
বিশ্বজগতের স্বরূপ : গ্যালিলিও থেকে জাহিদ হাসান
আইনস্টাইনের ভাষায় দুনিয়ার সবচেয়ে অবোধগম্য বিষয় হলো এটি বোধগম্য! মজার বিষয় হলো গ্যালিলিওর হাতে আধুনিক বিজ্ঞানের পত্তন হওয়ার আগে পর্যন্ত মানুষ যে কোন ঘটনা বা বিষয়ের, এখন আমরা যা করি, সেরকম একটা আন্দাজভিত্তিক কোন ব্যাখ্যা দাড় করিয়ে দিত। গ্যালিলিও প্রথম দেখান এই কাজটা আসলে নানানভাবে করা যায়, তবে সবচেয়ে ভাল হলো সিস্টেমেটিক্যালি করা। যেমন উনি একটা বলকে একটা কাঠের পাটাতনে গড়িয়ে দিতেন। তারপর যতই উনি পাটাতনটাকে মসৃন করেছেন ততই একটা মজার বিষয় খেয়াল করলেন। দেখলেন পাটাতন যতো মসৃন, বল ততো দূরে যায়। এ থেকে উনি বের করে ফেললেন বল-গতিবিদ্যার প্রথম সূত্র। আবার তিনি পিসার হেলানো মিনার থেকে পড়ন্ত বস্তুর কাজ কারবার লক্ষ করলেন।
গ্যালিলিও যেবছর মারা যান সেবছরই ইংলন্ডে নিউটনের জন্ম। এ যেন রিলে রেস। গ্যালিলিওর বাটনটা নিউটনের হাতে। নিউটন ব্রিটিশ, জাত ব্রিটিশ। কাজে, যতোনা বেশি জোর দিলেন পরীক্ষায় তার চেয়ে বেশি জোর দিলেন সেটিকে ব্যাখ্যা করে লেখালেখির ব্যাপারটাকে অন্য মাত্রায় নেওয়ায়। গ্যালিলিওর আগে পৃথিবী কেন্দ্রিক যে দুনিয়ার চিত্র মানুষের সামনে ছিল, ততোদিনে সেটা বিদায় হয়েছে যদিও প্রাণ দিতে হয়েছে জিওদার্নো ব্রুনোকে। কেপলার এসে বিদায় করলেন টলেমির ৩৪ বৃত্তকে। ক্রমাগতভাবে সবাই বলতে থাকলেন, আসলে সত্য সহজ, এর মধ্যে জটিলতা কম। উপবৃত্ত ভাবলে আর ৩৪ বৃত্ত লাগে না। এর মধ্যে আবার গ্যাণ্জাম পাকালো আলো। এর ব্যতিচার হয় কাজে এ তরঙ্গ। কিন্তু আলোর-তড়িৎ ক্রিয়া? কাজে আবির্ভুত হোন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক। হাজির করেন কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। সেটিকে লুফে নেন এমন লোক যিনি কিনা শেষ বয়সে কেবল কোয়ান্টাম বিদ্যারই বিরোধিতা করলেন! কিন্তু, ঐ সুপারভাইজরবিহীন বিজ্ঞানীর হাতে একেবারে উল্টেপাল্টে গেল দুনিয়ার স্বরূপ (এ নিয়ে ডিসেম্বর বিজ্ঞান চিন্তার মূল রচনা)। আর গ্যালিলিওর মৃত্যুর তিনশ বছর পর জন্ম হকিঙের। উনি এখন আমাদের ভয় দেখান – কখনো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আবার কখনো বায়োলজিক্যালি মডিফাইড জীবের! বলছেন, উনি মানুষের মৃত্যু দেখতে পাচ্ছেন! আসলেই কী পাচ্ছেন।
বুড়ো আইনস্টাইন বুড়ো হওয়ার আগেই আমাদের সত্য বাবুর সূত্রের একটা ব্যবস্থা করেন। ফলে, জানা হয়ে যায় বোসন কণাগুলো কেমন আচরণ করে। কিন্তু মুরের ল’তো বলে দিচ্ছে ইলেকট্রনিক্স পৌছে গেছে তার সীমান্তে।
তাই চাই নতুন ইলেকট্রনিক্স কিংবা এমন কিছু যার মাধ্যমে মোবাইল ফোন একবার চার্জ করে ঘুরে আসা যাবে সুন্দরবন!
মানব জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ব্যাপারই হলো বিশ্বজগতের স্বরূপ অন্বেষন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সিজারদের বাসায় আমাদের এই অন্বেষন শুরু হয়েছিল যা এখনো চলমান। এই চলার পথে আমি খুঁজে পেয়েছি একদল বিজ্ঞানীকে যারা এই অন্বেষনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ইট কুড়িয়ে এনেছেন এবং সৌধ নির্মাণ করেছেন। এরা কেবল পশ্চিমের বিজ্ঞানী নন। এখানে রয়েছেন আমাদের রাঢ়ীখালের ছেলেটি, শ্যাওড়াতলির খালি পায়ের মেঘনাদ সাহাও।
অনেককাল আগে, ১৯৯৭-১৯৯৮ সালে দুনিয়াকে জানলো যাঁরা নামে একটা পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু প্রকাশের আগেই সেটি হাওয়া হয়ে যায়। বছর দুই-আগে কিশোর আলোর চাপে পড়ে আবার সেই অন্বেষন শুরু করি। তারই প্রথম খন্ড প্রকাশিত হতে পারে এবারের বই মেলায় এই লেখার শিরোনামে!