আঠারোর ১৮-১ : ১৮ থেকে ১৩
নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখে রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্টে বাক্যর একটা ওয়ার্কশপ ছিল। সেখানেই প্রথমে আমি গানটা শুনি। বাক্যর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন তার স্মার্ট ফোনে গানটি শোনায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এটি নির্মিত হয়েছে। এর দিন-দুয়েক আগে তৌহিদ সেটা আপ করেছে ইউটিউবে। একবার শুনেছি। ভাল মতো খেয়াল করি নাই। শুধু বিটটা খেয়াল করেছি। তাতে ভেবেছি এটি লোকে শুনবে। তবে, এতো যে শুনবে কিংবা একেবারেই ২০১৮ সালের সর্বোচ্চ ভাইরাল হবে সেটা ভাবি নাই! অথচ নির্বাচন দোরগোড়ায় আসতে আসতে এই গানটি হয়ে গেছে নির্বাচনের থিম সং!!!
ইউটিউবে কতোবার ডাউন লোড হয়েছে, ফেসবুকে কতো শেয়ার হয়েছে এটি আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় নয় আমার কাছে। আমি টের পেয়েছি এ গান এখন সারাদেশে সব বয়সীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। সি নিউজ নামে একটি পত্রিকা লিখেছে এটি নিয়ে নাকি ফ্ল্যাশমবও হয়েছে। তবে, আমি দেখেছি ছোট ছেলে-মেয়েরাও গানটির সঙ্গে নাচানাচি করছে। অনেক ট্রলও দেখেছি। অন্য অনেক নাচের মধ্যে এই গান বসিয়ে দিয়েছে এমনটাও দেখেছি। যে যেভাবেই নিক না কেন, এই গানটা আমারও মাথার মধ্যে ঢুকে গেছে। এ লেখা লিখতে লিখতে আমিও গানটা শুনছি।
https://www.youtube.com/watch?v=HhMoIN6sw6g
জনপ্রিয় এই গানটির গীতিকার ও প্রযোজক বাক্যর মহাসচিব ও ফিফোটেক এর সিইও তৌহিদ হোসেন । গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন যৌথভাবে সরোয়ার ও জিএম আশরাফ এবং সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন ডিজে তনু ও এলএমজি বিটস। সম্পাদনা ও কালার সমন্বয়ে ছিলেন হৃদয় হোসেন।
কোনো দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ম-কানুন ও তার বাস্তবায়ন কতটুকু সহজ বা কঠিন তার ওপর বিশ্বব্যাংক একটি সূচক প্রকাশ করে। এবার নিয়ে ১৫ বার এটি প্রকাশ হয়েছে।এই সূচকটি অনেককিছু প্রকাশ করে। বিশেষ করে সামনের দিনে দেশী বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে কি না সেটার অনেকখানি এ থেকে বোঝা যায়। ২০১৮এর সূচকে বাংলাদেশ ২০১৭-এর তুলনায় এক ধাপ উন্নতি করেছে। তবে কোনো কোনো মানদণ্ডে বিশেষ করে ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। মূলত বিদ্যুৎ সংযোগের মানদণ্ডে উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ এগিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১৭৬তম। ১০০ স্কোরকে সর্বোত্তম ধরে এবার বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক ৯৭, যা আগের বছরে ছিল ৪১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গুণগত মান বিবেচনায় কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ মোটামুটি একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। আফগানিস্তান ১৬ ধাপ উন্নতি করে ১৬৭তম অবস্থানে গিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে গেছে।
১০টি নির্দেশক বা মানদণ্ডের মধ্যে ৬টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ব্যবসা শুরু করা, নির্মাণ কাজের অনুমোদন, ঋণপ্রাপ্তি, ক্ষুদ্র শেয়ারধারী বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, দেউলিয়াত্ব ঠেকানো ও সীমান্ত বাণিজ্য। অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ, সম্পত্তি নিবন্ধন ও কর প্রদান মানদণ্ডে উন্নতি হয়েছে। ব্যবসায়িক চুক্তি কার্যকর বিষয়ে একই অবস্থান আছে।
আমাদের দেশের তরুণদের একটি অংশ এখন উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছুক। আমি নিজেও এরকম একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত। এই সূচকে দেখলে আমরা দেখবো বড় উদ্যোক্তাদের জন্য কাজ হলেও উদ্যোগের শুরুটা খুবই ভয়ানক। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। এ দেশে এখনো ওয়েবসাইট, ই-মেইল মার্কেটিং, এমনকী সিম্পলি একটা কন্টেন্ট কোম্পানি করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করার সময় অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র দেখাতে হয়। বলা বাহুল্য এগুলোর ৯০ ভাগই জাল। যে ব্যবসা করতে বর্গফুট জায়গা লাগে না, একটা ল্যাপটপ থাকলেই করা যায়, সেটির অনুমতির জন্য বর্গফুট জায়গা লাগে।
সরকারের একটি পরিকল্পনা হলো আগামী ৫ বছরে এই সূচকে ১০০-এর মধ্যে যাওয়া। সেটি কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। নতুন সরকার যদি ব্যবসা ও উদ্যোক্তা বান্ধব হিসাবে গড়ে উঠে তাহলে এটা সম্ভব বলেই আমার ধারণা।
আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার গ্রহণযোগ্যতা খুবই কম। টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল এডুকেশন নিয়ে সেরকম কোন আগ্রহ উদ্দীপনা আমি দেখি না। অথচ এটা খুব দরকার। আমাদের দেশের বিএ-এমএ পাস করা শিক্ষিতের ৪৭% বেকার থাকে। ওতো ওতো মাস্টারডিগ্রীধারীদের কর্মসৃজনও কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। অথচ দেশেও এখন কারিগরি যোগ্যতার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। তো, দেশে দেশে কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়ন, দক্ষতার পরিমাপক এবং আন্তর্জাতিক দক্ষতা কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ- এগুলো করার একটি কার্যকরী প্রতিষ্ঠানের দরকার হয়। দেশের উন্নয়ন এবং জনশক্তির মান নির্ধারণের জন্য নীতিমালা, আইন ইত্যাদি থাকা দরকার। ২০১১ সালেই সরকার জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে এবং একটি সচিবালয় গঠন করে নীতিমালা বাস্তবায়নে সহয়তা করার জন্য। তখন থেকে এটি নিয়ে অনেক কাজকর্ম হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে, যতই কাজ এগিয়েছে ততই বোঝা গেছে একটি কর্তৃপক্ষ করতে পারলে ভাল হয়। ২০১৮ সালে এই কাজটা হয়েছে । এখন এটি জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড স্কিল কাউন্সিলেও তৎপরতা বাড়িয়েছে। তবে, এই সেক্টর নিয়ে আমার নিজেরও জানাশোনা খুবই কম। এখনও গ্রাম দেশে ভোকেশনালে পড়তে চায় না। কারণ এতে সবাইকে বৃত্তি দেওয়া হয়। লোকের ধারণা এই পড়ালেখাটা খারাপ, না হলে পড়ার জন্য টাকা দিবে কেন?
আশা করছি ২০১৯ সালে এই অথরিটি একটিভ হবে এবং স্কিল নিয়ে অনেক কাজ হবে। আমার নিজেরও এ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।
‘দিস ইজ মাই ডিজিটাল লাইফ’ নামে একটি এপের মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি লোকের ডেটা ফেসবুক থেকে ব্রিটিশ সংস্থা ‘কেমব্রিজ এনালিটিকা’ পেয়েছে বলে জানা গেছে এ বছর। আর এই ডেটা দিয়েই আমেরিকার নির্বাচনে জিততে পেরেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প – এমনটাও বলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ডেটা চলে যাওয়ার ব্যাপারটা কতোটা বিপদজনক হয়ে উঠছে সেটা এই আলোচনাতে আবারও সামনে এসেছে। এ বিষয় নিয়ে ফেসবুককে ইউরোপ, আমেরিকায় আইন প্রণয়নকারীদের সামনে উপস্থিত হয়ে সাফাই দিতে হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে এলন মাস্কের লাল রঙের স্পোর্টসকারটি নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায় ফ্যালকন হেভী, এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড়ো নভোতরী। ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এই বিশাল মহাকাশযানটি কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই উড্ডয়নে সক্ষম হয়। স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহীর ধারণা তাদের যাত্রা আর একধাপ আগালো। ফ্যালকন হেভী নিয়ে গেছে মাস্কের পুরাতন চেরী লাল রঙের টেসলা স্পোর্টস কারটি। স্পেসস্যুট পড়া একটি ম্যানিকুইনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ওর চালকের আসনে। আর রেডিওতে বাজতে থাকবে ডেভিড বউলের স্পেস অডিটি! এটিকে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মুহুর্তে এটি ঘন্টায় ১৯,৬৪০ মাইল বেগে সূর্যের দিকে ছুটে চলেছে।
ঠিক এই মূহুর্তে এ গাড়িটি কোথায় আছে সেটি জানারও একটি বুদ্ধি বের করে ফেলেছে মানুষেরা। এ নিয়ে বিস্তারিত একটি লেখা আমি আগে লিখেছি।
আমি এ লেখার মুহুর্তে, (২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০.১৭ মিনিট, বাংলাদেশ সময়) এটি পৃথিবী থেকে ২১৪,৫৮৪,৫১০ মাইল দূরে রয়েছে। সেকেন্ড ৮.৭৮ কিমি বেগে ছুটে চলেছে।
আগস্ট মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট ২০১৮) বিশ্বর প্রথম পাবলিক কোম্পানি হিসাবে এপলের বাজার মূল্য প্রথমবারের মতো ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ১৯৭৬ সালে দুই স্টিভ, স্টিভ জবস আর স্টিভ ওজনিয়াক এবং রোনাল্ড ওয়াইনের গ্যারাজের কোম্পানিটি হয় বিশ্বের প্রথম “মেনে নেওয়া” প্রথম কোম্পানি যা এই বিরণ অর্জনের অধিকারী হলো। সেদিন এপলের শেয়ারের দাম বেড়ে প্রতিটি হয় ২০৭.০৫ ডলার। এর আগে ১৯০১ সালে ইউএস স্টিল কোম্পানি প্রথমবারের মতো ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। স্টিভ জবসের হাতে এপলের উত্থানের পর টিম কুকের হাতে এপলেল শেয়ারর দাম চারগুন বেড়েছে। ট্রিলিয়ন ডলার হচ্ছে যুক্তরাজ্যের মোট অর্থনীতির তিনভাগের একভাগ এবং তুরস্ক ও সুইজার।যান্ডের মিলিত অর্থনীতির সমান।
One Reply to “আঠারোর ১৮-১ : ১৮ থেকে ১৩”