আয় আয় আয় গণিতের আঙ্গিনায়…
আবার শুরু হতে যাচ্ছে আমাদের প্রাণের উৎসব। এখন ২৪টা জায়গায় আঞ্চলিক উৎসব করতে হয়। যারা ভেতরের খবর জানে তারা জানে কাজটা মোটেই সহজ নয়।
২৪ জায়গায় ২৪টি স্কুলকে রাহী করাতে হয়। তারপর দেখা যায কোন একটা স্কুলে ঐদিন কোন একটা প্রোগ্রাম বা পরীক্ষা পড়ে যাচ্ছে। তখন আবার সেটা শিফট করতে হয়। এখন একটা জায়গা চেঞ্জ হরে অন্য জায়গাগুলোতে টান পড়ে। কারণ গণিতের গাড়িটা একদিক হয়ে আর একদিকে যায়। যেমন এবার একটা দল শুরু করবে বগুড়া থেকে, রংপুর, দিনাজপুর হয়ে সিরাজগঞ্জ। তারপর ঢাকায় ফিরবে।
আর একটা দল যাবে রাজশাহী। সেখান থেকে কুষ্টিয়া হয়ে যশোর। তারপর যাবে যশোর থেকে খুলনা। তারপর ফেরার পথে ফরিদপুর। এবার একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটা হল বিভাগীয় শহর ছাড়া বাকী শহরগুলোতে উৎসব ঘুরতে থাকবে। যেমন ফরিদপুর আর রাজবাড়ি। এক বছর ফরিদপুরে পরেরবছর রাজবাড়িতে। আবার পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও আর দিনাজপুর পাবে তিন বছর পর পর।
আবার কোন কোন জায়গাতে আমাদের পক্ষে উৎসবের এন্তেজাম করা সম্ভব নয়। কারণ হল অবকাঠামো। আমাদের ব্যবস্থাপনা স্পন্সর হল প্রথম আলো। কোন জায়গায় যদি প্রথম আলোর প্রতিনিধি বা অফিস না থাকে তাহলে আমাদের পক্ষে নোঙ্গর করাও মুশ্কিল।
তো, ভ্যেনু ঠিক হয়ে যাওয়ার পর শুরু করতে হয় রেজিষ্ট্রেশনের হাঙ্গামা। বেশিরভাগ জায়গাতে এখন দ্রুততার সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন শেষ হয়ে যায়। এই হাঙ্গামের পুরোটা যায় স্থানীয় বন্ধুসভার ওপর দিয়ে।
প্রতিবছর রেজিস্ট্রেশনের সময় আমার প্রথম বারের কথা মনে হয়। আমি আর স্বপ্না বাসায় বাসায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে এনেছিলাম, অভিভাবককে বলেছিলাম নিজ দায়িত্বে পৌছে দেব। অনেক বছর ধরে আমরা শুনছি কেন আমরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করি না। উত্তরটা সোজা – লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড এনশিওর করার জন্য।
যখন আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে রেজিস্ট্রেশনের চাপ তখন ঢাকায় থাকে টি-শার্ট থেকে শুরু করে নাস্তার বিস্কিট আর জুস ফাইনাল করার কাজ (আজকে আমরা টেস্ট করে এগুরো ফাইনাল করেছি)।
প্রশ্ন? সবচেয়ে কঠিন কাজ। প্রতিবছরই আমরা প্রশ্নগুলো পাবরিশ করে ফেলি। তাহলে আমাদের নিশ্চিত হতে হয় নতুন প্রশ্নের। কাজটা যারা করে এই সময় তাদের দিকে তাকানো যায় না। তারপরও একটা কিছু গতি হয়।
এরপর শুরু হয় অগ্রবর্তী দল, মুল দলের যাতায়াতের সবকিছু ঠিক করা। এটা এখন খুবই কঠিন কাজ। ওমন সব লোকেদের পেতে হয় যারা টানা ৪/৫দিন একটা অঞ্চলে যাবেন। আমার তো দায়, যেতে হবেই। সোহাগও যায় একটাতে। আগেরবার সুবিন ছিল। এবারতো সুবিন নাই। সুব্রত কিংবা অভীকও নাই। তাহলে কেমন করে সবকিছু হবে।
নতুন স্যারও আমরা খুব একটা পাই না। অনেকে যুক্ত হতে চান কিন্তু সেটা কেবর ঢাকার উৎসবে বা জাতীয়তে। কাওকে কাওকে এটা বোঝানো অনেক কঠিন হয় কেমন করে আমারে বিভাগীয় পর্যায়গুলো ভাল হবে।
তো, এভাবে আমাদেরকে আগাতে হয়। এই সময় গাড়িতে কে যাবে, বাসে কে যাবে, কে কোথা থেকে যাবে এগুলো প্ল্যান করাটা একটা বড় মুশ্কিলের কাজ।
তারপর হল উৎসবের দিন। খাতা দেখা রেজাল্ট দেওয়া। তার আগে আবার সব মাল-মসলা পাঠাতে হয় ঢাকা থেকে। ২৩ জায়গাতে কুরিয়ার করে হয়। গতবছর কুরিয়ার করতে গিয়ে দেখা গেল টি-শার্ট এসে পৌছায়নি। কী মুশ্কিল!!!
এরকম নানান অভিজ্ঞতা প্রতিবছর হতে থাকে।
১/১১-এর পরের দিন আমাদের ২০০৭ এর উৎসব শুরু হয়েছিল। খালেদার অবরোধের মধ্যে আমরা গেলবারের উৎসব করেছি।
আর সবচেয়ে বেশি পাই আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার আনুকল্য। তার অনুগ্রহে কেমনে কেমনে এত বগ আয়োজনটা হয়ে যায়। আলহামদুলিল্লাহ। এই বছর ভাবছি আমি জার্নালের বেশিরভাগ অংশই প্রকাশ করে দেব। দেখা যাক কী দাড়ায়।
সবার জীবনের সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।