
ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-৫: মোডেমের নতুন দুনিয়া
হাই স্কুলে আমার প্রথম দিন সবসময় স্মরণ করতে পারি। আমি ভেবেছিলাম সবকিছু একদিনে কেমন পাল্টে যাবে কিন্তু আমি যখন সেখানে গেলাম তখন সেরকম কিছুই দেখলাম না! অথচ আমি কিনা বড় হয়ে গেছি!
হাইস্কুলে আমার একটা কাজ হল এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ানো। সেরকম একদিন স্কুল লাইব্রেরিতে ঘুরে বেড়ানোর সময় দেখলাম কোনায় একটি দরজা। আলাদা করে কখনো সেটা আগে চোখে পড়েনি। ভিতরে দেখলাম একটি কম্পিউটার ল্যাব। আলাপ হল কম্পিউটার সায়েন্সের টিচার মিজ গোরের সঙ্গে। মিজ গোরে আমাকে বরলেন আমি যেন তার প্যাসকেল ক্লাসে নাম লেখাই!
প্যাসকেল? সেটা আবার কী। এই কিম্ভুত নাম আমি আগে শুনিনি। মিজ বললেন প্যাসকেল হল একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা। এটি করলে পড়ে আমি নাকি জাতীয় এপি কম্পিউটার সায়েন্স টেস্টে ভাল করতে পারবো। এপি কী জিনিষ ঈশ্বর মালুম!তবে মনে হল এটি আমার কলেজে ভর্তিতে সাহায্য করবে। মিডল স্কুলে আমি নিজে কিছু বেসিক প্রোগ্রামিং শিখেছি এবং তা উপভোগও করেছি। কাজে আমি প্যাসকেল ক্লাসে নাম লেখাই আসলাম।
ক্লঅস শুরু হওয়ার পরেই আমি এর প্রেমে পড়ে গেলাম। আমার টিফিনের সময় আর স্কুল ছুটির পরের সময় কাটতে লাগল কম্পিউটার ল্যাবে। তখনো অবশ্য আমি জানতাম না দুই বছর পরে আমি সামার স্কুলে প্যাসকেলের প্রশিক্ষক হব। ল্যাবে আরো কয়েকজন রেগুলার ছাত্র ছিল এবং তাদের সঙ্গে আমার ঘন্টার পর ঘ্টা কেটে যেত।

আমাদেরকে বিবিএস নামে একটা কিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হর। বিবিএস হল বুলেটিন বোর্ড সার্ভিস। ল্যাবের একটা কম্পিউটারের সঙ্গে একটা মোডেম লাগানো ছিল যা কিনা আবার টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত।মানে এই মোডেম দিয়ে ঐ কম্পিউটারটি অন্য কম্পিউটারকে ডায়াল করতে পারতো এবং সেগুলোর সঙ্গে বাৎচিৎ করতে পারতো। লোকাল কল করে আমরা বিভিন্ন কম্পিউটারের বিবিএসে যুক্ত হতাম। বিবিসে মেসেজ দেওয়া যেত, বিজ্ঞাপনের সুযোগ ছিল আর ছিল ডাউনলোডের সুবিধা। আর করা যেত আলোচন বা বিতর্ক।

কিছুদিনের মধ্যে আমরা জেনে গেলাম লোকাল কলের বাইরেও কল করা যায় এবং আমরা তা করতে শুরু করলাম। সিয়াটল, মায়ামি কিংবা নিউইয়র্কের অপরিচিত লোকের সঙ্গে চ্যাট করা যে কত উত্তেজনার তা কেমন করে বুঝাই!
আমাদের সামনে এক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়ে পড়ল যা কিনা কয়েকদিন আগেও আমা জানতাম না।
একদিন আমাদের মধ্যে কেও একজন বললো মডেমের লাইনটা খুলে সেখানে যদি একটা আসল টেলিফোন লাগানো হয় তাহলে কেমন হয়? একদিন টিফিন টাইমে যকন মিজ গোরে ছিলেন না তখন আমরা এই কাজটা করলাম এবং অবাক হয়ে দেখলাম টেলিফোনে ডায়াল টোন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বুজলাম আমরা যেকোন জায়গায় ফোন করতে পারি। কিন্তু কাকে করবো?
কেও 976 সম্পর্কে জানে কী না। টেলিভিশনে দেখা যায় এর পরে যেমন 976-JOKE এই নম্বরে ফোন করে কৈতুক শোনা যায়।
পরের দিনগুলোতে আমাদের কাজ ছিল এরকম নানান নম্বরে ফোন করা। সেই সময় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবচেয়ে ভাল হয়েছে কীভাবে বয়স বাড়িয়ে বলতে হয়!
কয়েকদিন পর যখন স্কুলে টেলিফোন বিল আসলো তখন মিজ গোরে জানতে চাইলেন আমরা কেও 976-7933 এ ডায়াল করেছি কী না। কারণ বিলে নাকি বলা হয়েছে মডেমের লাইন থেকে বিগত মাসে ৩০০ কল হয়েছে এই নাম্বারে।
উনি জানালেন যে উনি নিজে ঐ নম্বরে মোডেম দিয়ে ডায়াল করে দেখেছেন কিন্তু ঔ পাশে কোন কম্পিউটার নাই!
আমাদের তো স্বীকার করার কোন উপায় নাই। আমরা অবাক হয়ে পরস্পরের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
মিজ জানালেন উনি কম্প্লেইন করবেন বিল সম্পর্কে!
আমর আমরাও বুঝে গেলাম লাঞ্চ আওয়ারে আমাদের কম্পিউটার ল্যাবে আসা খতম!
পরের পর্ব - মুনাফার সন্ধানে – প্রোগ্রামিঙের বাইরে
2 Replies to “ডেলিভারিং হ্যাপিনেজ – মুনাফার সন্ধানে-৫: মোডেমের নতুন দুনিয়া”