অল এবাউট ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স – সালতামামী
গত ২৬ থেকে ২৯ জুলাই আমরা একটা চারদিন ব্যাপী ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স পরিচালনা করেছি। এই কোর্সটি পরিচালনার পেছনে আমার দুইটা উদ্দেশ্য ছিল :-
- অনেকেই ইদানীং অভিযোগ করেন এখন ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বা বুস্ট করে আগের মতো ফলবফল পাওয়া যায় না। এরকম অভিযোগকারী কয়েকজনের সঙ্গে আমি বিস্তারিত আলোচনা করে টের পেয়েছি অনেকেই যথাযথভাবে বিজ্ঞাপন তৈরি বা প্রচার করেন না, টার্গেটিং ও রিটার্গেটিং নিয়ে ভাবেন না এমনকী বুস্ট করার আগে কেন বুস্ট করছেন সেটাও ভাবেন না। নিজে কিছু পড়াশোনা করে মনে হল এ বিষয়ে কিছু পথ-নির্দেশিকা দিলে হয়তো সেটা কারও কারও কাজে লাগবে।
- দ্বিতীয়ত দেখলাম আমাদের অনেকেই যতোটা মনোযোগ দিয়ে কীভাবে করতে হবে শিখতে চান তার সিকিভাগ সময়ও স্ট্রাটেজির পেছনে দিতে চান না, কাস্টোমার চেনার পেছনে সময় দিতে চান না কিন্তু অভিযোগ করার সময় বলেন প্রতিদিন আমার সাইটে কয়েকহাজার ভিজিটর আসেন কিন্তু ১%ও কনভার্ট করে না। এসব নিয়ে আরও খোলাখুলি আলোচনা করা।
তো, এই কোর্সের টার্গেট অডিয়েন্স ছিল প্রধানত উদ্যোক্তা যারা নিজেদের মার্কেটিং নিজেরা করেন কিংবা যারা মার্কেটিং করার পরিকল্পনা করছেন। সব কিছুকে টার্গট না করে আমরা শুধু ফেসবুকে শুরু করার কথা বলেছি।
এই কোর্স করানোর জন্য এমন একজনকে খুঁজেছি যে কিনা অনেকদিন ধরে এই কাজটাই করেন। তো, আমাদের আহবানে সম্মত হোন ডিজিটাল মার্কেটার জারিফ হাসান। জারিফ চারদিনের যে কোর্সটা প্ল্যান করে সেটাতে ছিল
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কৌশল বানানো এবং নিজের পেজ তৈরি করা
- বিজনেস ম্যানেজার ও বিজনেস স্যুট সম্পর্কে জানা
- টার্গেটিং ও রিটার্গেটিং-এর কৌশল ও পদ্ধতি
- এডসেট ও এড বানানো।
যেমনটা আমরা ভেবেছি তাদেরকেই আমরা পেয়েছি।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭০% ছিলেন উদ্যোক্তা।
এদের মধ্যে ৬৭% গত একমাসে কোন বুস্ট করেননি। যারা নিয়মিত বুস্ট করেন তাদের গড় বাজেট ২১-৫০ ডলার।
আবার যারা বুস্ট করেন তাদের চারজনের তিনজনই পেজ থেকে বুস্ট করেন বা বিজনেস ম্যানেজার ব্যবহার করেন না। বেশিরভাগই ক্যাম্পেইন চিন্তা না করে বুস্ট করেন।
টার্গেটিং-এর ব্যাপারে তাদের উত্তর নিচের চিত্র থেকে পাওয়া যাবে।
চারদিনের কোর্সের একটি সামারী জারিফের লিংকডইন আর্টিকেল থেকে পাওয়া যাবে।
১. প্রথম পর্ব
২. দ্বিতীয় পর্ব
৩. তৃতীয় পর্ব
৪. চতুর্থ পর্ব।
এছাড়া এ/বি টেস্টিং নিয়ে জারিফের একটা পোস্ট দেখা যাবে এখান থেকে।
অনেকগুলো বই নিয়ে কথা হয়েছে। Ultimate guide to facebook advertising: how to access 1 billion potential customers in 10 minutes বইয়ের কথা এসেছে। সেটির পিডিএফ ইন্টারনেটে পাওয়া যায় সেখান থেকে খুজে নিতে পারেন। না হলে এখানে আমাকে জানাতে পারেন। আমি একটা লিংক পাঠিয়ে দেবো।
আরও অনেক বই আছে। বাংলাতেও কয়েকটি বই বের হয়েছে। তবে, এখনও আমি কোনটি পড়িনি বলে সাজেশন দিচ্ছি না। পড়া হলে আশাকরি বলতে পারবো।
যে কোন কোর্সের সাফল্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সেটা ঠিকমতো করতে পারা যার পুরোটাই শিক্ষার্থীদের ওপর।
আমি মোটামুটি এই কোর্সের লেসন লার্নের একটা তালিকা করেছি। সেটা এরকম –
১. ফেসবুক মার্কেটিং-এর শুরুতে আমাদের একটা স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল ঠিক করে নিতে হবে। এর জন্য সিস্টেম্যাটিক্যালি কিছু প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানতে হবে, যেমন কাস্টোমার কে, সে কী খায়, কী পরে, কোথায় থাকে, কোন সময় ফেসবুকে ঘুরঘুর করে ইত্যাদি। এরকম কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা হলে আমাদের কৌশল প্রণয়ন বিজ্ঞান সম্মত হবে।
২. ফেসবুকের প্রোফাইল থেকে কোন এড দেওয়া যায় না। কাজে আমাদের বিজনেস পেজ থাকতে হবে। না থাকলে সেটা ক্রিয়েট করতে হবে। এখন ফেসবুক পেজে অনেক নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। যাদের পেজ আছে তাদের এই নতুন কিছুতে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে নতুন কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা।
৩. এড পেজ থেকে সরাসরি বুস্ট করে যেমন দেওয়া যায় তেমনি সেটি বিজনেস ম্যানেজার বা সাম্প্রতিক রোল আউট করা বিজনেজ স্যুট থেকেও করা যায়। কিন্তু যদি আমরা ফেসবুক এড থেকে সর্বোচ্চ ফায়দা পেতে চাই তাহলে আমাদের বিজনেস ম্যানেজার/স্যুট ব্যবহার করতে হবে। এতে একসঙ্গে অনেক পেজ ম্যানেজ করা যায় আবার অনেক কিছু করা যায় যা কিনা
৪. সাধারণ বা হরেদরে এড না দিয়ে নিজের লক্ষ্য স্থির করে টার্গেট করতে হবে। যতো ন্যারোলি আমরা সেটি করতে পারবো ততো আমাদের কনভার্সন বা সাকসেস বেশি হবে। টার্গেটিং-এর খুঁটিনাটি সঠিকভাবে জেনে আমাদের তা প্রয়োগ করতে হবে।
৫. মার্কেটিং-এর একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলো রিটার্গেটিং করা। এটি তখনই করা সম্ভব যদি আপনার ফেসবুক পেজ ছাড়াও ওয়েবসাইট থাকে। ওয়েবসাইটে পিক্সেল সেট করে এই কাজটা করা যায়। কাজে রি-টার্গেটিং করতে হলে আপনার অবশ্যই ওয়েবসাইট থাকতে হবে।
৬. এড দেওয়ার আগে সেটির উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং কাঙ্খিত ফলাফল সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
৭. নিয়মিত এডের পারফরম্যান্স চেক করতে হবে। স্যোসাল প্রুফ বাড়াতে হবে।
৮. সর্বোপরি নিজেকে সবসময় হালনাগাদ রাখতে হবে। এ জন্য সাতটি ওয়েবসাইটকে ফলো করা যেতে পারে
৯. ফেসবুকে এড দেওয়ার সময় আমাদের সাতটি অমনোযোগের ঘটনা দেখা যায়। সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
তো এ ছিল মোটামুটি আমাদের কোর্সের বৃত্তান্ত।
যারা অংশ নিয়েছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ। নিজেদের অভিজ্ঞতা আশাকরি আপনাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
হ্যাপি মার্কেটিং!
[আমার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন টুইটার, লিংকডইন, ইউটিউব বা ফেসবুকে]
2 Replies to “অল এবাউট ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স – সালতামামী”
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
আসসালামু আলাইকুম স্যার। স্যার কোর্সটি আবার কবে শুরু হবে?
যদি আগ্রহী বেশ কয়েকজন পাওয়া যায় তাহলে সহসা।