আমার বইমেলা ২০১৯-৩: সম্ভাবনার স্বপ্নযাত্রা -ভার্সিটি পড়ুয়াদের পড়তেই হবে

Spread the love

আমার বইমেলা ২০১৯-২: সফল যদি হতে চাও – হিউম্যান ডুয়িং নয়, হিউম্যান বিইং

কাজি হাসান রবিনকে আমি চিনতে শুরু করেছি কয়েক বছর হলো। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত নানা আয়োজন, বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির শিশু কিশোর বিজ্ঞান কংগ্রেসের বিচারক কিংবা তারুণ্যের জযোৎসবের পরিকল্পনা মিটিং – ডাকলেই তাঁকে পাওয়া যায়।
গণিত অলিম্পিয়াড করার শুরুর দিকে আমি অনেক স্যারের পিছন ঘুরতাম বই লেখানোর জন্য। কিন্তু খুব সহজে কেউ রাজি হতেন না। পরে আমি কৌশল পরিবর্তন করে আমাদের একাডেমিক টিম, কাউন্সিলর, আইএমও পার্টিসিপেন্ট সবাইকে লিখতে শুরু করি। শুরুর দিকে আমাকে প্রকাশকদের কাছে বলে দিতে হতো। এখন প্রকাশকরাই ওদের খুঁজে বের করে।
আমার নিজের ধারণা হলো দেশে কোন একটা কিছুর ভাল ভিত্তি তখনই করা যায় যখন এ নিয়ে অনেক অনেক বই লেখা হয়। আল্লাহর রহমতে গণিত অলিম্পিয়াড লাইনে ওঠার পর একন আমি অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে শুরু করেছি আর একটি বড়ো আয়োজন – তারুণ্যের জয়োৎসব। আমি জানি আমাদের তরুণদের ঠিক লাইনে তুলে দেওয়ার জন্য আমাদের শতো শতো বই লিখতে হবে এবং সেগুলো লিখতে হবে তরুণদেরই।
তারুণ্যের জয়োৎসবের প্রথম পরিকল্পনা বৈঠক শেষে রবিনকে তাই বললাম নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বই লিখতে শুরু করে দাও। চিন্তার কিছু নেই। “পথে নামলেই পথ চেনা যাবে”।
তো, সেই বইটা কাজি হাসান রবিন লিখে ফেলেছে এবং সেটি এখন বই মেলাতে পাওয়া যাচ্ছে।  বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের জন্য এটিকে একটি জীবন সাজানোর গাইডলাইন বলা যায়। প্রতিটি বছরকে তিনভাগে ভাগ করে কোন ভাগে কী কী করতে হবে সেটা এই বই-এর উপজীব্য। ঠিক এ জায়গায় এসে আপনি বুঝে ফেলবেন কাজি হাসান রবিন কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং সমস্যাকে ভেঙ্গে ছোট করে আলাদা আলাদা করে সমাধান করাটাই তার বৈশিষ্ট্য।
প্রতিটি ভাগে কী করতে হবে, কিসে জোর দিতে হবে সেগুলোই বলা হয়েছে।‘সম্ভাবনার স্বপ্নযাত্রা’ মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণদের জন্য লেখা।

রবিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেই খুব কাছে থেকে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো দেখেছে। একজন তরুণ শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন শেষে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের শুরুতে যে বাঁধাগুলোর সম্মুখীন হয় তার মধ্যে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা ও সমকালীন জ্ঞানের অভাব এই চারটিকে লেখক অন্যতম বাঁধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং পুরো বইতে এই চারটি বাঁধা কাটিয়ে উঠার উপায়গুলো ধাপে ধাপে বাৎলে দিয়েছেন।
একজন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরো সময়টার প্ল্যানিং এবং এক্সিকিউশন কেমন হতে পারে তার একটা বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা এই বইতে পাওয়া যাবে। বইয়ের প্রতিটি পরিচ্ছেদের শেষে কিছু টাস্ক কমপ্লিশনের নির্দেশনা আছে, এই কারণেই বইটি শুধু একবার পড়েই শেষ তা নয়, বরং পাঠকের আত্ম-উন্নয়নের শুভ চেষ্টার সাক্ষী হয়ে থাকবে বইটি। দেশীয় লেখকদের লেখা আত্ম-উন্নয়নমূলক ক্যাটাগরির বইগুলোর মধ্যে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে এই বইটি। বইটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল প্রতিটি পরিচ্ছেদের শেষে পড়ার জন্য ঐ পরিচ্ছেদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি বই রেকমেন্ড করা হয়েছে। পুরো বইতে মোট ১২টি পরিচ্ছেদে ১৩টি বই রেকমেন্ড করেছেন লেখক (শেষ পরিচ্ছেদে ২টি) এই বইগুলোর অধিকাংশই দেশীয় লেখকদের বই আর বাকী বইগুলো বিদেশী লেখকদের। নিজের বইতে দেশীয় অন্যান্য লেখকদের এভাবে প্রোমোট করার ভাবনাটা সাধুবাদ যোগ্য।

এই বই-এর দ্বিতীয় ধাপেই রবিন আমার পড়ো পড়ো পড়ো বই-এর কথা বলেছে। সম্ভবত এতো সংক্ষেপে আমার পড়ো পড়ো পড়ো বই-এর এতো ভাল বিবরণ আর কেউ লিখতে পারে নাই। 😛

সম্ভাবনার স্বপ্নযাত্রা
কাজি হাসান রবিন
ছায়াবীথি
মূল্য ১৬০ টাকা।

(বইমেলার ২১৬-২১৭ নং স্টলে)

One Reply to “আমার বইমেলা ২০১৯-৩: সম্ভাবনার স্বপ্নযাত্রা -ভার্সিটি পড়ুয়াদের পড়তেই হবে”

Leave a Reply