ই-উদ্যোক্তা হাটের উদ্যোক্তা-৩ : অপূর্ব তালুকদারের কেয়ার স্টোর
চাকরি খুজব না, চাকরি দেব – আমাদের একটি উদ্যোগ। ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। অনেক বড় কিছু করে না। যারা উদ্যোক্তা হতে চায়, আগ্রহ আছে, খাটতে পারে তাদেরকে সহায়তা করে। তথ্য দিযে, মেন্টরিং করে আর সোর্সিং-এ সহায়তা করে। এরই মধ্যে এই গ্রুপের মাধ্যমে অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন। অনেক আবার ঝড়েও পড়েছেন। কেউ কেউ চাকরিতে ফিরে গেছেন এবং আবার নতুন করে ফিরে এসেছেন। এখানে একদম নতুন অনেকে যেমন থাকেন তেমনি ২০১১ সালে শুরু করেছেন এখন বড় হয়েছেন তারাও আছেন। এই প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তাদের জন্য আয়োজন করা হয় উদ্যোক্তা হাট, উৎসব ও সামিটের। উদ্যোক্তা হাটে গ্রুপের উদ্যোক্তারা হাজির হোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে। ২/৩ দিন তারা সেখানে নিজেদের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে যেমন পারেন তেমনি পারেন ইকো-সিস্টেম ও গ্রাহকদের সঙ্গে একটা সম্পর্ত তৈরি করতে।
এই বছর সরাসরি উদ্যোক্তা হাট করা যাচ্ছে না। তাই হচ্ছে ই-উদ্যোক্তা হাট। সেই হাটেরই একজন অপূর্ব তালুকদারের সঙ্গে সম্প্রতি আমার কথা হয়েছে তার উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। অপূর্ব মূলত চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে কাজ করছেন। তার উদ্যোগের নাম কেযার স্টোর।
মুনির হাসান – কেনো আপনি এই ব্যবসা শুরু করলেন?
অপূর্ব তালুকদার – আমি মনেকরি একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের রাষ্ট্রীয় কিছু সীমাবদ্ধ আছে, সেটা যেমন আছে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতে তেমনি আছে চিকিৎসা ব্যবস্থায়। শহর থেকে গ্রামে সরকারি অসরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে মেডিকেল সরাঞ্জমের অপ্রতুলতার সাথে রয়েছে ডাক্তার ও নার্সদের সংকট। একটা আপদকালীন সময় অনুভব করা যায় একটা ভেন্টিলেশন মেশিন কিংবা একটা নেবুলাইজার মেশিন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আসলে প্রয়োজনিয়তার এই জায়গা থেকেই মেডিকেল ও হেলথকেয়ার পন্যের ভাবনা এবং কেয়ার স্টোর এর যাত্রা শুরু।
মুনির হাসান – কিভাবে ব্যবসার মূলধন বা প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ম্যানেজ করেছেন?
অপূর্ব তালুকদার– মূলধন সবসময়ই ব্যবসায়ের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাথমিক অবস্থায় কাছের মানুষও বিনিয়োগ করতে ভয় পায় কিংবা এড়িয়ে চলেন। আবার সকলের তেমন বলার মতো কাছের মানুষও থাকেনা যাদের কাছে সে আর্থিক সাহাজ্য আশা করেন। আমি ও আমার স্ত্রী মিলে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলাতে চেষ্টা করতেছি।
মুনির হাসান– করনার এই সময়ে আপনার ব্যবসার বর্তমান অবস্থা? আপনি কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন?
অপূর্ব তালুকদার -আমি সবে শুরু করেছি এইতো চলতি মাসে ১১ তারিখ থেকেই যাত্রা করলাম।
মুনির হাসান– পন্য কিভাবে ডেলিভারি দিচ্ছেন?
অপূর্ব তালুকদার– ডেলিভারি সিস্টেম আপাততো নিজের লোক দিয়েই করাবো চিন্তা করছি। দু একটা কুরিয়ার কম্পানির সাথে প্রাথমিক আলাপ হয়েছে, আর একটু গুছিয়ে নিতে পারলে তাদের সাথে কাজ হবে আমাদের।
মুনির হাসান -সামনের দিনের নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?
অপূর্ব তালুকদার– পরিকল্পনা তো রয়েছেই। মেডিকেল ও হেলথকেয়ার পন্যের পাশাপাশি, শিশু খাদ্য ও প্রসাধনী, টেলিমেডিসিন এবং টেলিস্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করবে কেয়ার স্টোর। মোটামুটি আগামী পাঁচ বছরে একটা পূর্ণাঙ্গ হেলথকেয়ার চেইন হতে চায় কেয়ার স্টোর। যেখানে নিজস্ব আউটলেটের মাধ্যমে অফলাইন ও অনলাইনে দৈনিক ২৫০০ মানুষের সেবা নিশ্চিত হবে এবং ৫০ জনের স্থায়ী কর্মসংস্থান হবে কেয়ার স্টোরের সাথে।
মুনির হাসান– উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান?
অপূর্ব তালুকদার – এটাই বলা, শুরু করতে হবে যে কোন বয়সে এবং যে কোন অবস্থায়। ইচ্ছেটাকে প্রবলভাবে যত্ন করতে হবে, বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমাদের ইচ্ছেটাই আমাদের ক্ষুধা আর মানুষ দৌঁড়ায় ক্ষুধার তাড়নায়। আর একটা কথা কেউ চাকুরী করা মানে একটা কর্মসংস্থান আর কারোর উদ্যোগ গ্রহণ হলো হাজারও কর্মসংস্থান যদি সেটাকে একটা অবস্থায় দাঁড় করানো যায়। কেয়ার স্টোরের পক্ষ থেকে ই-হাটের জন্য শুভকামনা এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ককে ধন্যবাদ আমাদের এমন প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আপনাকেও ধন্যবাদ।
অপূর্ব তালুকদারে কেয়ার স্টোরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে