আমার বইমেলা ২০১৯-৭ : বইমেলার কনিষ্ঠতম লেখক ও শিল্পী

Spread the love

আমার বইমেলা ২০১৯-৬: সবার জন্য উবুন্টু – আবারও শুরু হোক

আমার একটা বিরাট সৌভাগ্য হলো আমার বন্ধুরা। এরা প্রত্যকে আমাকে ভালবাসে। এই যেমন ড. শাহাদত খান। শাহাদতের র সঙ্গে আমার পরিচয় ও বন্ধুত্ব বুয়েটে আসার পর। আমরা দুজনই বুয়েটের ইলেকট্রিক্যালে পড়তাম। ও টিচার ফাইটার আর আমি ব্যাক বেঞ্চার, উড়াধুরা টাইপ। কাজে খাতিরটা ব্যাপক ছিল না। কিন্তু প্রচুর সময় আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি। শাহাদত বুয়েটে টিচার হলো, পিএইচডি করতে চলে গেল তারপর কানাডাতে সেটেল হল এবং একসময় আইবল নামে একটা প্রতিষ্ঠানের সিটিও হলো। কিন্তু, বেচারার মনের মধ্যে বাঙলাদেশটা থেকেই গেল। কাজে আইবরের শাখা হরো বাংলাদেশে এবং আমাদের ইঞ্জিনিয়ার্সরা সেখানে কাজে সুযোগ পেল।এতে অবশ্য তার ভন ভরলো না। সে এসে পড়লো দেশে! এবং গড়ে তুললো শিওরক্যাশ নামে একটি মোবাইল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। দেশে আসার পর আমাদের বন্ধুত্ব আবার পোক্ত হয়েছে। ওর বউ আর মেয়েও কানাডার সুখশান্তি ছেড়ে জ্যামের শহরে এসে পড়লো। শাহাদতের মেয়ে মিহিকার সঙ্গে তাই আমার ভালই জানাশোনা। মিহিকা আর বিদুষী সমবয়সী। মিহিকার জন্ম ২০০৯ সালে, কানাডার ভ্যানকুভার শহরে। তার বছরের কিছু সময় কানাডা আর কিছু সময় বাংলাদেশে কাটে। ঢাকায় কানাডিয়ান ট্রিলিনিয়াম স্কুলে আর ভ্যানকুভারে ব্র্যান্টফোর্ড এলিমেন্টারি স্কুলে পড়ছে। মিহিকার শখ বই পড়া, ছবি আঁকা, লেখালেখি, পিয়ানো আর প্রোগ্রামিং।

তো, ক’দিন আগে শাহাদত আমাকে ফোন করে জানালো – “তোর ভাইঝি তো একটা কাজ করে ফেলছে। বই লিখে ফেলছে এবং বই-এর জন্য ছবিও একে ফেলছে?”
আমি বললাম – বলিস কী। তাড়াতাড়ি পাণ্ডুলিপি পাঠা। ওর বই আমি প্রকাM করবো।
শাহাদত বললো- ধুর ব্যাটা। বাপ থাকতে চাচারা কেন এ কাজ করবে। তরফদার প্রকাশনী ওর বই প্রকাশ করছে এবং আজ-কালের মধ্যে সেটা প্রকাশও হবে।
তারপর দিন কতক এর মধ্যে আমি বইটার কপি হাতে পেয়ে গেলাম। বইটির নাম গানওয়ালা ও লিওনার্ডো

গত শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারি শিশু প্রহরে বইমেলার মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে বই-এর মোড়কও উন্মোচিত হলো। মোড়ক উন্মোচনে আমি যেতে পারিনি কারণ সেদিন ঢাকার গণিত উৎসব আর আইপে ফাল্গুনি উদ্যোক্তা হাট ছিল। মোড়ক উন্মোচন করলেন  চিত্রশিল্পী ও লেখক সৈয়দ লুৎফুল হক, জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী এবং শাহাদত আর আমার শিক্ষক ডঃ ইনামুল হক।

তো, বইটা আমি সঙ্গে সঙ্গেই পড়েছি। ৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে এমন চমৎকার করে লিখতে পারে এবং সেই সঙ্গে সেগুলোর ছবিও আঁকতে পারে সেটা না জানলে বিশ্বাসই হতো না।
চারটি পাখি ও চারটি কচ্ছপের বন্ধুত্ব ও মান অভিমানের উপর ভিত্তি করে এই গল্পের বই গানওয়ালা ও লিওনার্ডো । মিহিকার চারটি পাখি। নাম হলো – গানওয়ালা, শান্ত, ক্যামেলিয়া আর মৌটুসি। আর আছে চারটি কচ্ছপ “টিন এজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টেলস” থেকে মিহিকা ওদের নাম রেখেছে নিওনার্ডো, ডনাটেলো, রাফায়েল ও মাইক্যাল এনজেলো। এরা সবাই আঁকিয়ে। গানওয়ালা লিওর পিঠে চড়ে সারা বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। এই চার+চারকে নিয়ে মিহিকার এই দুর্দান্ত বইটি। কাহিনী বোঝানোর জন্য ছবিও আছে। সেগুলো আবার মিহিকা নিজেই এঁকেছে। আমি গল্পের বাকীটুকু লিখছি না কারণ তাতে পড়ার মজাটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বই প্রকাশে মিহিকা নিজেই খুব খুশি, “এটা আমার লেখা প্রথম বই। আমি প্রথমে গল্পটা লিখলাম এবং পরে ছবিগুলো আঁকলাম। যখন নতুন ছাপানো বইটা হাতে পেলাম তখন খুবই ভালো লাগলো”।

লেখা ও ভিতরের ছবি ছাড়াও মিহিকা এর প্রছ্ছদও এঁকেছে। চার রঙে ঝকঝকে ছাপা।

গানওয়ালা ও লিওনার্ডো

মিহিকা খান
তরফদার প্রকাশনী
মূল্য ১০০ টাকা

(বইমেলার স্টল নং ১৯৬)

One Reply to “আমার বইমেলা ২০১৯-৭ : বইমেলার কনিষ্ঠতম লেখক ও শিল্পী”

Leave a Reply