বাংলাদেশে ওম্যান আইসিটি ফ্রন্টিয়ার ইনিশিয়েটিভ

Spread the love

wifi2দেশের অন্যতম শীর্ষ আইসিটি উদ্যোক্তা ও দোহাটেকের চেয়ারপারসন লুনা আপা (লুনা শামসুদ্দোহা)কে আমি চিনি এক যুগ সময়কাল ধরে। দেশের বাইরে আমাদের যে কয়টি আইসিটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে দোহাটেক সেগুলোর অন্যতম। তার অফিসের বেশ ক’টি শীর্ষ পদেও মেয়েরা রয়েছে। তিনি ‘আমার টীম লিড আপত্তি করেছে তাই আমি ঐ দলে কোন মেয়েকে চাকরিতে নেইনি’ জাতীয় ভাবধারায় বিশ্বাস করেন না। সে জন্য দোহাটেকে নারী কর্মীদের সংখ্যা এবং তাদের অবস্থান অনুকরনীয়।
আমার যখনই লুনা আপার সঙ্গে দেখা হয়, তাকে দেখি তিনি কোন না কোন পরিকল্পনা করছেন, চিন্তা করছেন অথবা কাউকে সঙ্গে না পেয়ে একাই একটা অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন করে ফেলছেন। আর তার কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে রয়েছে নারী আর আইসিটি। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের কেমন করে সামনে নিয়ে আসা যায়, তাদের পাশে দাড়ানো যায় সেটা নিয়েই তিনি সবসময় ব্যস্ত থাকেন।
দোহাটেকের মতো একটা একটা প্রতিষ্ঠান চালানোর পর তিনি একটি ব্যাংকের পরিচালকের কাজ করেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের বোর্ডে কাজ করেন, ওম্যান ইন আইটি নামের একটি সংস্থা চালান এবং সর্বশেষ গতকাল ১৫ মার্চ দেশে একটি নতুন উদ্যোগের সূচনার ঘোষণা দিলেন। তাঁর সঙ্গে বিডিওএসএনের অনেক কাজ। এর মধ্যে গার্লস ইন আইসিটিতে আমরা তার গাইডেন্স ও সহায়তা পাই। বাংলাদেশে টিবিটিটির কাজের তিনি সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক।

আইসিটির ব্যবহার নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অনেকগুলো এন্ট্রি ব্যারিয়ারকে সরিয়ে দিয়েছে। ফলে তাদের পক্ষে এখন নানানভাবে সমান অংশীদার হওয়ার পথ আরও প্রসস্ত হয়েছে। মনে আছে, আলজেরিয়ায় স্বামীরা স্ত্রীদের হেনস্তা করার জন্য প্রথমেই তার মোবাইল ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে। কারণ মোবাইল ফোনের সংযুক্তি তার স্ত্রীকে এগিয়ে দিয়েছে। তো, আইসিটির ব্যবহারে নারী উদ্যোক্তাদের  ক্ষমতায়িত করার জন্য জাতিসংঘের উদ্যোগে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মেয়েদের জন্য একটি প্রোগ্রাম হলো ওয়াইফাই (ওম্যান আইসিটি ফ্রন্টিয়ার ইনিশিয়েটিভ)। আইসিটির দ্বিমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নাই লক্ষ্য। উদ্দেশ্য হলো আইসিটির মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং সরকার ও নীতি নির্ধারকদের সহায়তা করায যাতে তারা নারীর জন্য আইসিটি কেন্দ্রিক একটি ইকো সিস্টেম তৈরি করতে পারেন। মাত্র কয়েকমাস আগে এটি কোরিয়াতে চালু হয়েছে, পরে আরও কয়েকটি দেশে সেটি চলছে।

From left to right, H.E. Mr. Choi Yanghee, Minister, Ministry of Science, ICT and Future Planning, Republic of Korea; H.E. Dr. Ing Kantha Phavi, Minister, Ministry of Women Affairs, Kingdom of Cambodia; Dr. Shamshad Akhtar, United Nations Under-Secretary-General and Executive Secretary of ESCAP; H.E. Ms. Kang Eunhee, Minister, Ministry of Gender Equality and Family, Republic of Korea; Ms. Luna Shamsuddoha, Chairman and President, Dohatec New Media, Bangladesh Women in Technology, People’s Republic of Bangladesh; Ms. Vivin Septiani Jatmiko, Student at the Brawijaya University Malang, Indonesia; and Ms. Hyeun-Suk Rhee, Director, UN-APCICT/ESCAP
কোরিয়াতে ওয়াইফাই-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় মঞ্চে লুনা আপা

আমি ঠিক জানি না, জাতি সংঘের আর কোন উদ্যোগ চালু হওয়ার এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে চালু হয়েছে কী না।
আগামী ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশেও এ কার্যক্রম শুরু হবে। আর এর প্রি-লঞ্চিং উপলক্ষে গতকাল একটা আয়োজন ছিল আইসিটি টাওয়ারের মিলনায়তনে। সেখানে এই আয়োজনের খুটিনাটি তুলে ধরা হয়েছে। সরকারের আইসিটি বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে এই আয়োজনে যুক্ত থাকছে ওম্যান ইন আইটি।

wifi3
বিসিসি মিলনায়তনে প্রি-লঞ্চিং-এ বক্তব্য রাখঝেন লুনা শামসুদ্দোহা।

শুরুতে কিছুক্ষণ অনুষ্ঠানটি দেখে চলে এসেছি কারণ আরও একটি সভা ছিল।

তবে, ওখানে গিয়ে ভাল লেগেছে কারণ যারা ঐ আয়োজনে এসেছে তাদের কারোরই গায়ের রঙের সমস্যা নেই। এবং এ আয়োজনের জন্য লুনা আপা কোন রং ফর্সাকারী ক্রিমের কাছে হাত পাতেননি! পাতার কথাও না। রঙের কথা না ভেবেই লুনা আপা এতদূর এসেছেন। “শাশুড়ির কাছে পরিবারের বাসার কাজ ঠিকমতো চলছে” এ কথাও তিনি কোনদিন বলেননি।

আশাকরি তাঁর এই উদ্যোগও সফল হবে।

আপনার জন্য স্যালুট ও অভিনন্দন, আপা।

Leave a Reply