শখ থেকে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি
খালিপায়ের বিলিওনিয়ার শিক্ষক!!!
টেকুইলা ড্রিংকসের কথা প্রথম পড়েছি মনে হয় সেবা প্রকাশনীর কোন বই-এ। ঠিক মনে নেই। কোনোকালে মেক্সিকো যাওয়া হয়নি ফলে সেটা টেস্ট করাও হয়নি। কোনোকালে সেটা আর করাও যাবে না। মেক্সিকো প্রসঙ্গ সামনে এসেছে কারণ দিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের যাদুকরের মৃত্যু। ১৯৮৬ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে আমি কাধে একটা বড় পোটলা বেঁধে বুয়েটে পড়তে আসি। আসার সময়ই প্রথম একটা প্র্ন বাসার লোকজন করেছে সেটা হলো বিশ্বকাপ দেখাব কেমনে রাতের বেলায়। যাইহোক সে অন্য গল্প। কিনতু ম্যারাডোনার মৃত্যুতে মনে পড়েছে মেক্সিকো ৮৬ এর কথা। আর কী আশ্চর্য এখন জানলাম প্রতিবছর ২৪ জুলাই মেক্সিকানরা জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করে টেকুইলার জন্য। একটা পুরোদিন মানে ২৪ ঘন্টা, ১৪৪০ মিনিট বা ৮৬,৪০০ সেকেন্ডের পুরো একটা দিন টেকুইলার জন্য নিবেদিত! আচ্ছা আমাদের কেন আম কাঠাল দিবস নেই?
কাজে আমেরিকানদের একটা বড় অংশ কামে-অকামে যখন মেক্সিকোতে যায় তখনই তারা টেকুইলার স্বাদ নেয়। দুই দুইবার অস্কার বিজয়ী অভিনেতা জর্জ ক্লুনিও এর ব্যতিক্রম নন। তিনি এবং তাঁর বন্ধু রেন্ডে গার্বার মেক্সিকোর কাবো স্যান লুকাস নামে এক জায়গায় পাশাপাশি ভ্যাকেশন হাউস বানালেন। দুই পরিবার সেখানে মেলা সময় থাকতে শুরু করেন। আর টেকুইলা। তো, জর্জের একদিন মনে হলো নিজেদের জন্য কেন তারা টেকুইলা ‘কাস্টম মেউড’ করে নেন না। সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গার্বার বলেছেন,“কয়েকমাসে নানা ধরণের টেকুইলার স্বাদ নেওয়ার পর জর্জ একদিন আমাকে বললো – চলো আমরা নিজেদের টেকুইলা বানাই। তো আমরা আমাদের আর এক বন্ধু, মিচেল মেল্ডম্যানকে সঙ্গে নিলাম”।
ওরা তিনজনই যথেষ্ট সম্পদশালী। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেব অনুসারে জর্জ ক্লুনি হলেন ২০১৭-২০১৮ সালের হায়েস্ট পেইড অভিনেতা। ঐ বছরে অভিনয় করে উনি পেয়েছেন মাত্র ২৩৯ মিলিয়ন ডলার। বন্ধুত্বের জন্য ক্লুনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারেন। ২০১৩ সালে গ্র্যাভিটি সিনেমা থেকে পাওয়া ১৪ মিলিয়ন ডলার তিনি তার ১৪ জন বন্ধুর প্রত্যেককে ১ মিলিয়ন করে নগদ উপহার দেন। রেন্ডে গার্বারের আছে চালু নাইটক্লাব। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি এই ব্যবসাতে আছেন। আর মেল্ডম্যানকে বলা যায় রিয়্যাল এস্টেট মোগল। শুধু দামী দামী প্রজেক্ট করেন।
কাজে তারা তিনজনই এটি কেবল নিজেদের পানের জন্যই করবেন, এ আর আশ্চর্য কী। তারা খু্ঁজে বের করলেন মেক্সিকোর জালিসকো’তে একটি ডিস্টিলার। ডিস্টিলারটি রাজী হলো “স্যাম্পল সরবরাহে”। গার্বার বলছেন – এমন টেকুইলা আমরা খুঁজছি যা গলা দিয়ে জ্বলতে জ্বলতে নামবে না। সারাদিন আর রাতভর খাওয়া যাবে কিন্তু সকালে হ্যাংওভার হবে না”।
পরের দুই বছর তারা ঐ ডিস্টিলার থেকে এতো এতো টেকুইলা আনালেন যে, শেষ পর্যন্ত তারা ফোন করতে বাধ্য হলো। “ভাইগণ, এতো হাজার বোতন টেকুইলা আপনার কী করেন? যদি আমাদের থেকে নিয়ে তোমরা বিক্রি করো তাহলে তোমাদের লাইসেন্স লাগবে আর যদি নিজেরাও খাও তাহলেও লাইসেন্স লাগবে”।
কী আর করা। “আমরা আমাদের টেকুইলা খাওয়া অব্যাহত রাখতে চেয়েছি।”
কাজে একটি প্রাইভেট লেবেলিং টেকুইলা কোম্পানি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে ক্যাসামিগোজ ২০১৩ সালে।
২০১৭ সালে বহুজাতিক এলকোহল কোম্পানি দিয়োগো এটা কিনে নেয় এক বিলিয়ন ডলারে!