সুলতান মেডিকেল হোটেল

Spread the love
চট্টগ্রামের জামালখান রোডে ডা. হাসেম স্কোয়ার

চল্লিশের দশকের চট্টগ্রাম। একটা ঘোড়া চালিত গাড়িকে শহরের সবাই চেনে। গাড়িটি তার  মূল সওয়ারির মতোই সমাদৃত। সকাল বেলা ঐ গাড়িতে করে দুইটি মেয়ে স্কুলে পড়তে যায়, চন্দনপুরায়। সেদিনও তারা রওনা হয় কিন্তু গাড়ি এখনকার সাবএরিয়া নামে পরিচিত জায়গায় পৌঁছাতেই কোচওয়ান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললো। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চিৎপটাং, গাড়ির আরোহিনী দুই বালিকাসহ। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে শ’খানেক লোক জড়ো হয়ে গেল এবং যেহেতু সবাই গাড়িটাকে চেনে, কাজে দুই বালিকাকে তাদের আন্দরকিন্লার ৩ নং রাজাপুকুর লেনের কুলসুম ভিলাতে নিয়ে যাওয়া হল।

বালিকাদের মা, আমার নানি, উম্মে কুলসম তখন বাকী ছেলেমেয়ে আর তার স্বামীর সকালের নাশতা তৈরিতে ব্যস্ত। দুর্ঘটনার খবর সেখানে পৌছার আগেই ছড়িয়ে গিয়েছিল সারা চট্টগ্রামে। উদ্বিগ্ন চট্টগ্রামবাসী দুই বালিকার ভালমন্দ সারাদিন ধরেই জানতে চেয়েছে কারণ তারা ডা হাসেমের মেয়ে!

ষাটের দশক অধ্যক্ষ রেজাউল করিমের এক ভাগ্নে একবার তাঁর কাছে জানতে চান চট্টগ্রামের কুতুব কে? অধ্যক্ষ সাহেব তাকে নিয়ে যান আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনে এক ডাক্তারের চেম্বারে (এখন সেখানে জামে মসজিদ কমপ্লেক্স)। ডাক্তারকে দেখিয়ে তিনি বলেন – ঐ তোর চট্টগ্রামের কুতুব। অসুখ-বিসুখ-বিপদ-আপদ সব সময় তার কাছে চলে আসবি।

প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম কেন একথা বলতেন সেটা বুঝতে হলে টাইম মেশিনে করে কোন একদিন সকালে ঐ চেম্বারে আপনি যেতে পারেন। চেম্বারটার নাম “সুলতান মেডিকেল হল”। হয়তো ভাবছেন সুলতান ডাক্তার সাহেবের নিজের বা পিতার নাম। আসলে তা নয়। ডাক্তার সাহেবের বাড়ি রাউজান উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। গ্রামের নামটাই তিনি নিয়ে এসেছেন তার চেম্বারে। ১৯২৮ সালে রেঙ্গুন থেকে ফিরে তিনি এই চেম্বারটি চালু করেন। ১৯৫২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত চেম্বারের উল্টোদিকে হাতি কোম্পানিদের কমপ্লেক্সে নিচতলার একটা বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকেন। পরিবার তখনো বড় হয়নি। কিন্তু বাড়িটা বড়ই।

ডা এম এ হাসেম ১৮৯৩- ১১ আগস্ট ১৯৭০

দরজা খুললে দেখবেন চেম্বারে ডাক্তার সাহেবের চেয়ারের সামনে একটা টেবিল। ফুলতোলা একটা কাপড়ের টেবিল ক্লথ। পুরানো আমলের টেবিল যেমন হয়। দুই দিকের দেওয়াল ঘেষে দুইটা লম্বা টুল, দুইপাশে হাতল দেওয়া। ডাক্তার সাহেবের পেছনে একটা বড় আলমিরা দিয়ে চেম্বারটা দুইভাগে ভাগ করা। আলমিরার পর একটু ফাকা আছে সেখানে একটা পর্দা। পর্দা ভেদ করে ভিতরে ঢুকলে বুজতে পারবেন এটি কম্পাউন্ডারের এখতিয়ার। রোগীর শোওয়ার জায়গাও আছে। তো, ঐ রুমটাতে আরও কয়েকটা চেয়ারও আছে।
ঐ রুমে থাকতে থাকতে থাকতে আপনার টাইমমেশিনের কাটা ঘুরিয়ে দিনটাকে ১৯২৯ সালের মে মাসের কোন একদিনে নিয়ে যান। হঠাতই দেখবেন ঐ রুমের চেয়ারগুলোতে কয়েকজন টগবগে যুবক। কম্পাউন্ডারকে সেখানে দেখবেন না। বাইরের ঘরে ডাক্তারের চেম্বারে অনেক লোক গল্প করছে। ভিতরে ওরা জনা পাঁচেক। আপনি যদি ছোটবেলার পাঠ্যবই ঠিকমতো পড়ে থাকেন তাহলে কয়েকটা চেহারা দেখে আপনি সন্দেহ করতে পারবেন আর যদি ‘চিটাগাং’ সিনেমাটা দেখে থাকেন তাহলে আপনি অন্তত দুইজনকে চিনতে পারবেন, সূর্য আর অম্বিকা! হ্যা, ঐ চেম্বারের পেছনের ঘরটি চট্টগ্রামের বিপ্লবী সূর্যসেনের শহরের মিলনবিন্দু। আলোচনা হচ্ছে ব্রিটিশদের খেদানোর কৌশল নিয়ে।
আবার একটু ঝুকে সময়কে নিয়ে যান ১৯৪৪ সালের কোন একদিনে। দেখবেন শশব্যস্ত ডাক্তারের চেম্বারে বাদশা মিয়াসহ আরও কয়েকজন। লোকজন এসে খবর দিচ্ছে আরও দুইজন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডাক্তার সাহেবকে যেতে হবে। ডাক্তার সাহেব আর বাদশা মিয়া ঐ গাড়িতে করে রহমতগঞ্জে একটি বাড়ির সামনে হাজির হবেন (এখানে এখন বহুতল বাড়ি)। ঐটা একটা বেবি’জ হাসপাতাল। দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধ আর ছিয়াত্তরের মন্বন্বরের প্রভাবে অনেকেই তাদের শিশু সন্তানকে পরিত্যক্ত করে চলে যাচ্ছে। সেই শিশুদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে বেবি’জ হাসপাতালে। কর্মব্যস্ত ডাক্তারের দিনের একটা বড় সময় কেটে যাচ্ছে সেখানে।

আপনি আপনার মেশিনে চড়ে আবার চেম্বারে ফিরতে পারেন। ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ওখানে তখন এক রোগীকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিচ্ছেন ডাক্তার। ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে রোগী বসে আছে। সামনে থেকে নড়ে না।
-দুইজ্জে খাইওনি ওবা (দুপুরে খেয়েছো কী)? ডাক্তারের জিঙ্গাষা।

রোগী নিরুত্তর। যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে ডাক্তারের। কম্পাউন্ডারকে ডেকে বললেন রোগীকে বাসায় নিয়ে যেতে। আর যেন বাসায় জানানো হয় রোগী সেখানে খাবে এবং রাতে থাকবেও। রোগীকে বাসায় দিয়ে এসে কম্পাউন্ডার যেন তার ওষুধগুলো বানিয়ে দেয়।

ঐ রোগীর পেছন পেছন আপনি হাতি কোম্পানির বাড়ির কমপ্লেক্সে ডাক্তার সাহেবের বাড়িতে গেলে দেখবেন ওনার বড় ছেলে ঐ রোগীকে সাদর সম্ভাষন জানিয়ে বাসায় নিয়ে খেতে বসিয়ে দিয়েছে। রান্নাঘরের হাল হকিকত দেখে আপনি বুঝবেন এই ঘটনা প্রতিদিনই ঘটে! তখন আপনি বুজতে পারবেন আপনি যখন ‘সুলতান মেডিকেল হল” খোঁজাখুঁজি করছিলেন তখন কেন সবাই আপনাকে ‘হোটেল’ ‘হোটেল’ বলছিল। কারণ ১০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রামবাসী জেনে গেছে এই চেম্বারে কোন রকমে হাজির হলেই হয়। চিকিৎসা, ওষুধতো পাওয়াই যায়। দরকার হলে জুটে যায় আমার নানীর রান্না করা খাবার এবং রাত বেশি হয়ে গেলে সেই বাড়িতে থাকার জায়গা। কাজে ততোদিনে লোকের মুখে মুখে ঐ চেম্বারের নাম হয়ে গেছে “সুলতান মেডিকেল হোটেল”।

টাইম মেশিন এদিক এদিক করে আপনি এখন কয়েকবছর এগিয়ে যান। ব্রিটিশরা চলে গেছে। পাকিস্তান আমল চলে এসেছে। চট্টগ্রামে এমবি পাস করা ডাক্তার তিনি একা নন। অনেকেই আছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুলে চালু হয়েছে এমবি ডিগ্রী দেওয়া। চট্টগ্রামের আশেপাশের এলাকা থেকে অনেকেই সেখানে পড়তে আসে।
চেম্বারে গিজ গিজ করা লোকেদের মধ্যে আপনি একজনকে সহজে আলাদা করতে পারবেন। টাইম মেশিনের এসোসিয়েট  মনপড়া যন্ত্রের বদৌলতে তার পকেটের আইডি কার্ড পড়ে আপনি জেনে যাবেন এই তরুন চট্টগ্রাম মেডিকেলের ছাত্র। কিন্তু ওতো অসুস্থ নয় তাহলে কেন এখানে এসেছে?
আপনার তো টাইম মেশিন আছে। ওর সঙ্গে করে একদিন পিছিয়ে আপনি চলে যান মেডিকেল স্কুলের ক্যাম্পাসে। সেখানে দেখবেন নতুন ছাত্রদের হাসপাতালে ওয়ার্ড ডিউটি শুরু হয়েছে। সবার হাতে একটা করে স্টেথো থাকলেও পটিয়ার ঐ ছেলেটির হাতে কোন স্টেথো নাই। তারপরই আপনি শুনবেন প্রফেসরের ঝাড়ি। “আজও তুমি স্টেথো আনতে পারো নি। এরপর স্টেথো নিয়ে না আসলে তোমাকে ক্লাশ থেকে বের করে দেবো”।
তখন থেকে মন খারাপ করে ঘুরে বেড়াতে দেখবেন ঐ ছাত্রটিকে। বুজে ফেলেছ তার আর ডাক্তার হওয়া হবে না। কারণ অনেক চেষ্টা করেও স্টেথো কেনার টাকা যোগাড় করতে পারেনি। এই সময় মেডিকেলের এক বয়সী চৌকিদার তার মনখারাপ অবস্থা দেখে কারণ জানতে চাইবে। সব শুনে হেসে বলবে – ধুর মিয়া। এটা কোন ব্যাপার। আন্দরকিল্লায় ডা. হাসেমের হোটেলে চলে যাও।

ঐ কথা শুনে দূরু দুরু বক্ষে ছাত্রটি চেম্বারে এসে বসে আছে। কিন্তু কিছুতেই বলতে পারছে না। রোগী আসে, রোগী যায়, লোকজন আসে যায় – কিন্তু তরুন আর ডাক্তার সাহেবের কাছে নিজের প্রয়োজন বলতে পারে না। চেম্বারে এক লোক খেয়াল করলেন এক তরুন বসে আছেন এক কোনে।
“কী হে, কী দরকার তোমার”
কম্পিত কন্ঠে তরুন তার সমস্যার কথা বলতে শুরু করবে। অর্ধেক শুনেই ডাক্তার সাহেব তাকে থামিয়ে দিলেন। তারপর নিজের গলা থেকে স্টেথোটা খুলে তার হাতে দিয়ে বললেন – যাও। মনোযোগ দিয়ে পড়ো। তোমাকে অনেক বড় ডাক্তার হতে হবে।
কৃতজ্ঞ তরুন চোখ মুছতে মুছতে হেটে রওনা হবেন তার হোস্টেলের দিকে।

আপনার মনপড়ার যন্ত্র আপনাকে সুযোগ দেবে তার প্রতিজ্ঞা পড়ার।  একটুক্ষণের জন্য আপনি তার সঙ্গে ১৯৮০ সালে চলে আসতে পারেন। দেখবেন ঐ তরুনটি তখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কিন্তু বিনয়ী চোখের ডাক্তার। তাঁর চেম্বারের অনেক রোগীর পকেটেই কোনো টাকা থাকে না ফি দেওয়ার মতো!

আপনি আবার হাসেম ডাক্তারের চেম্বারের ফিরে যান।

একজন জানতে চাইলেন – স্টেথো যে দিয়ে দিলেন? ওকে চেনেন?
– না, ওকে কেমনে চিনবো। আর স্টেথো তো আমার কয়েকটা আছেই!

আপনি হয়তো ভাবছেন মানবতার সেবক ডাক্তার সাহেবকে আপনি অনেকখানি চিনে ফেলেছন। আপনার টাইম মেশিনকে সেট করুন ১৯৫৮ সালে। ঝট করেই নেমেই বুঝতে পারবেন জেনারেল আইয়ুব খার ইশারায় ইশকান্দর মির্জা পাকিস্তান দখল নিয়েছে। আপনি টাইম মেশিন থেকে সে খোলা জিপটাতে পড়েছেন সেটাতে কয়েকজন রাগী যুবককে দেখতে পাবেন। তাদের  নেতাটিকেও আপনার চিনতে পারা উচিৎ। আপনার মনে পড়বে এখন চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামটির নাম এই রাগী তরুন এম এ আজিজের নামে। খোলা জিপে করে এম এ আজিজ ইশকান্দর মির্জার ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে একটি বিবৃতি স্বাক্ষর করানোর জন্য বিভিন্ন লোকের কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ স্বাক্ষর করছে না। রেগে মেগে একটা কিছু করবে এমন সময় কে জানি বললো আরে আমরা ডাক্তার সাহেবের কাছে যাচ্ছি না কেন।

তাৎক্ষণিক গাড়ি ঘুরিয়ে তারা হাজির হলেন ৩ নং রাজাপুকুর লেনে। ডাক্তার সাহেব আবার চেম্বারে যাবেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঐ বাড়ির দ্বার সবার জন্য অবারিত। কোন কলিং বেল নাই। এম এ আজিজ দলবল নিয়ে ডাক্তার সাহেবের সামনে হাজির হলেন। বললেন – ইশকান্দর মির্জার এই ক্ষমতা দখলকে মেনে নেওয়া যাবে না। একটা বিবৃতি দেওয়া দরকার।
ডাক্তার সাহেব ঐ বিবৃতিটি পড়বেন তারপর তাঁর ঝর্ণা কলম দিয়ে লিখবেন, এই স্বাক্ষর তখন চট্টগ্রামের প্রায় সব লোকই চিনে।

১। এম এ হাসেম (স্বাক্ষর করার সময় তিনি কখনো ডাক্তার কথাটা লিখতেন না)

এম এ আজিজরা বের হয়ে যাবেন কারণ তারা জানেন পরের লোকদের কাছে গিয়ে কেবল বলতে হবে – এই বিবৃতিতে ডাক্তার হাসেম সই করেছেন। আপনি কি করবেন?

হাসেম স্কোয়ারের উদ্বোধন

আপনি ভাববেন ডাক্তার সাহেবের বাড়িতে এসেছি যখন কিছুক্ষণ থাকি। মেশিন ঘুরিয়ে হাজির হবেন ষাটের দশকের শুরুর দিকে। দেখবেন ডাক্তার সাহেবের চতুর্থ মেয়ে প্রতিদিন অপর্ণা চরণ স্কুলে পড়াতে যাচ্ছে। একদিন বিকালে এসে বাবার কাছে বলবে – ময়মনসিংহ জেলায় মেয়েদের একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ আছে। সেখানে মেয়েরা ব্যাচেলর অব টিচিং করতে পারে। এক বছরের কোর্স। পড়তে যেতে চায় সে। রেলগাড়িতে প্রথমে ঢাকা তারপর মযমনসিংহ যেতে হয়। দুইদিন লাগতে পারে। মেয়ের কথা শুনে বাবা তাৎক্ষনিক অনুমোদন দিয়ে দেয়। মেজ ছেলেকে যেকে বলে দিলেন যেন সে তার আপাকে ময়মনসিংহ দিয়ে আসে। সে সময় মেয়েকে একলা ওতো দূরে পড়তে পাঠানোর জন্য তাঁকে দ্বিতিয়বার ভাবতেও দেখবেন না।
তখনই আপনি টের পাবেন ডাক্তার সাহেব কেন মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি স্কুল, ওমর গণি এমই-এস কলেজ সহ শহরে আর গ্রামে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়া ও তার পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত।

কারণ নিজেকে দিয়ে তিনি জানতেন জীবনে উন্নতির পথ আসলো ততোটা কঠিন নয় যদি তার জীবনের একটা মন্ত্র হয় – পড়ো পড়ো পড়ো।

এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি অনেক হাপিয়ে উঠেছেন। কাজে নিজ সময়ে ফিরে আসতে পারেন। খন্ড খন্ড যে ছবিগুলো আপনি দেখেছেন সেগুলো জোড়া দেওয়ার জন্য এই লেখাটা পড়তে পারেন।
তারপর রাতে যখন ঘুমাতে যাবেন তখন নিজেই বুঝতে পারবেন ষাটের দশকে প্রিন্সিপাল রেজাউল করিমের এই কথাটা কেন চট্টগ্রামের লোকেরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে – মৃতপীর দেখতে হলে আমানত শা’র দরগায়ে যাও আর জিন্দা পীর দেখতে হলে দেখো ড. হাসেমকে।

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply