স্কুলের জন্য স্কুল
আমাদের দেশের প্রায় তিনকোটি ছেলে-মেয়ে সবসময় শিক্ষার্থী থাকে। এরা প্রায় ১১/১২ রকমের শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে সার্টিফিকেটের জন্য লড়ে। শিক্ষা পদ্ধতির ব্যবধান ছাড়াও ধনী-গরিব, শহর গ্রাম তস্যগ্রামের বিভেদও জটিল। তারপরও আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের অসামান্য মেধা, শ্রম আর উৎসাহ দিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যায়।
প্রতিবছর এসএসসি/এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পর অনেক অদম্য মেদাবীর খবর আমাদের সামনে আসে। আমরা অনেক স্কুলের কথাও জানতে পারি যেখানে সেই অর্থে শিক্ষার উপকরণ বরতে কেবল পাঠ্যপুস্তকই ভরসা! কম্পিউটার বা ল্যাবের কথা বাদ দেই। এমনকী ব্ল্যাকবোর্ড বা বড় আকারের চার্টও থাকে না। স্কুলে কোন ভাল ঘড়ি নেই। একেক ঘন্টা একেক স্যারের ঘড়ি দেখে বাজানো হয়। টয়লেট বা সুপেয় পানির কথা না হয় নাই বললাম।
অন্যদিকে ঢাকা শহরে এমন অনেক স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে শিক্ষার্থীরা কেবল বার্গার খেয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। আমার হিসাবে মহাখালি মোড় থেকে বনানী এবং গুলশান হয়ে বসুন্ধরার নর্থ সাউথ, আইইউবি পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে যতগুলো ফার্স্টফুডের দোকান আছে সেখানে প্রতিদিন ২০ লাখ টাকার মতো বার্গার বিক্রি হয়ে থাকে।
প্রশ্ন হল এই দুই মেরুর মধ্যে কী কোন ব্রিজ করা সম্ভব।
রুবাই-বিদুষী যে স্কুলে পড়ে এ্যানা বারহার্ড নামে এক ব্রিটিশ ম্যাশামেটিশিয়ান সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে একটা পদ্ধতি শিখেছি।
ওদের জুনিয়র সেকশনে স্পেলাথন (বানানের পরীক্ষা) হয়। প্রত্যেক স্টুডেন্টকে তার বাবা-মা কিংবা অন্য আত্মীয়স্বজন স্পন্সর করতে পারে। মানে হল রুবাই যে কয়টা শুদ্ধ বানান করতে পারবে স্পেলাথনে তার জন্য আমি বা ওর মা নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে পারবো (কমে ২ টাকা প্রতি বানান)। আমি দেখলাম অনেক বিত্তশালী বাবা/মা/মামা কিংবা চাচা প্রতি বানানের জন্য ১০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত স্পন্সর করে। ওরা এটি প্রতিবছর করে। এভাবে স্পন্সরশীপের মাধ্যমে যে টাকাটা পাওয়া যায় সেটি ওদের স্কুল দিয়ে দেয় ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনকে। অনেকেই জানেন ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করেন। এরকম আরো উদ্যোগ হতে পারে।
সম্প্রতি এমন একটি উদ্যোগের সঙ্গে আমি যুক্ত হয়েচি যার ট্যাগ লাইন হল – স্কুলের জন্য স্কুল। আইডিয়াটা খুব সিম্পল।
আমরা একটা কুইজ প্রতিযোগিতা করবো যেখানে ঢাকার প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলো অংশ নেবে। কোজিটো মার্কেটিং সলিউশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান ওরেল ইনিশিয়েটর নামের এই অনুষ্ঠানের আয়োজক। কুইজাররা প্রতিটি কুইজের সঠিক উত্তরের জন্য নির্দিষ্ট হারে প্রাইজ মানি পাবে। একটি নিউক্লিাস মাউন্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই প্রাইজমানি স্পন্সর করতে রাজি হয়েছে। আর ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি প্রতিটা প্রতিযোগিতা টেলিভিশনে প্রচার করবে। প্রতি পর্বে একটি স্কুল ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জিততে পারবে। তবে, জেতা প্রাইজমানিটা পাবে এমন একটি স্কুল যারা টাকাটা কাজে লাগাতে পারবে। হয়তো বা একটা টিউবওয়েল বসাতে পারবে কিংবা পারবে একটা ব্ল্যাকবোর্ড কিনতে। স্কুল লাইব্রেরির আলমিরাটা ঠিক করানো দরকার কিংবা কিছু নতুন বই। খুবই ক্ষুদ্র সাহায্য কিন্তু তাতেই হয়তো অনেকের স্বপ্ন প্রসারিত হবে।
আমরা ঠিক করেছি, যখন এই প্রতিযোগিতা টিভিতে প্রচার হবে তখন আমরা সবাইকে ম্যাচিং/সেলফ গ্র্যান্টেরও আহবান জানাবো।
হয়তো যে স্কুলের জন্য ভিকারুন্নিসার মেয়েরা খেলবে সেই স্কুলের পাশেই হয়তো আপনার বাড়ি,আপনার দাদা হয়তো সেই স্কুলে পড়েছেন, আপনার ছেলেবেলার অনেকখানি ঐ স্কুলের মাঠে কেটেছে। আপনি যখন ছুটিতে বাড়ি যেতেন তখন কোন এক দুপুরে ঐ স্কুলের ছাদে বসে হয়তো ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে আম কুড়ানোর গল্প করতেন।
একন আর গ্রামে যেতে পারেন না। নিউইয়র্ক কিংবা ঢাকা শহরের তুমুল ব্যস্ততা আপনাকে আস্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে।
আমরা আপনাকে ঐ স্কুলের পাশে দাঁড়াতে বলবো। বলবো, আসুন আমরা ওদের একটা টিউবওয়েল বসিয়ে দেই কিংবা লাইব্রেরিতে কিছু বই কিনে দেই।
প্রথম পাইলটে আমরা ২৪টি স্কুলের জন্য প্রোগ্রাম করবো। এখন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আশা করছি, সবাই সহযোগিতা করলে, এই কার্যক্রমকে অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবো।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
One Reply to “স্কুলের জন্য স্কুল”
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
Dear sir,its really a tremendous initiation.we are running a school in slum located in kallyanpur,mirpur Dhaka.we have 30 students all are from slum & underprivileged family.we conduct classes on basic subjects & drawing class,drama class on Friday.we also conduct juvenile filament show on Friday. As we are students it is difficult for us to run the school & continuing this type of program. We hope you will consider our problem.how we will contribute in this program.
Sincerely yours
Shekh Md moinul
On behalf of Human Aid Bangladesh
Cell-01911253195