নতুন বই : সাত ১৩ আরও ১২
২০০৪ সালে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সে আমার প্রথম যাওয়া। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও)-এর ৪৪ তম আসর। গিয়েছি বাংলাদেশের সদস্যপদের আবেদন নিয়ে। আরও অনেক দেশের লিডার ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে প্রথম দেখা। আমার কাজ হলো পুরো প্রসেসটা দেখা আর বিভিন্ন দেশ কীভাবে নিজেদের দল প্রস্তুত করে সেটা জানা। এক দুইদিনের মধ্যে বেশ কিছু দলনেতার সঙ্গে সখ্যতা হয়ে গেল। আর শুরু থেকেই বিভিন্ন দেশ তাদের দেশের জাতীয় পর্বের প্রশ্ন ছাড়াও বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার বুকলেট উপহার দিল। দলনেতাদের সঙ্গে আলোচনা, তাদের সমস্যার বুকলেটগুলো দেখা এসব নিয়েই আমার প্রথম বছর কেটে গেল।
দেশে ফিরে আমরা যখন নিজেদের কৌশল সাজাতে গেলাম তখন দেখলাম তাড়াহুড়া করলে লাভ হবে না। বছরওয়ারি মাইলস্টোন ঠিক করে আগাতে হবে। আমাদের গণিত উৎসবের দুটো উদ্দেশ্যই আমরা সামনে রাখলাম। এর মধ্যে প্রথমটা হলো সারাদেশের স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের গণিতের দক্ষতার উন্নয়ন। আর দ্বিতীয়টি হলো আইএমও-তে পদক পাওয়া। আমাদের অভিভাবক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা স্যার আমাদের লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছেন – ২০১০ সালের মধ্যে প্রথম পদক। আয়ারল্যান্ড দলের গণিতবিদ গর্ডন লাসকি আমাকে বলেছেন, “তোমার বিপুল জনগোষ্ঠীই তোমার শক্তি। যতো বেশি এলাকাতে ছড়াতে পারবে ততোই ভাল করবে”। আমরা কেমনে সারাদেশে ছড়াবো?
একটা সহজ বুদ্ধি হলো গণিত নিয়ে বই লেখা ও সেটা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া। সেই থেকে প্রয়াত গৌরাঙ্গ দেব স্যার, জাফর ইকবাল স্যার, কায়কোবাদ স্যারের পাশাপাশি নতুন একদল গণিত লেখক বাংলাতে গণিতের বই লেখায় মন দেয়। আর প্রথম আলো’র ‘গণিত ইশকুল’ প্রতি সপ্তাহে লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়েদের কাছে পৌঁছে যায়। আমরাও আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকি।
আর এর মধ্যে ২০০৯ সালে দুইটি ব্রোঞ্জ পদক দিয়ে আমাদের আইএমও সাফল্য শুরু হয়। ২০১৮ সালে আমরা জয় করি আমাদের প্রথম সোনার পদক। এই পদকের গুরুত্ব আমরা অনেকেই টের পাই না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর শতাধিক দেশে অংশ নিয়েছে এমন কোন প্রতিযোগিতা থেকে এটি এখন পর্যন্ত আমাদের জেতা একমাত্র সোনার পদক।
আইএমও থেকে দেশের জন্য প্রথম কোন স্বর্ণপদক
২০১৮ সালে সোনার পদক জয়ের পর আমরা গণিত অলিম্পিয়াডের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করেছি। এটি হলো আইএমও মানের অসংখ্য খুদে গণিতবিদ তৈরি করা। প্ল্যান ছিল ২০২০ সাল থেকে গণিত ক্যাম্পের সংখ্যা বাড়ানো, নতুন করে সংখ্যা ভ্রমণ শুরু করা, শিক্ষকদের জন্য অরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু করোনা মহামারীর জন্য সেই কাজগুলো শুরু করা গেল না। কিন্তু অন্য যে কাজটি করার দরকার সেটিতে আমরা হাত দিলাম – গাণিতিক সমস্যার বই।
এই বই-এর সব পড়ুয়ার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
এটি এখনও প্রকবশিত হয়নি। রকমারিতে প্রি-অর্ডার করা যাবে। ২৭/২৮ ফেব্রুয়ারি এটি প্রকাশিত হতে পারে। তারপর বইমেলাতে আদর্শের স্টলে (৩৩৩-৩৩৬) পাওয়া যাবাে।