আঠারোর ১৮-২ : ১২ থেকে ৭
২০১৮ সালে তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে গ্রোথ হ্যাক করার ধারণাটি গেড়ে বসেছে বলে আমার মনে হয়েছে। আমাদের দেশের নবীন উদ্যোক্তাদের মার্কেটিং-এর জন্য তেমন কোন টেকা-টুকা থাকে না। তখন তারা ফেসবুকে প্রায় সবার পোস্টের নিচে স্প্যামিং করতে শুরু করে। কিন্তু, সেটা তো আর মার্কেটিং নয়। তাহলে তাদের জন্য কম টাকার মার্কেটিং-এর ধারণা কোথায়?
আগস্ট মাসে এক টুইটের জন্য ২ কোটি ডলার জরিমানা গুনেছেন এলন মাস্ক!!! টেসলার চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এলন মাস্ক আগস্ট মাসে একটা টুইট করেন, সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দামী টুইট। ৭ আগস্ট তিনি টুইট করেন, ““Am considering taking Tesla private at $420. Funding secured. (৪২০ ডলারে টেসলাকে প্রাইভেট করার কথা বিবেচনা করছি। বিনিয়োগ নিশ্চিত)।”
এই টুইটের ফলে শেয়ার বাজারে টেসলার শেয়ারের দরের ব্যাপক উঠানামা হয়েছে এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ তাঁকে ২ কোটি ডলার ফাইন করেছে। এলন মাস্ক তার টুইটের জন্য জরিমানা দেবেন মাত্র ১৭০ কোটি টাকা (২ কোটি ডলার)! শুধু তাই নয় আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে টেসলার চেয়ারম্যানের পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করবেন। এবং আগামী তিন বছর আর টেসলার চেয়ারম্যান হতে পারবেন না! অন্যদিকে টেসলাও সমপরিমাণ টাকা জরিমানা দেবে কেননা তারা তাদের প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যানকে ঠিক-ঠাক মতো “গার্ড” দিতে পারে নাই।
টেসলার চেয়ারম্যানের এই টুইটের ফলাফল আমাদের ভার্চুয়াল জগৎ নিয়ে আরও ভিন্নভাবে ভাবতে বাধ্য করবে মনে হয়।
বিশ্বজুড়ে কেয়ার গিভার ইকোনমির বড় বিকাশ হচ্ছে। আমাদের দেশেও কিন্তু এর বড় বাজার রয়েছে। ঝামেলা হচ্ছে এখনও এই দেশে ফিজিওথেরাপিকে উদ্যোগ হিসেবে নিতে আগ্রহীদের সংখ্যা কম। তারা বরং হরেদরে একটা চেম্বার খুলে রোগী দেখাতেই আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ কারণে ব্যতিক্রমী ড. উম্মে শায়লা রুমকি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। উম্মে শায়লা নিজেকে চেম্বারে আটকে রাখেননি। বরং এই বিষয়টিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন সম্ভাব্য সব খানে। রেডিও, টিভি ও অনলাইনে তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল। সবটাতেই নিজের বিষয়ে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। আগ বাড়িয়ে সকল বিসয়ে কথা বলেননি।
উদ্যোক্তা হিসাবে তিনি দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন আমেরিকান সরকারের।এবছর তিনি নারী উদ্যোক্তা হিসাবে ইন্টার ন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশীপ প্রোগ্রামে মনোনিত হয়ে তিন সপ্তাহ আমেরিকার চারটি প্রদেশে বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি, এনজিও ও নারী সংগঠনের সাথে বৈঠক করেন এবং উদ্যোগ ও নারীদের নানা প্রতিকূলতা নিয়ে মতবিনিময় করেন। এবছরে তিনি আমেরিকান সিটি ব্যাংক আয়োজিত তরুণ উদ্যোক্তা এওয়ার্ড পেয়েছেন।
প্রথম আলো দেশের তরুণদের নিয়ে একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। সেখানে আমরা কতকগুলো ডেটা দেখে চমকে যাই। যেমন ৭৩% তরুণ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, ৬৩% জানেই না সে কী হবে? ইকনোমিক্স পত্রিকার হিসাবে বিএ-এমএ পাস ৪৭% চাকরি পায় না। বিবিএস বলছে পৌণে ৫ কোটি লোক দেশে কাজ করে না। অথচ ভারত-চীন-শ্রীলঙ্কার লোকেরা বছরে ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে!!!
তারপর আমরা বের হই দেশ ঘুরতে। তার আগড়ে ৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় সূচনা পর্ব। বছর শেষ ১৬টি আঞ্চলিক জয়োৎসব, ১০টি ক্যারিয়ার কর্মশালা, ২টি তারুণ্যের বৈঠক করে আমরা মোটামুটি বুঝতে পারি আগামী দিনগুলোতে আমাদের কী করতে হবে। সেটি নিয়ে কাজ হবে ২০১৯ সালে।
যথারীতি এই জয়োৎসবের শুরুতে আমি একটা ইশতেহার লিখি। যেখানে এই আয়োজন কেন এবং তরুণদের জন্য আমাদের কী কী করতে হবে তার একটা ধারণা লিখি। সেটিকে বিকশিত করে একটা বুকলেটে রূপ দেই।
এই আয়োজনে দেশে তরুণদের নিয়ে কাজ করে এমন সব ব্যক্তিত্বদের একত্র করা সম্ভব হয়েছে। মুলত ক্যারিয়ার অন্বেষনে তরুণদের সহায়তা করার জন্য এই আয়োজন।
২০১৮ এর আয়োজনে সমাপ্তি হবে ফেব্রুয়ারি মাসে।
২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল ফেসবুক গ্রুপ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে “চাকরি খুঁজব না, চাকরি দেব” নামের প্ল্যাটফর্ম। ধীরে ধীরে এই গ্রুপটি বিকশিত হয় এবং এই শ্লোগানটি গ্রহণ করেন অনেকেই। চাকরি না খুঁজে চাকরি দেওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করতে উৎসাহ দেওয়া এ গ্রুপের কাজ। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের এই প্ল্যাটফর্মটি এবছরের ৭-৮ ডিসেম্বর ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে আয়োজন করে “আইপিডিসি উদ্যকো্তা সামিট”। মাত্র দুই সপ্তাহের নোটিশে ১১টি সেশন, ৪টি কর্মশালা সমেত একটি উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান বের করার জন্য ২০১১ সাল থেকে জাতীয় অভীক্ষা হচ্ছে। ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এসেসমেন্ট নামের এই সমীক্ষার ফলাফল ভয়াবহ। দেখা গেছে তৃতীয় শ্রেণী বা পঞ্চম শ্রেণী শেষে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই গণিতে তাদের কাঙ্খিত শিখন ফল অর্জন করতে পারে না। ২০১৫ সালে তৃতীয় শ্রেণী উত্তীর্ণ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গাণিতিক দক্ষতা অর্জন করতে পারে নাই এমন সংখ্যা হলো ৫৯%। ৫ম শ্রেণীতে এটি ৯০%!!! মানে আমাদের জিপিএ পাঁচ পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ৯০ ভাগই সাধারণ যোগ-বিয়োগ করতে পারে না।
এবছরই ঢাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ১৫ এর সঙ্গে ৬ যোগ করতে বলায় ৩২ জনের মধ্যে মাত্র ৯ জন সেটা পেরেছে!!!
এরকম একটি অবস্থা যখন তখন দেখা যাচ্ছে আমাদেরই একদল হাইস্কুলের ছেলেমেয়ে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে নিয়মিত পদক পাচ্ছে। ২০১৮ সালে সোনার পদকও পেয়ে গেছে।
আর গণিত অলিম্পিয়াডে আমরা এমন কোন আন্তর্জাতিক পদ্ধতি অবলম্বন করি না। আমরা যা করি সেটি আমাদের হোমগ্রোন পদ্ধতি।
প্রায় এক বছর ধরে সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ আলোচনার পর ২০১৮ সালের মে মাসে সরকার আমাদেরকে একটি পাইলট প্রজেক্ট করার অনুমতি দিয়েছে। এ প্রকল্পটি কাজ শুরু করেছে। ১৭ জেলার ৮০টি স্কুলে আমরা গণিত অলিম্পিয়াডের পদ্ধতি অনুসরণ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের গণিতের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করবো। এ কার্যক্রম যদি সফল হয় তাহলে আমাদের পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া হবে সারা দেশে।
সেখানে আমরা কেমন ক্লাস চাই তার একটা নমুনা এই ভিডিওতে দেখা যাবে।
3 Replies to “আঠারোর ১৮-২ : ১২ থেকে ৭”
Leave a Reply Cancel reply
You must be logged in to post a comment.
can u please help me how can i get math olympiad idea for all the topic such as place value, addition, subtraction, multiplication, division, specially word problems.