বিশ্ব লিঙ্গ বৈষম্য রিপোর্ট ও আমাদের মেয়েরা
আমি বলেছিলাম – আমি ২৭ হাজার ডিজিটাল মা দেখছি। ঔটাই আমার লাভ।
যাকগে, বলছিলাম বিশ্ব লিঙ্গ বৈষম্য রিপোর্টের কথা। আগের বছরের তুলনায় আমাদের অগ্রগতি ৭ ধাপ। গত বছর ছিলাম ৭৫, এবছরে উঠে এসেছি ৬৮তে।
এই সূচকের উদ্দেশ্য কয়েকটা। প্রথমটা অবশ্য হল সচেতনতা সৃষ্টি। আর এর পরেই হল জাতিতে-জাতিতে তুলনা। যে জায়গাগুলোতে আমরা পিছিয়ে আছি সেগুলোতে কেমন করে আগাতে হবে এবং কেন আগাতে হবে সেটা চিহ্নিত করার সুযোগ।
বিশ্বের ৩৫টি দেশ স্বাস্থ্য সেবায় নারী-পুরুষের বৈষম্য শূণ্যে নামিয়ে এনেছে। এর পর হচ্ছে শিক্ষা। ২৫টি দেশে এটি নাই। কিন্তু এখনো অর্থণীতিতে অংশগ্রহণ ও সুযোগের বেলায় এটি এখনো ৬০% এবং গত ৯ বছরে মাত্র ৪% গ্যাপ কমেছে। বরাবরের মত আইসল্যান্ড তালিকার শীর্ষেই রয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্য হল নিকারাগুয়া। ওরা আছে শীর্ষ দশে!
যারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে ভাবে তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষনে এই প্রতিবেদন থাকা দরকার। এটি পাওয়া যাবে এখানে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, আগামী তিন বছরে উচ্চমাধ্যমিক ও সাত বছরে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও নারী-পুরুষের অংশগ্রহণ সমান করা হবে। তিনি বলেন, মানুষের সচেতনতা ও উপবৃত্তিসহ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগের ফলে নারীশিক্ষায় এই অগ্রগতি হয়েছে। এর ফলে এখন ওপরের শ্রেণিগুলোতেও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে।
ভারতের মানুষ দ্বিগুণের বেশি আয় করলেও স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর বাংলাদেশের মানুষ গড়ে তাদের তুলনায় তিন বছর বেশি বেঁচে থাকে। তবে ভারতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে মেয়েরা। ভারতের মেয়েদের তুলনায় বাংলাদেশের মেয়েদের শিক্ষার হার ৬ শতাংশ পয়েন্ট বেশি, নারীপ্রতি জন্মহারও দশমিক ৩ শতাংশ পয়েন্ট কম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গড় আয়ুষ্কাল ছিল মাত্র ৩৯ বছর, একই সময়ে ভারতের ছিল ৫০ বছর। আর এখন বাংলাদেশের মানুষ গড়ে বেঁচে থাকে ৬৯ বছর, ভারতে ৬৬ বছর। ১৯৭১ সালে প্রতি এক হাজারে ১৫০টি শিশুর মৃত্যু হতো, আর ভারতে ১১৪ জন। আর এখন বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুর হার ৩৭ জন, ভারতে ৪৪ জন। পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ছিল হাজারে ২২৫ জন, ভারতে ১৬৬ জন। এখন বাংলাদেশে সেই সংখ্যা অনেক কমে হয়েছে ৪৬ জন, ভারতে ৬৫ জন।
এবং এখানেও নারীর বিষয়টা প্রবলভাবে এসেছে। আমাদের দেশের অগ্রগতির একটি বড় কারণ কিন্তু নারীদের অগ্রযাত্রা।
আমরা অনেকেই ব্যাপারটা ঠিকমত খেয়াল করি না। কিন্তু যদি করতাম তাহলে সেটা আমাদের আরো এগিয়ে নিত।
বাংলাদেশের সব নারীর জন্য আমার সালাম।