খুল যা সিম সিম-২ : আলিবাবার গল্প কেন?
কারণ অনেকগুলো। আমি একটা তালিকা বানানোর চেষ্টা করছি-
১. আমেরিকার বাইরে একমাত্র ‘ইন্টারনেট কোম্পানি’ যা কীনা এযাবৎ কালের সবচেয়ে বড় আইপিওর হোতা।
২. “লোকাল অভিজ্ঞতা”র মূল্য কত হতে পারে আলিবাবা হচ্ছে তার একটা প্রমাণ।
৩. কো-ফাউন্ডার জ্যাক মা কম্পিউটারের কিছুই জানেন না।
৪. কলেজে ইংরেজি শেখানোই ছিল তার কাজ। এক সময় মনে হয়েছে নতুন কিছু করে দেখা যাক। কয়েকটা লাথি-গুতা খেয়ে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছেন আলিবাবাতে।
৫. আলিবাবার নামটা। আরব্য রজনী থেকে নেওয়া। জ্যাকের ভাষ্য মতে “আলিবাবা গল্পের নায়কের সামনে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল ‘খুল যা সিম সিম’ থেকে। আলিবাবা ডট কমও সেরকম চাইনীজ সাপ্লায়ারদের সামনে ইন্টারনেটের এক সমৃদ্ধ সোপান উন্মোচন করেছে।
৬. মার্কিনীদের মত চাইনীজদের গ্যারেজ নেই। তাই আলিবাবার জন্ম জ্যাকের এপার্টমেন্ট থেকে। জ্যাক তার ১৭ জন বন্ধুকে নিয়ে ১৯৯৯ সালে আলিবাবা সৃষ্টি করে।
৭. পণ্ডিতদের পরামর্শে আলিবাবা সিলিকন ভ্যালিতে অফিস করে ট্রান্সফার হওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু অচিরেই ভুল বুঝতে পেরে ব্যাক টু দি প্যাভিলিয়ন করেছে।
৮. শুরু থেকে কাস্টোমারদের দিকেই নজর দিয়েছে। নিজেদের টাকা কীভাবে আসবে সেটা নিয়ে ভাবে নি। মানে টা সহজ। আগে প্রোডাক্ট তৈরি হয়েছে এবং তারপর বিজনেজ মডেল। ২০০১ সালে প্রথম তারা কিছুটা টাকার মুখ দেখে।
৯. জ্যাক নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেনি। তার অস্থিরতা, এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়তে চলে যাওয়া। যখন তখন স্টেজে উঠে যাওয়া – এ সবই বিনিয়োগকারীরা ভাল মনে নিয়েছে।
১০. রেজাল্ট হল জ্যাক এখন চীনের সবচেয়ে ধনী লোক।
কেমন করে বলবো
এবার চিয়াংমাই থেকে থেকে ফেরার পথে ব্যাংকক এয়ারপোর্ট থেকে পোর্টার এরিসম্যানের আলিবাবা’স ওয়ার্ল্ড বইি কিনে এনেছি। পোর্টার ২০০০ সাল থেকে আলিবাবার ইন্টারন্যাশনাল পিআরের প্রধান। তার জবানীতে সে এই বইটা লিখেছে। আমি শুনেছি জ্যাককে নিয়ে আলিবাবা নামেই একটা বই আছে। আমি এখনো হাতে পাইনি।
আমি অবশ্য সরাসরি গল্পতে যাবো না এবার। কারণ এই গল্পে গল্পের চেয়ে বিশ্লেষনটা মনে হয় বেশি জরুরী। কয়েকটা কারণে – ইন্টারনেট এখনো অনেক নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে যদি সেটাকে উপলব্দি করা যায়। আলিবাবার গল্প যতটুকু পড়েছি তাতে ফেসবুকের সঙ্গে এক ধরণের মিল পাচ্ছি। ফেসবুকে যেমন এখানেও উদ্যোক্তারা নিজেদের প্রোডাক্ট নিয়েই প্রথম দিককার সময় কাটিয়েছে। ফলে ব্যবসা কেমনে হবে সেটাও খুব একটা মাথাতে ঢুকে নাই।
প্রায় সব সফল গল্পগুলোতেই এই বোধটা দেখা যায়। ডেলিভারি হ্যাপিনেসের কথা মনে আছে? জাপ্পোসও কিন্তু একই সিচুয়েশনে পড়েছিল। জ্যাকও প্রায় হেরে যাচ্ছিল। কিন্তু কৌশল খাটিয়ে টিকে থেকেছে এবং এক সময় বিরাট আকারে উঠে এসেছে।
কয় পর্ব?
ঠিক করি নাই। কয়েক পর্ব লিখেই আলিবাবা ও চল্লিশ শিক্ষায় চলে যাবো। তবে কয়েকটা বিষয় ধরার চেষ্টা করবো – শুরুর দিকের স্ট্রাগল, ই-বের সঙ্গে ঝগড়া এবং ফিনিক্স পাখির মত জেগে ওঠা।
বাকী আল্লাহর ইচ্ছা।