতা প্রকাশ করতে পারে না। এটা নিয়ে আমাদের অনেক খাটেত হবে। আমাদের #মিসিংডটার কার্যক্রম আর কী।
শেষের দিকে একজন শিক্ষার্থী, যে কী না এখন ৪.০ সিজিপিএ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তার একটা অদ্ভুত প্রশ্ন দিয়ে করে। তার প্রশ্ন ছিল – যদি সে সিজিপিএ থেকে অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরায় তাহলে তার সিজিপিএ কমে যাবে, তাতে সে ওয়েভার পাবে না।
আমরা সবাই তাকে যে কথাটা বলেছি সেটি চমৎকার করে সামারী করেছে খায়রুল বাশার – তোমার মনের মধ্যে যা আছে, তোমার হৃদয় যা করতে বলে তুমি সেটাই করবে। তুমি যদি সব নৌকাতে পা দিতে চাও কিংবা যদি ভাবো এটাও করবে, ওটাও করবে তাহলে তোমার কিছু হবে না। স্ব্ন পূরণ করতে হলে স্বপ্নের একটা জ্বলুনি শক্তি আছে সেটাকে কাজ লাগাতে হবে। হিসাব নিকাশ করে কিন্তু স্বপ্ন পুরণ হবে না।
আসরেই তোমার স্বপ্ন যেন তোমাকে পথে নামায়, তুমি যেন পেছন ফেরার পথগুলো পুড়িযে দিতে পারো, তাহরেই তোমার সাফল্য অনিবার্য।
তোমার আর তোমার স্বপ্নের জয় হোক।