আঠারোর ১৮-৪ : ৩ : পাঠাও – বর্ষসেরা উদ্যোগ

Spread the love

আঠারোর ১৮-৩ : ৪-৬
আঠারোর ১৮-২ : ৭-১২
আঠারোর ১৮-১: ১৩-১৮

৩. পাঠাও

২০১৮ সালে আমি পাঠাও এপ আবার ডাউনলোড করি। কোন কারণ ছাড়াই হয়তো। কিন্তু, যেদিন রুবাইকে নিয়ে পরীক্ষা হলে পৌছাতে পারছিলাম না সেদিন ব্যবহার করি। আমি আর রুবাই ৮.৩০ এর দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যখন গুলশান শ্যুটিং ক্লাবে পৌছাই ততোক্ষণে প্রায় পৌণে ১০টা বাজে। কাজে ভরসা পাঠাও। আমি আর রুবাই দুজনই সেটাতে উঠতে পারি নাই। উঠতে গিয়ে আমি পরেও যাই। কিন্তু, বাইকার ঠিক মতো রুবাইকে পৌছে দেয়, পরীক্ষার আগেই। তারপর আমাকে ফোন করে জানায় – আংকেল, ওনাকে পরিক্ষার হলে পৌছে দিছি!
এবছর নানা কারণে পাঠাও সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। তবে, আমার হিসাবে পাঠাও হলো ২০১৮ এর বর্ষসেরা স্টার্টআপ।

২০১৫ সালে কুরিয়ার সার্ভিস হিসাবে পাঠাও-এর আত্মপ্রকাশ হলেও এটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোটর সাইকেলে রাইড শেয়ারিং শুরু করে। ৫টি মোটর বাইক আর ৩০ জনকে নিয়ে শুরু পাঠাও। এখন তাদের কর্মী সংখ্যা ৫০০।

তারপর সিরিজ-এ বিনিয়োগ যোগাড় করে তাদের এক্সটেনশন শুরু হয়। এ বছর তারা সিরিজ-বি বিনিয়োগ যোগাড় করেছে। কতো করেছে সেটা অবশ্য বলে না, কিন্তু টেকক্রাঞ্চ লিখেছে সেটি ১০ মিলিয়ন ডলার। আর তা থেকে হিসাব করে বলা যাচ্ছে পাঠাও আমাদের প্রথম ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ! 
পাঠাও এবছর জানুয়ারিতে ফুড ডেলিভারি চালু করেছে। গত বছর শুরু করেছে পাঠাও কার। তবে সব ছাপিয়ে তাদের বাইক শেয়ারিং এখন ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ও সিলেটেও সম্প্রসারিত হয়েছে। টেকক্রাঞ্চের সঙ্গে সে সাক্ষাৎকারে পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহী হোসাইন ইলিয়াস অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশের সঙ্গে পাঠাও-এর মার্কেটের ভিন্নতার কথা বলেছেন। সে সময় তিনি বলেছেন তারা বাইকারদের বাইক কেনার ক্ষেত্রেও সাপোর্ট করতে পারেন কিনা সেটা ভাববেন। সে রিপোর্টে দেশের ২৫টি শহরে পাঠাও-এর সার্ভিস সম্প্রসারণে তাঁর স্বপ্নের কথা বলেছেন ইলিয়াস।

পাঠাওএর প্রধান নির্বাহী হোসাইন ইলিয়াস

পাঠাও-এর এপ ডেটা প্রাইভেসি লংঘন করেছে বলে একটা অভিযোগেরও জবাব দিতে হয়েছে এ ভচর পাঠাও-কে। তবে, সেটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত তেমন কোন বিপদ হয়নি, না পাঠাও-এর, না তার ব্যবহারকারীদের।
পাঠাও নিয়ে নতুন একটা অভিযোগও এ বছর সামনে এসেছে সেটা হলো বাইকারদের ব্যাপারে ভালমতো খোঁজ খবর না নেওয়া। বিশেষ করে, গ্রামাঞ্চলে জমির আইলে মোটর সাইকেল চালানো অনেক বাইকার ঢাকায় পাঠাও-এর বাইক চালানোর জন্য এসে পড়েছে বলে বলা হয়। তবে, এ নিয়ে কোন পরিসংখ্যান আমার চোখে পড়ে নাই।
এ মুহুর্তে পাঠাও-এর কতো বাইকার আছে সেটার পরিসংখ্যান আমি যোগার করতে পারিনি (পারলে এড করে দিব)। তবে, আমা্র হিসাবে সারা দেশে কম করে হলেও এক লক্ষ ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে, আমাদের নিজস্ব বাইক শেয়ারিং এপ পাঠাও।

আমার হিসাবে পাঠাও তাই ২০১৮ এর বর্ষসেরা উদ্যোগ।

পাঠাও, পাঠাও-এর প্রতিষ্ঠাতা ও তাদের কর্মীবাহিনী ও বাইকারদের জন্য ভালবাসা ও শুভেচ্ছা।