বইমেলার বই ৮ : ও বাই আঁরা চাটগাঁইয়া নওযোয়ান

Spread the love

গুম যাই কাজা গইজ্জি ফযর
এত্তেও ন উঠি যেত্তে যোওর
এলায় আর কে)লায় গেইয়ি আছর
মইরবর ওই উনি আযান
নামায ফ)ইরতে যাছো না ওডা
জামাতোত আইজু আছে জাগা।

 

আমি চট্টগ্রামের সন্তান এন্ড প্রাউড টু বি অ্যা চাটগাঁইয়া। আমাদের ভাষা নিয়েও আমার অনেক গর্ব। বিশেষ করে চাটগাঁইয়া ভাষার ক্রীড়াপদগুলোর বেশিরভাগ মনোসিলেবিক। সে কারণে ব্যাপারটা বেশ আনন্দের। তবে, চাটগাঁইয়া ভাষার সবচেয়ে মজার এবং গর্বের বিষয় সম্ভবত দুটো। একটা হলো আদরের ভাষা। “কইলজ্যার বি)তর ব) ান্ধি রাইকখুম তোয়ারে, ও ননাইরে” এরকম মধুর ভাষা আর কোথায় আছে? চাটগাঁইয়া ভাষার আর একটি স্বাচ্ছন্দ্য হলো গালি দেওয়ার শব্দ ভান্ডার ও তার ব্যবহার। এটিরও কোন তুলনা নাই।

বেশ অনেক বছর আগে বাংলা একাডেমি একবার আঞ্চলিক ভাষার অভিধানের কাজ শুরু করেছিল। কতদূর আগিয়েছে তা জানি না। কিন্তু সেদিন প্রথম আলোতে বইমেলার খবর দেখতে গিয়ে দেখলাম চাটগাঁইয়া-বাংলা-ইংরেজি অভিধান প্রকাশ করেছে কারা জানি। তাড়াতাড়ি মেলায় গিয়ে সেটি কিনেও এনেছি।
লেখক অনেক যত্ন করে এই অভিধানটি তৈরি করেছেন প্রায় ১৭ বছর খাটাখাটনি করে। নিষ্ঠার সঙ্গে কয়েক হাজার শব্দ, সেটির বাংলা প্রতিশব্দ ও ইংরেজি অর্থও প্রকাশ করেছেন। মহৎ কাজ। তবে, উনি এই ভাষাকে আঞ্চলিক ভাষা বলেছেন। যদিও চট্টগ্রামের ভাষা একটি আলাদা ভাষা। এটি মোটেই বাংলা ভাষার আঞ্চলিক রূপ নয়।

লেখক আর একটি কাজ করেছেন। চাটগাঁইয়া ভাষার লিপি এখন আর খোঁজে নাই। তবে, আমি আমাদের বাড়ির পুকুর ঘাটে একটি উৎলিপি দেখেছি যেখানে “ঘ” বর্ণটি একটু অন্যরকম। এমনকী “ম”ও। এতে মনে হয় এ ভাষার আলাদা লিপিও ছিল। খুঁজতে হবে।
তবে লেখক মাহুবুবল হাসান কিছু প্রস্তাব করেছেন।
এই ভাষায় কিছু বর্ণ আছে যেগুলো আসলে ক আর খ মানে অল্প প্রাণ আর মহাপ্রাণের মাঝখানের। এই বর্ণগুলো আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। তাই লেখক এগুলো প্রস্তাব করেছেন।

ক, খ এর মাঝখানের বর্ণ হিসাবে ) ব্যবহার করা হয়েছে। সেরকম ) ইত্যাদি

আবার দীর্ঘ উচ্চারণ বোঝানোর জন্য সুপারস্ক্রিপ্টে “=” এর ব্যবহার। যেমন অবা=

আগামী বছর বাংলা ভাষার বিখ্যাত কিছু কবিতা আমি চাটগাঁইয়া ভাষাতে অনুবাদ করবো বলে ঠিক করে রেখেছি (একটি নমুনা শুরুতে আছে)।
এই বইটা তাই আমার খুব কাজে লাগবে।

বইটির প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকেশন
মূল্য ৭০০ টাকা।

 

Leave a Reply