অভিনন্দন বাংলাদেশ
১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তানকে এখান থেকে খেদিয়েছি। তার আগে আমরা পাকিস্তানের একটা অংশ ছিলাম। পশ্চিম পাকিস্তানের লোকেদের একটা কাজ ছিল আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের সুখ ভোগ করা। নানানভাবে তারা সেটি করতো। সব সরকারি চাকরি সুযোগ সুবিধা ছাড়াও ১৯৭১ সালের শুরুতে পশ্চিম পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০ ভাগ আসতো শিল্প থেকে আর আমাদের মাত্র ৬-৭%। এর মানে হলো কল-কারখানা সব ওখানে। তার কিছুদিন আগে, ৭০ সালে প্রলংকরী ঘুর্ণিজড় আমাদের উপকূলকে তছনছ করে দিয়েছে। পশ্চিমারা আমাদের পাশে এসে দাড়ায়নি।
তারপর মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে আমরা হারিয়েছি ৩০ লক্ষ মানুষ, আমাদের বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবঙ তারপর আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে উঠে দাড়াতে শুরু করি। তারপর ১৯৭৫ সালে আমাদের সেই উঠে দাড়ানোকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও বাঙ্গালি আবার মাথা তুলে দাড়াচ্ছে এখন। এর সর্বশেষ হিসাবে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের মাথা পিছু আয়কে ছাড়িয়ে গেল!
হিসাব বলছে এখন বাংলাদেশে মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন (GDP per person) ১,৫৩৮ ডলার আর পাকিস্তানের ১,৪৭০ ডলার!
বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির এই মাইরফলক আমরা আনন্দের সঙ্গেই উদযাপন করতে পারি। গত ১০ বছর ধরে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬% এর বেশি এবং গত দুই বছর এটি প্রায় ৭%। ডিজিপিতে আমাদের শিল্পের অবদান ৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৯%। এ সময় আমরা বিদেশীদের পুরাতন কাপড় পড়তাম, সবাইকে আচ্ছাদিত করতে পারতাম না। আর এখন বাংলাদেশের তৈরি পোষাক রপ্তানীর পরিমাণ ভারত ও পাকিস্তানের সম্মিলত তৈরি পোষাক রপ্তানীর চেয়ে বেশি।
আর এসবই সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, সাধারণ মানুষের এগিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছা আর আগ্রহে।
অভিনন্দন বাংলাদেশ।
জয় বাংলা।
(সূত্র ইকোনমিস্ট, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭)