ইমোশনাল মার্কেটিং ৬: দুঃসংবাদ বাতাসের আগে ধায়???
ইমোশনাল মার্কেটিং-৫ : কেন কাজ করে? কেনু?
মার্কেটারদের একটা লক্ষ্য তো বিক্রি। সেটাই আসল লক্ষ্য আসলে। তবে, মাধ্যমটা যদি হয় আবেগের ব্যবহার তাহলে ফাউ হিসাবে অনেক কিছু পাওয়া যায়। একজন মার্কেটারের মনোবাসনা হলো তার প্রোডাক্টি স্থান করে নেবে মানুষের মনে, হয়ে উঠবে ‘ওয়ার্ড অব মাউথ’। আর সেটাতেই আবেগের ব্যবহার কতো কোতো তা বলা মুশ্কিল। আপনি যদি আপনার গ্রাহক, ভোক্তা, শ্রোতা বা দর্শকের মনে আবেগ তৈরি করতে পারেন তাহলে তা আপনাকে এগিয়ে নেবে অনেকখানি।
সুখী হলে ভুতে কিলায়
একজন মানুষ সুখী হলে কী করে? নিজেতো আনন্দ পায়, সঙ্গে সঙ্গে সে আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চায়। সেলফি চলে যায় টুইটারে, গল্প শেয়ার হয়ে যায় ফেসবুকে। আর এ ধরণের সুখানুভূতি কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যদিও আমরা ছোটবেলায় পড়েছি “Our sweetest songs are those that’s tells us saddest thought’। কিন্তু এখনকার যুক্ত পৃথিবীতে দেখা যায় আনন্দের বিষয় সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
হোলস্টি মেনিফেস্টোর কথা মনে আছে। দেখলেই মন ভাল হয়ে যায়। কারও বাসায় গিয়ে যদি ঐ কাঠের ব্লকটা দেখতে পান তাহলেই মনে হয় আহা আমারও একটা হোক। সাধারণ ক্যামেরায় বানানো ভিডিওটাও দেখেছে লক্ষ লক্ষ লোক।
একটা সময় ছিল যখন সান্ধ্যকালীন টিভির খবর বা সকালে পত্রিকার খবরের জন্য মটো ছিল “BAD NEWS SELLS. If it bleeds, it leads. No news is good news, and good news is no news.” (খারাপ খবর হল আসল খবর। রক্তক্ষরণই লিড নিউজ। কোন খবরই ভাল খবর নয় আর ভাল খবরের কোন বেইল নাই)। বাংলা প্রবাদ হলো দু;সংবাদ বাতাসের আগে ধায়!
সার্কুলেশন ডেটা, পত্রিকার রেটিং আর গাটস ফিলিং থেকে এমন একটা ধারণার জন্ম এবং সেটা একসময় ঠিকই ছিল। যুদ্ধ, ভূমিকম্প, বন্যা, আগুন, অসুস্থ বাচ্চা, স্ত্রী হত্যা – এগুলোরই কভারেজ বেশি। এখন অবশ্য আপনি পাঠকদের অনেক বেশি নিখুঁতভাবে ফলো করতে পারেন। তারা কোন খবর শেয়ার করে, কোন খবর ই-মেইল করে আর কোনটা হোয়াটস এপে ছড়িয়ে দেয় সেটা মেপে ফেলা কঠিন নয়। এবং সেটা করেই আমরা খুব চমকে গেছি। নিউরোসায়েন্টিস আর মনোবিদরা বলছেন উল্টো কথা। তারা বলছেন ভাল খবরই দুঃসংবাদের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়ায়। এমনটা আমরাও আজকাল দেখেছি। সুসংবাদ এবং মানবিক গল্প হলে মানুষ অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পছন্দ করে।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ জোনা বার্জারের বক্তব্য হলো যে সমস্ত গণমাধ্যম তাদের পাঠক/শ্রোতা বা দর্শকের অনুভূতির তোয়াক্তা করে না তারাই কেবল এরকম দুঃসংবাদকে বড় করে ছাপে। কিন্তু, তিনি বলছেন, “আপনি যখন কোন সংবাদ বা বিষয় কারও সঙ্গে শেয়ার করেন তকণ আপিন তার অনুভূতিকে মূল্য দেন। কারণ কেবল সংবাদমূর্য আপনার কাছে বিবেচ্য নয়। আপনি নিশ্চয়ই চান না তারা আপনার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করুন”।
ই-মেইল, স্যোসাল মিডিয়ার পোস্ট, রিভিউ আর কথোপকথন বিশ্লেষন করে গবেষকরা বলছেন- পজিটিভ বিষয়ই বেশি। যদিও সেটা কেন বেশি তা সহজে বলা মুশ্কিল।
এ ধরণের বিষয়গুলি সুখানুভূতি দেয়। ফলে সেটির শেয়ার করার ঝোঁকও বেশি। ভাবার কোন কারণ নেই যে এটা হলো শিমুদের ‘সামাজিক হাসি’ (স্যোসাশ স্মাইল)। ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ বয়সের শিশুর দিকে তাকিয়ে আপনি যদি হাসেন, তাহলে দেখবেন সেও হাসবে। ও কিন্তু না বুঝেই হাসে। কারণ এটা তার কন্ডিশন রিফলেক্স। কিন্তু, সুখী হয়ে শেয়ার দেওয়া বা ভাগাভাগি করাটা মোটেই কোন “অজান্তের’ ব্যাপার নয়। মানুষ জেনে-বুঝেই এ কাজটা করে।
One Reply to “ইমোশনাল মার্কেটিং ৬: দুঃসংবাদ বাতাসের আগে ধায়???”