ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ ১৭ : বেচবো না কি বেচবো না
আগর পর্ব- ডেলিলিভারিং হ্যাপিনেজ ১৬ : গেট সেট গো
লেনি আমাদের সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চায় টাকার বিনিময়ে। এছাড়া লেনি আমাদের সাইটটি কেনার বিষয়েও কথা বলতে চায়! আমি আর সঞ্জয় রাজি হলাম এবং সপ্তাহান্তে সানফ্রান্সিসকো’তে তার সঙ্গে ডিনার করতে রাজি হলাম।
তারপর আমরা টনি রোমা রেস্তোরা চেইনে দেখা করলাম। লেনি তার ডাক নাম জানালো বিগফুট এবং বললো সেটাই তার কোম্পানিরও নাম। লেনী খুব সোজাসাপ্টা লোক। তার প্রস্তাবও তাই।
“এক মিলিয়ন ডলারে সে লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ কিনে নেবে। তারপরও আমাদের শেয়ার থাকবে এবং আমাদেরকে নিউইয়র্কে যেতে হবে যেন আমরা সেখান থেকে লিঙ্ক এক্সচেঞ্জকে চালাতে পারি। লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ হয়ে যাবে বিগফুটের”।
আমি আর সঞ্জয় পরস্পরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলাম। মাত্র পাঁচমাস বয়সী একটি ওয়েবসাইটের জন্য এক মিলিয়ন ডলার! এ তো জীবন পরিবর্তনের প্রস্তাব। আমরা চিন্তা করার জন্য লেনির কাছে থেকে কিছু সময় নিলাম। কিন্ত আমার মাথায় যে শব্দটি ঘোরাফেরা করছে সেটি হলো – ওয়াও!!!
পরের ২৪ ঘন্টা আমি আর সঞ্জয় অনেক কথা বললাম, চিন্তা ভাবনা করলাম। আমরা কী করবো?
আমরা জানতাম লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ আসলেই অনেক বিগ, বড়। কাতল মাছ টাইপ। কিন্তু তা বলে এক মিলিয়ন ডলার কিন্তু কম নয়। শেষ পর্যন্ত আমরা ঠিক করলাম নগদ দুই মিলিয়নে আমরা কোম্পানি বেচতে পারি। তাহলে আমরা প্রত্যেকে এক মিলিয়ন করে নিয়ে বাড়ি যেতে পারবো।
আমি কোথায় জানি পড়েছি নেগোশিয়নের সবচেয়ে ভাল পয়েন্ট হলো সেই প্রস্তাবটা যেটা মানা না মানায় কিছু যায় আসে না। তো আমরা দুই মিলিয়নের প্রস্তাব দিলাম।
কিন্তু লেনী এটা গ্রহণ করলো না। তার মতে আমরা দুই মিলিয়নের যোগ্য নই। আমি অবশ্য ভাবলাম ওর কাছে দুই মিলয়ন ডলার নাই। এত্তোটাকা! কাজে আমাদের আলোচনা ভেস্তে গেল। আমরা ঠিক করলাম আমরা আমাদের মতো আগাবো কিন্তু যোগাযোগও রাখবো। যাবার সময় লেনি বলে গেল এই লাইফ চেঞ্জিং প্রস্তাবটা আমরা নিলে ভাল করতাম। পরে একদিন আমরা পস্তাবো।
কী আর করা। আমি আর সঞ্জয় ঠিক করলাম আমরা লেনীকে ভুল প্রমাণিত করবো।
প্রতিদিন নতুন নতুন সাইট আমাদের এখানে যোগ দিচ্ছে। ফলে কাজও বেড়ে গেল। কাস্টোমারদের ই-মেইলের জবাব দেওয়া আর সাইটকে চালু রাখা। আমরা হিমসিম খেয়ে যাচ্ছি। দূর থেকে কোনো বন্ধু আমাদের দেখতে আসলে তাকে ই-মেইলের জবাব দিতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কম্পিউটার প্রোগ্রামারও দরকার।
আমার মনে পড়লো আমি কলেজে (আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়) থাকতে আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। তো, আমার একজন টিমমেট, হাদি, তার কথা মনে পড়লো। ভাবলাম ওরে প্রস্তাব দেই লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ যোগ দিতে।
কিন্তু হাদি রাজি হলো না। কারণ হাদি তখন কাজ করে মাইক্রোসফটে এবং সে সময় মাইক্রোসফট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার নামে একটা ব্রাউজার বানানোর কাজ করছে। সেটা ছেড়ে সে আসতে চায় না। তবে, টনি মনে করলে ওর জড়ুয়া ভাই-এর সঙ্গে কথা বলতে পারে। হাদির জড়ুয়া ভাই হাদির মতো দেখতে-শুনতে, চিন্তা ভাবনায় এবং হাদির মতোই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং পারে।
হাদির ভাই-এর নাম আলি। একদিন আমরা তাকে আমাদের এপার্টমেন্টে ডেকে আনলাম। কথাবার্তা বলার পর আমরা তাকে লিঙ্ক এক্সচেঞ্জের পার্টনার হতে বললাম। সে সানন্দে রাজি হলো।
আলি হলো আমাদের প্রথম ফরমাল এমপ্লয়ী কাম পার্টনার। আমরা সানফ্রান্সিসকোতে একটা সত্যিকারের অফিস নিলাম। তারপর আমরা ঠিক করলাম আমাদের বন্ধুদের হয় এমপ্লয়ী বা পার্টনার হিসাবে আমরা দলে নিবো।
ডিসেম্বর নাগাদ আমাদের ২৫ জন এমপ্লয়ী হয়ে গেল। এরা সবাই আমাদের তিনজনের বন্ধু বান্ধব। ঠিক সেই সময়ে আমরা একদিন একটা ফোন কল পেলাম।
ফোন করেছেন ইয়াহু!র সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেরি ইয়াং। ঐ বছরের শুরুতেই ইয়াহু! শেয়ার বাজারে প্রবেশ করেছে এবং হয়েছে বিলিয়ন ডলারের কোম্পনি। সেই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন?
কী বলতে চান জেরি ইয়াং?
পরের পর্ব : যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
[জাপ্পোসের সিইও টনি সেই-এর বিখ্যাত বই ও দর্শন সুখ বিতরণের কিছু অংশ আমি অনুবাদ করছি আমার মত করে, আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্য। এটি আক্ষরিক অনুবাদ নয়]
2 Replies to “ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ ১৭ : বেচবো না কি বেচবো না”