২ বছরের বিশ্বরেকর্ড!!!

Spread the love

১৮ বছর হলে আমরা তরুণ বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি যদিও ২০এর কম বলে সেটা Teen বা কিশোর বয়স। তা যুবক বা কিশোর যাই বলি না কেন ইরিয়ন নাইটনকে আমার নেটওয়ার্কের খুব বেশি লোক ফলো করে বলে আমার মনে হয় না। খেলাধুলার মধ্যে আমাদের ক্রিকেট, ফুটবলের বাইরে কিছুটা মনোযোগ এখন পায় আর্চারি ও শ্যুটিং।

আমার এথলেটিক্সের প্রতি আগ্রহের কারণ ভিন্ন। আমি চোখ বুঝলে ১৯৭৬ সালের মিউনিক অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণের মার্চপাস্টের ছবি দেখি। বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা হাতে (শাদা কাল টিভিতে) দেশের দ্রুততম মানব মোশাররফ হোসেন শামীম যখন হেটে গিয়েছেন তখন টিভির সামনে আমরা উঠে দাড়িয়ে ছিলাম। স্বাধীনতার মাত্র কয়েকবছরের মধ্যে আমাদের একজন, তাও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের, অলিম্পিকে গিয়েছে সেটাই তো বিশাল। আমি ভাবতাম আর কয়েকটা অলিম্পিকের মধ্যে আমরাও পদক তালিকায় নাম লেখাতে পারবো। পরে বুজলাম চাপাবাজি করে, কনসার্ট আয়োজন করে আর যাই হোক স্পোর্টসে পদক পাওয়া যায় না। যাকগে এসব কথা থাকুক।

ছবিটি কিশোরটির কথা যারা জানেন তারা জানেন ইরিয়নের নাম এখন উসাইন বোল্টের সঙ্গে একই উচ্চতায় নেওয়া হয়। হবেই না কেন বিশ্ব অনুর্ধ ১৮ ও ২০ বছরের এথলেটিক্সে ২০০ মিটারের রেকর্ডটি বোল্টের দকলে ছিল ১৮ বছর। সেটি এখন এই কিশোরের দখলে। এরই মধ্যে ইরিযন ১০০ মিটারও ১০ সেকেন্ডের কমে দৌঁড়াতে শুরু করেছেন। তাতে অনেকেই তার মধ্যে বোল্টের রেকর্ড ভাঙ্গার সম্ভাবনা দেখছেন।

কিন্তু দুই বছর আগেও ইরিয়নের কিন্তু এথলেট হওয়ার কথা ছিল না। তার সকল আগ্রহ ছিল ফুটবলকে ঘিরে। টম্পা হিলনব্রু হাই স্কুলের ইরিয়নের তখন টার্গেট আমরেকিার ন্যাশনাল ফুলটবল লীগ, এনএফএলে খেলা। কিন্তু করোনার জন্য সকল আউটডোর গেম বন্ধ হয়ে গেলে বিকল্প খুজতে ট্রাকে আসে ইরিয়ন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছে এর আগে ১০০ মিটার দৌড় সম্পর্কে তার কনো আইডিয়াই ছিল না। “কিন্তু অচিরেই আমি বুঝতে পারি আমি অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং দৌড়টা ভালই পারি”।

তারপর তো ১৫-১৬ বয়স গ্রপের এএইউ চুনিয়র অলিম্পিক গেমসে ২০.৩৩ সেকেন্ড তৌগে রেকর্ডউ করে ফেললো। এর আগের রেকর্ড ছিল ২০.৬২ সেকেন্ড!

২০২১ সালে ইরিয়ন পেশাদার দৌড়বিদদের সঙ্গে দৌড়ানোর মনস্থ করে। ৯.৯৯ সেকেন্ড ১০০ মিটার দৌড়ালেও তার টাইমটা নেওয়া হয়নি। পাঁচ মাস পরেই ইরিয়ন ২০০৩ সালে উসাইন বোল্টের ২০০ মিটারের ২০.১৩ সেকেন্ডের রেকর্ড, অনুর্ধ ২০-এর রেকর্ড, ভেঙ্গে ফেলে ২০১১ সেকেন্ডে! এতে ইরিয়ন আমেরিকার অলিম্পিক দলের ট্রায়ালের জন্য নির্বাচিত হোন। তারপর নিজের সেরা সময় করে দলে ঢুকে যান। ১৯৭২ সালের পর আবার কোন হাইস্কুল ছাত্রের অলিম্পিক এথলেটিক দলে সুযোগ পাওয়া। রেকর্ড বলছে ১৯৬৪ সালের পর কোন টিন এজারের ইউএস অলিম্পিক দলে সুযোগ পাওয়া। টোকিও অলিম্পিকে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয়। ইরিয়ন হয় ৪র্থ।
২০২২ সাল আরও ভালভাবে শুরু হলো। মাত্র ক’দিন আগে, এপ্রিলের ৩০ তারিখে এলএসইউ ট্রাক এন্ড ফিল্ডে ২০০ মিটার দৌড়ালো ১৯.৪৯ সেকেন্ডে! এর থেকে কম সময়ে কেবল বোল্ট (১৯.১৯), ইয়োহান ব্লেইক (১৯.২৬) এবং মাইকেল জনসন (১৯.৩২)।

এর মধ্য মাঝখানে বিরতি নিয়ে আবার পড়াশোনায় ফিরে গেছে ইরিয়ন। এই বছর তার হাইস্কুল শেষ হবে।

এখন তার লক্ষ্য বোল্টের রেকর্ড ভাঙ্গা।

“সহসা না হলেও সমস্যা নাই। কারণ আমার হাতে ১০ বছর সময় আছে”।

 

Leave a Reply