নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইসিটি

Spread the love

Logo_3আজ ছিল নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক দিবস। সেইসঙ্গে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে একটিভেশন।  আমি ভেবেছি এই কয়দিন টুকটাক কিছু বিষয় শেয়ার করবো এই নিয়ে। আজকে তার প্রথম পর্ব।

 

 

 

কতিপয় সত্য

  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বব্যাপী পুরুষের তুলনায় মেয়েরা বেশি নির্যাতিত হয়,
  • জাতিসংঘের হিসাবে অনলাইনে আগ্রাসী আচরণ, নিপিড়ন, অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার, পরিবর্তিত ছবি ব্যবহার করার ৯৫% শতাংশ ঘটনায় হয় মেয়েদের বিরুদ্ধে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষবন্ধু বা তার প্রাক্তণ স্বামীরা এই কাজে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে!
  • পুরুষ বা মহিলারা উভয়েই অনলাইনে বদমাইশদের নজরদারিতে থাকে। তবে, ১৮-৩২ বছরের বয়ষীদের বেলায় এই নজরদারীতে মেরেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ
  • আর্জেন্টিনায় স্বামী বা ছেলে বন্ধু রেগে গেলে মেয়েটির মোবাইল ফোন প্রথমেই ভাঙ্গে!
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হল নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি এবং এর প্রতিরোধের দ্বিমুখী ছুরি! কারণ আইসিটি যেমন মেয়েদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় তেমনি তা দিয়ে মেয়েরাও লড়াই সংগ্রাম করতে পারে।

কোন এক অজ্ঞাত কারণে সৃষ্টির শুরু থেকে নতুন নতুন প্রযুক্তি মেয়েদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কোন না কোন ছুতা বের করেছে একদল বদমাইশ। হাল আমলের তথ্য প্রযুক্তি এর ব্যতি্ক্রম নয়। অনলাইনে, মোবাইলে কিংবা রেডিও-টেলিভিশনের অপব্যবহারের হার বেড়েই চলেছে। এর একটা বড় কারণ হল এই সকল প্রযুক্তি দূর থেকে ব্যবহার করা যায়।। বন্দুকের গুলি বা রাম-দাও এর কোপ দিতে হলে সামনা সামনি হতে হয় কিন্তু অনলাইণে নির্যাতনটা দূর থেকেই করা সম্ভব। তবে, তথ্য প্রযুক্তির বাহাদুরী হল এর উদ্ভাবনী ও কুশলী ব্যবহারে এই ধরণের নির্যাতন বন্ধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সম্ভব।

এই জন্য দরকার সচেতনতা এং প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ হওয়া। আমাদের দেশে সাধারণভাবে বলা হয় মেয়েরা প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকে, ভীতির কারনে। কিন্তু অতি সম্প্রতি ৫ লক্ষ ছেলে-মেয়েকে পেছনে ফলে গ্রামীণ ফোন –প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসবের আই-জিনিয়াস গ্র্যান্ড মাস্টার হয়েছে সীলমা রাইসা, একটি মেয়ে। অর্থাৎ মেয়েরা চাইলে প্রযুক্তিতেও ভাল করতে পারে। এই সংখ্যায় প্রকাশিত গোলটেবিল আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সুরাইয়া পারভীন এই কথাটি বলেছেন। ইচ্ছ, সুযোগ আর অধ্যবসায় থাকলে মেয়েরাও তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।

প্রশ্ন হচ্ছে ইন্টারনেট, মোবাইল আর ফেসবুকে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের কাজটি কে করবে? মেয়েরা না ছেলেরা?

করতে হবে উভয়কে্ই। তবে, মেয়েদেরই বেশি উদ্যোগী হতে হবে।

প্রথম কাজ হল সচেতন হওয়া। প্রযুক্তির যে সুবিধাটা একটি বদ ছেলে একটি মেয়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে সেগুলোর কলাকৌশল শিখে নেওয়াটা মোটেই কঠিন নয়। সামান্য চেস্টাতেই বরং সেটা সম্ভব। অন্যদিকে, কিছু সহজ বুদ্ধি খাটালেই অন্যরা এই কৌশলগুলো মেয়েদের ওপর প্রয়োগ করতে পারে না।

যেমন ধরা যাক , ফেসবুক বা অন্যান্য সিস্টেমের অনেক পাসওয়ার্ড মেয়েরা তার স্বামী বা ছেলে বন্ধুকে জানিয়ে দেয়। অনেকের সঙ্গে কথা বলে আমি জেনেছি “এটি নাকি সম্পর্কের গভীরতার লক্ষণ”। এই বিষয়ে আমি কেবল নিবন্ধের শুরুতে দেওযা সত্যগুলোর দ্বিতীয়টি আবার পড়ার জন্য অনুরোধ করবো।ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যাপারটি নিতান্তই ব্যক্তিগত। সেটিকে ব্যক্তিগতই রাখতে হবে।

পাসওয়ার্ডের বেলায় এটিকে নিয়মিত পরিবর্তন করার বিষযয়টি সবাই খেয়াল করে না। কিন্তু যেকোন পাসওয়ার্ড নিয়মিত পরিবর্তন করার অভ্যাস করা প্রয়োজন। এছাড়া বেশিরভাগ সাইটে পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে সেটি উদ্ধারের একপি প্রক্রিয়া থাকে কোন গোপন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে। অনেকেই নিজের এই গোপন প্রশ্নটি এমন দেন যে সেটি আর গোপন থাকে না। এক সরকারি কর্মকর্তার হ্যাক হয়ে যাওয়া ইয়াহু একাউন্ট উদ্ধার করতে গিয়ে আ,মি দেখেছি তার গোপন প্রশ্নের উত্তরটি তার সকল কাছের লোকের পক্ষের জানা!

সকল সতর্কতার পরও অনেকের বেলায় এই ঘটনাটি যখন ঘটে যায় তখন সেটিকে ঠিকমতো প্রতিহত করা যায় না। অনেকেই পুরো ব্যাপারটিকে প্রযুক্তির ঘাড়ে চাপিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে পিছিয়ে আসে। মনে রাখা দরকার এখানে সতর্কতার কোন দোষ নেই। যাই ঘটুক না কেন বিষয়টি সবাইকে জানিযে দেওযা এবং প্রতিকারের খোঁজ করারটা খুব জরুরী।

রাবরীদের উত্তক্তাকারীদের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে সেটি সারাদেশে ছড়িযে দেওযা হল একর একটি উদাহরণ।

প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিশ্বব্যাপী গড়ে উঠছে টেইক ব্যাক দ্যা টেক (https://www.takebackthetech.net/) নামের একটি সচেতনতা কর্মসূছীভ সম্প্রতি বাংলাদেশেও আমরা এই কর্মসুচীটি শুরু করেছি। আশা করা যায় আগামীতে আমরা এই কাজটি সবাই মিলে এগিয়ে নিতে পারবো।

[আমাদের জন্য টিবিটিটির আন্তর্জাতিক লোগোটিকে লোকালাইজ করে দিয়েছেন এমরাজিনা আই খান। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা]

2 Replies to “নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইসিটি”

  1. Asole amader deshe narider kono nirapod kono jayga nei. R kono bhabe jodi ekto thai hoy ta o abar asroy datar lolop chahonite shei asha gorebali hoy, tai ekti nirapod monch dorkar narider jonno. jate shodho narira e narider nirapod rakhte parbe r tar jonno dorkar amader sochetonota tate jodi amader naria mukti pay tobe e amra bolte parbo je amra ekta kiso korte perechi narider jonno.

Leave a Reply